মুরাদনগরের আর্সি নদীতে আজও নির্মিত হয়নি বহুল আকাক্সক্ষার সেতু
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:১৭ অপরাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৩
"নির্বাচন এগিয়ে আসলে প্রতিবার প্রার্থীরা বলেন আমাকে ভোট দিলে সেতুর কাজ বাস্তবায়ন হবে, ছোট থেকে বড় হয়েছি আজও দেখলাম না কেউ কিছু করতে। কতজন জনপ্রতিনিধি পাল্টেছে, সরকার পাল্টায় কিন্তু আমাদের ভাগ্যের চাকা পাল্টানোর নাম নেই। নিজেদের কষ্টের টাকায় অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো তৈরী করেছি। কিছুদিন পরপর মেরামত করতে হয়। আমরা হাঁপিয়ে গেছি সেতুর আশা করতে করতে। আমাদের অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন সেতুর আশায় মুখ চেয়ে, তবুও তাদের শেষ ইচ্ছে রয়ে গেছে অপূর্ণ।" মনের ক্ষোভ নিয়ে জনবাণীর প্রতিবেদকের নিকট এভাবেই বর্ণনা করছিলেন গ্রামের শ্রমজীবী বাসিন্দা রহমান।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার ধনপতিখোলা ও দৌলতপুর সড়কের আর্সি নদীর উপরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পরেও নির্মিত হয়নি সেতু। প্রায় লক্ষাধিক মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশ নির্মিত অস্থায়ী দীর্ঘ সাঁকো। হরহামেশাই সেতু হতে পরে আহত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, তাদের কষ্ট দেখার যেনো কেউ নেই।
স্থানীয়রা বলেন, যোগাযোগের ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় ভালো পরিবারের কেউ গ্রামে ছেলে-মেয়ে বিয়ে দিতে নারাজ। দুধ শাহের মাজার ও লাডুম শাহের মাজার ভ্রমণ তালিকায় থাকলেও সাঁকো পারের ভয়ে অনেকেই দেখতে যায়না সেখানে। সড়কপথে যাতায়াতে অল্পদূরত্ব অতিক্রমের স্থানে ৬কিলোমিটার পারি দিতে হয় যাত্রীদের। আগে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতো সকলে এখন নৌকার চল উঠে গেছে। গ্রামবাসীর উদ্যোগে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হয় বাঙ্গরা (পশ্চিম) ইউপির ধনপতিখোলা, কালারাইয়া, মোহাম্মদপুর, সোনাকান্দা,মেটংঘর, দৌলতপুর গ্রামের মানুষরা।
ধনপতিখোলা গ্রামের আহত বৃদ্ধা মহিলা বলেন, এক বছর পূর্বে খড়ের বোঝা মাথায় নিয়ে সাঁকো পার হতে গেলে আচমকা নিচে পড়ে কোমরে মারাত্মক আঘাত পান তিনি। অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসায় সুস্থ হলেও আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই ব্যাথা। অন্যকেউ যাতে তার মতো ভোগান্তির শিকার না হয় তাই দ্রুত সেতু বাস্তবায়ন চান তিনি।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাজী বাহার খান বলেন, আর্সি নদীতে সেতু নির্মাণ গ্রামবাসীর জন্য স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। একটি সেতুর অভাবে সুদীর্ঘ সময়ের ভোগান্তিতে রয়েছে আশেপাশের ২০টি গ্রামের মানুষ। আমারও ইচ্ছে এখানে সেতুটি বাস্তবায়িত হোক।