রংপুরে রবি-বুধুর সাথে মোটরসাইকেল ফ্রি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, ২০শে জুন ২০২৩


রংপুরে রবি-বুধুর সাথে মোটরসাইকেল ফ্রি
ছবি: জনবাণী

সপ্তাহে সাতদিন, এরমধ্যে রবি ও বুধবারে জন্ম তাদের। তাই গরুর প্রতি ভালোবাসা থেকে মালিক ডাকেন ‘রবি’ ও ‘বুধু’ নামে। আসন্ন কোরবানি ঈদ ঘিরে হাট কাঁপাতে প্রস্তুত এ দুই গরু। বিশাল আকৃতির রবি ও বুধুর ক্রেতার জন্য লোভনীয় উপহার ঘোষণা করেছেন তাদের মালিক। একসঙ্গে রবি-বুধুকে কিনলে দেওয়া হবে পালসার ব্রান্ডের একটি আকর্ষণীয় মোটরসাইকেল।


রংপুর মহানগরীর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের মীরগঞ্জের তালুক তামপাট এলাকার খামারি রফিকুল ইসলাম সরকার। তার খামারে পরম যত্নে বেড়ে উঠেছে ফ্রিজিয়ান জাতের রবি ও বুধু। মোটাতাজাকরণে দেননি কখনো ইনজেকশন খাবার হিসেবে দিয়েছেন পরিমিত পরিমাণে সুষম খাবার। এখন রবির বয়স তিন আর বুধুর চার বছর।


সরেজমিনে দেখা যায়, পরম যত্ন নিয়ে রবি ও বুধুর পরিচর্যা করছেন রফিকুল। গরুর খাদ্যের দিকে খেয়াল রাখার পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সজাগ তিনি। এমনকি এই তীব্র গরমে গরুর যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য রয়েছে দুটি ফ্যান। আলো সরবরাহ ঠিক রাখতে রয়েছে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা। এই গরু দুটির পেছনে প্রতিদিন দুই হাজার টাকার মতো খরচ হয়। যারা পরিচর্যা করছে তাদের কণ্ঠ এই গরু দুটির খুব চেনা। কেউ রবি ও বুধু বলে ডাক দিলেই গরু দুটি সাড়া দেয়। যত্নআত্তির কমতি না থাকায় রবি ও বুধু এখন রফিকুলের পরিবারের আপনজনে পরিণত হয়েছে।


ঈদ-উল-আজহাকে ঘিরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা রবির বর্তমান ওজন ২৫ মণ, আর একবছরের বড় বুধুর ওজন আরও একমণ বেশি। তাদের মালিক এই গরু দুটির দাম হেঁকেছেন ১৫ লাখ করে। ৩০ লাখে তাদের কিনলে সঙ্গে একটি মোটরসাইকেল ফ্রি দেয়ার অফার দিয়েছেন খামারি রফিকুল ইসলাম সরকার।


এদিকে গরু দুটিকে একনজর দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন খামারে আসছেন। তাদের মতে, আসন্ন কোরবানি ঈদে শহরের ভিতরে এ দুটিই এখন পর্যন্ত আলোচনায় থাকা সবচেয়ে বড় গরু।


বিশাল এই গরু দুটিকে দেখতে নগরীর পার্কের মোড় থেকে এসেছেন শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ ও খাদিমুজ্জামান। তারা বলেন,  রংপুরে এত বিশালাকৃতির গরু আছে যখন জানতে পারলাম তখন অপেক্ষা না করে দেখতে চলে এসেছি। দেখে খুব ভালো লাগলো যে কিনতে না পারলেও এত বড় গরু দেখতে তো পারলাম। তাদের মতে এই গরু দুটি রংপুরের সবচেয়ে বড় গরু।


প্রতিবেশী হারুন অর রশিদ বলেন, গরু দুটি অনেক যত্ন করে লালন করেছেন ওই খামারি। নিজে কষ্ট করলেও গরু দুটিকে কখনো কষ্ট দেয়নি। গত বছর গরু দুটিকে হাটে তোলা হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম পায়নি। এবার আশানুরূপ দাম পেলে পরিশ্রম সার্থক হবে। আগামীতে এমন গরু পালনে  উৎসাহ বাড়বে।


আরও পড়ুন: প্রস্তুত গাবতলী পশুর হাট, মাঝারি গরুতে নজর ক্রেতাদের


রফিকুলের ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই রবি ও বুধুকে খুব যত্ন সহকারে লালন পালন করেছে। এই গরমে যেন গরুগুলোর কোন সমস্যা না হয়, সেজন্য সবধরণের ব্যবস্থা করে রেখেছে। গরু দুটির যত্ন ও লালন-পালনে ভাইয়ের চেষ্টা কোনো কমতি নেই। আশা করছি এ বছর কাঙ্ক্ষিত মূল্যেই গরু দুটি বিক্রি হবে।


রফিকুলের ছেলে তূর্য ইসলাম বলেন, এই গরু দুটির জন্ম রবি ও বুধবার। আমার দাদী আদর করে গরু দুটির নাম রেখেছেন রবি ও বুধু। গত বছর এই গরু দুটিকে বিক্রির জন্য হাটে তোলা হলেও ভালো দাম পাওয়া যায়নি। এজন্য গত বছর বিক্রি করিনি। এই কোরবানি ঈদে গরু দুটি বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।


খামারি  রফিকুল ইসলাম জানান, বুধুকে চার বছর ও রবিকে তিন বছর ধরে লালন পালন করে আসছি। কখনও তাদের পরিচর্যা ও খাবারের বিষয়ে অবহেলা করিনি। এখন রবির ওজন ২৫ মণ ও বুধুর ওজন হবে প্রায় ২৬ মণ। দাম ১৫ লাখ করে ৩০ লাখ টাকা হাঁকিয়েছি। কেউ একসঙ্গে গরু দুটিকে কিনলে উপহার হিসেবে একটি পালসার মোটরসাইকেল দেওয়া হবে।


তিনি আরও বলেন, বাজারে গো-খাদ্য অনেক দাম। এই গরু দুটির পেছনে প্রতিদিন দুই হাজার টাকার মতো খরচ হয়। গতবার গরু দুটির দাম চাওয়া হয়েছিল ২০ লাখ তবে ১৪ লাখ টাকার বেশি কেউ দিতে চায়নি এজন্য আর বিক্রি করিনি। এ বছর ৩০ লাখ টাকা দাম চেয়েছি, তবে দরদাম করে নেয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন পাইকার দেখে যাচ্ছেন বলে জানান খামারি রফিকুল।


জেবি/ আরএইচ/