পায়রায় উড়ছে ধোঁয়া কমবে লোডশেডিং
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, ২৫শে জুন ২০২৩
দীর্ঘ ২০ দিন পর রবিবার(২৫ জুন) থেকে শুরু হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুত উৎপাদন। সকালে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির বয়লার স্টার্টাট আপ করা হয়। তাই সকাল থেকে চুল্লি থেকে বের হচ্ছে ধোয়া।
বিকাল চারটায় টারবাইনে কয়লা ভরা শেষ হবে। তখন (৬৬০ মেগাওয়াটের) একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আবদুল হাসিব।
এর আগে গত ৫ জুন (সোমবার) কয়লা সংকটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে লোডশেডিংয়ের কবলে পরে পুরো দেশ। পরে গত বৃহস্পতিবার (২২জুন) দিবাগত রাত তিনটায় ইন্দোনেশিার বালিকপানান বন্দর থেকে এমভি অ্যাথেনা নামের একটি জাহাজ পায়রা বন্দরে এসে পৌছায়। ওই দিন সকাল থেকে শুরু হয় কয়লা খালাস কার্যক্রম। মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এ জাহাজটি ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে আসে।
ডলার সংকটে কয়লা আমদানি না হওয়ায় গত ২৫ মে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে স্থাপিত পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫ জুন দ্বিতীয় ইউনিটও বন্ধ হয়। দেশের বৃহত্তম পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্ধোধনের ৩ বছরের মাথায় কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হলে গোটা দেশে আলোচনা সমালোচনার পাশাপাশি লোডশেডিংয়েও প্রভাব পড়ে।
৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বন্দরে এসেছে এমভি অ্যাথেনা নামের একটি মাদার ভ্যাসেল। (২৩ জুন)বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এ জাহাজটি বন্দরের ইনার এ্যাংকরেজে এসে পৌঁছায়। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার ও প্রস্থ ৩২ মিটার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পায়রা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান। ইতিমধ্যে লাইটার জাহাজের মাধ্যমে কয়লা খালাস কার্যক্রম শেষ করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। আজ রবিবার দুপুরের পড়ে চালু হয়েছে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
তবে প্রথম এক সপ্তাহ একটি ইউনিট চালানো হবে। ২ জুলাই থেকে দুটো ইউনিটই উৎপাদনে যাবে পূর্ণ ক্ষমতায় এটি চালাতে ১১ থেকে ১২ হাজার টন কয়লা লাগে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, যা দেশের গড় উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ। প্রায় ৩৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া থাকায় চীনের সিএমসি কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পরে সরকারের ওপর মহলের হস্তক্ষেপে ধাপে ধাপে ১০০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়।
তা দিয়ে আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত ১৭টি জাহাজের এলসি খোলা হয়। এতে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার টন কয়লা আনা যাবে। নতুন করে আরও কয়লা আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ৩৬ হাজার টনের প্রথম চালান বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সমুদ্র অঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
সূত্র জানায়, মজুত পুরোপুরি শূন্য হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর পাশাপাশি কয়লা মজুত করা হবে। প্রথম চালানের কয়লা দিয়ে আপাতত একটি ইউনিটে দৈনিক ৫২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। ২ জুলাই কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে জাতীয় গ্রিডে মোট ৭৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।
আরএক্স/