ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপ, রাশিয়া ও ন্যাটোর দ্বন্দ্ব চরমে
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
গত বছরের এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রুশ সেনা সরিয়ে নিতে বলেন। সব মিলিয়ে ইউক্রেনকে ঘিরে ইউরোপে এখন উত্তেজনা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় কিছু সাধারণ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আচমকা রাশিয়ার হাতে এত শক্তি কোত্থেকে এল যে তারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিধর দেশগুলোর সামনে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি-ধমকি দেওয়ার সাহস পাচ্ছে? ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও ন্যাটোর দ্বন্দ্ব যত ঘনীভূত হচ্ছে তত উদ্বেগ বাড়ছে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ নিয়েও৷ ইউরোপের জ্বালানি নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন ন্যাটো প্রধানও৷ ইউরোপ প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ করে রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি করে৷ মূলত, দুইটি পাইপলাইনের মাধ্যমে এই গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া৷ ইয়ামাল-ইউরোপ লাইনটি বেলারুশ, পোল্যান্ড হয়ে পৌঁছে গেছে জার্মানিতে৷ নর্ড স্ট্রিম ওয়ান বাল্টিক সাগর হয়ে সরাসরি এসেছে জার্মানিতে৷ গত কয়েক বছর ধরে জোটের বিভিন্ন দেশ তাদের গ্যাসের উৎস বহুমুখী করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে৷ তবে এখনও রাশিয়ার উপর নির্ভরশীলতা পুরোপুরি হ্রাস করা যায়নি৷ বর্তমানে ইউরোপের গ্যাসের চাহিদার ৩৫ শতাংশ বা এক তৃতীয়াংশ মিটিয়ে থাকে রাশিয়া৷এমন অবস্থায় ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের দ্বন্দ্বে জ্বালানি সংকটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে ইইউ৷ বিষয়টিকে খাটো করে দেখছেন না ন্যাটো প্রধানও৷ সামরিক এই জোটের মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, আমরা ইউরোপের জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ কেননা একটি দেশের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা ঝুঁকিপূর্ণ৷ যে কারণে আমরা ন্যাটো মিত্ররা সরবরাহ বহুমুখী করার বিষয়ে কাজ করতে ও মনযোগী হতে একমত হয়েছি৷এরইমধ্যে রাশিয়া থেকে সরবরাহ করা গ্যাসের বিকল্প হিসাবে কাতার থেকে গ্যাস আনা যায় কিনা, সে ব্যাপারে দেশটির সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
এই উদ্বেগ নতুন করে তৈরি হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ ঘটানোর খবরে৷ ওয়াশিংটন দাবি করে আসছে দেশটিতে হামলা চালাতে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার সেনা ও যুদ্ধ সরঞ্জাম জড়ো করেছে রাশিয়া৷ তবে এমন আশঙ্কা সত্য নয় বলে বারবারই উল্লেখ করে আসছে মস্কো৷এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এই ঐক্যের ডাক দেন।ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন ও তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সাম্প্রতিক তৎপরতা ঠেকাতে এই জোট বেঁধেছেন তারা।পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তাতে রাশিয়ার পক্ষে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। অন্যদিকে, তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যে বৈরিতা শুরু হয়েছে-তাতে চীনের পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করেছে রাশিয়া।সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও সহযোগী দেশ মনোনীত করায় আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।অন্যদিকে,স্বশাসিত দ্বীপ ভূখণ্ড তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীকে সমর্থন ও অস্ত্র সহযোগিতা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চরম তিক্ততা চলছে চীনের। বেইজিংয়ের অভিযোগ- তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীকে সমর্থনের মাধ্যমে ওয়াশিংটন মূলত চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে।তবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী পক্ষ হিসেবে ইতোমধ্যে চিহ্নিত হওয়া দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক সফল হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন।
ক্রেমলিনের বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, উষ্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার বৈঠক হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রেই পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তারা। দুই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র তার নেতৃত্বাধীন জোট যেভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সেনা ও পারমানবিক অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে তাতে পুনরায় শীতল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্বকে এই সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে তাইওয়ান ও ইউক্রেনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয়েছে চীন ও রাশিয়া।রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিশ্চিত জানেন, ইউক্রেন নিয়ে চলমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেও ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) তাঁর কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ও সত্যিকারের বন্ধু আছে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর ওরবান অবশ্যই তাঁদের একজন।যখন প্রায় এক লাখ রুশ সেনা ভারী অস্ত্র নিয়ে ইউক্রেনের ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে, এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ রাশিয়ার ওপর রাগে ফুঁসছে—ঠিক এমন সময়ে (১ ফেব্রুয়ারি) পুতিনের সঙ্গে আলাপ করার জন্য মস্কোতে উড়ে গেলেন ওরবান।গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার গ্যাস কোম্পানি গাজপ্রমের সঙ্গে হাঙ্গেরির ১৫ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় ওরবানের মস্কো সফরের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহের মেয়াদ ও পরিমাণ আরও বাড়ানো যায় কি না, তা আলোচনা করতেই এ সফর। তবে হাঙ্গেরির সরকারবিরোধীরা ওরবানের সফরের সমালোচনা করে বলেছে, রাশিয়া যখন ইউরোপের নাকের ডগায় সেনা মোতায়েন করে ইউরোপকে হুমকি দিচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে ওরবান মস্কো সফর করে প্রকারান্তরে হাঙ্গেরির সাধারণ মানুষেরই বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।কিন্তু ওরবান সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং শান্তির কথা মাথায় রেখেই মস্কোতে গেছেন।
অনেকেরই মনে হতে পারে, ওরবান ক্রেমলিনের সঙ্গে তাঁর বিশেষ সম্পর্ককে পুঁজি করে নিজের ফায়দা হাসিলের আশায় আছেন এবং সে কারণেই তিনি ন্যাটো এবং ইইউর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করছেন।পূর্ব ইউরোপে ওরবানের মতো আরও কিছু নেতা থাকতে পারেন, যাঁরা মস্কোকে অসন্তুষ্ট না করার বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকেন। তবে এর অর্থ এই নয় যে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে ন্যাটো জোটের দুর্বলতা রয়েছে এবং সে কারণে ন্যাটোর রাশিয়াকে তোয়াজ করে চলতে হয়।লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া-বাল্টিক অঞ্চলের এই তিন দেশ রাশিয়াকেও দ্ব্যর্থহীনভাবে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখে। বিশেষ করে ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেওয়ার পর তারা রাশিয়াকে আর বিশ্বাস করতে পারে না। এ কারণে ২০১৬ সাল থেকে তারা সাগ্রহে বহুজাতিক ন্যাটো বাহিনীকে স্বাগত জানিয়েছে।মধ্য ইউরোপের বাকি অংশে, ওরবানের রাজনৈতিক খেলার অনুরণন আছে বলে মনে হয় না। পোল্যান্ডের রক্ষণশীল ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির সরকার প্রায়ই ইইউকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে হাঙ্গেরির ওরবান সরকারের সঙ্গে যোগ দেয়। এ দুই সরকার বেশ ঘনিষ্ঠ মিত্র। কিন্তু ইউক্রেন ইস্যুতে পোলিশ সরকার রাশিয়ার তৎপরতাকে ভালোভাবে নেয়নি এবং মিত্র ওরবান মস্কো সফরকে ভালো চোখে দেখেনি। তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর দেওয়া কড়া প্রতিক্রিয়ার সবচেয়ে সোচ্চার সমর্থকদের মধ্যে অন্যতম। জার্মানি ইউক্রেনকে এ সংকটকালে অস্ত্র সরবরাহে অনাগ্রহ দেখানোয় পোলিশ সরকার জার্মানির কড়া সমালোচনা করেছে।এ অঞ্চল থেকে ন্যাটোর সৈন্য এবং সামরিক সম্পদ সরিয়ে নেওয়ার যে দাবি মস্কো তুলেছে, তার পক্ষে ইউরোপের কোনো দেশের সমর্থন নেই। এমনকি হাঙ্গেরিও এ দাবি সমর্থন করে না। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, হাঙ্গেরির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বর্তমানে ইউক্রেনের সংকটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাদের দেশে ন্যাটো বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনা করছে।
তবে এখনো আটলান্টিক জোটটি যে তার জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে, তা তাকে মাথায় রাখতে হচ্ছে।এ কারণে এটি স্পষ্ট যে এখন যারা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে শেষ পর্যন্ত তাদেরও পশ্চিমাদেরই সমর্থন করতে হবে। সে ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক।ইউক্রেনের স্বাধীনতা ঠেকিয়ে রাখতে না পারলেও ইউক্রেন যাতে রুশ বিরোধী না হয়ে ওঠে এবং ইউরোপ, ন্যাটো, যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা বিশ্বের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে না পরে সেজন্য প্রথম থেকেই রাশিয়া বাধা দিয়ে আসতে থাকে। ন্যাটো বা ইইউ যাতে পূর্বমুখী না হয় এবং ইউক্রেন যাতে ন্যাটোসহ পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সদস্য পদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকে তার জন্য মস্কো সচেষ্ট ছিলো। এতোসব বাধা স্বত্বেও ইউক্রেন ন্যাটোর পর্যবেক্ষক সদস্য হয়েছে এবং দেশটি এখন ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য প্রার্থী-বলেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট করে বলেছেন তিনি কখনো ইউক্রেনকে “রুশ বিরোধী” হতে দেবেন না এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেবার ন্যাটোর অভিপ্রায়কে রাশিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ন্যাটো একটি “রেডলাইন” অতিক্রম করেছে। পুতিন পশ্চিমাদের সতর্ক করেছিলেন যে ইউক্রেনকে জোটে টানার পদক্ষেপ “রাশিয়ার প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। মস্কো ইউক্রেনে পশ্চিমা প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে পিছু হটবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন পুতিন। কারণ এটি তার জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য বলে দাবি করে মস্কো।অতি সম্প্রতি মি:পুতিন স্পষ্ট করে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির উদ্দেশ্যে বলে দিয়েছেন যে রাশিয়া আইনি গ্যারান্টি দাবি করে যে ইউক্রেন ন্যাটো জোটে যোগদান করবে না। ইউক্রেনের জন্য জোটনিরপেক্ষ মর্যাদা ও পূনরায় অস্ত্র ও ন্যাটো সৈন্যদের ইউক্রেনে উপস্থিতি সীমাবদ্ধের বিষয়ে নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে হবে পশ্চিমা বিশ্বকে।
রাশিয়ান আন্তর্জাতিক বিষয়ক কাউন্সিলের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ইভান টিমোফিভ বলেছেন যে ইউক্রেনে ন্যাটোর সৈন্যরা সামরিক ভারসাম্য ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করবে। যদি এটি ইউক্রেনও হয়, তাহলে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাব্য থিয়েটার অনেক বড় হয়ে যাবে।পুতিনের রাশিয়াকে একটি পূনর্গঠনবাদী শক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিশ্লেষকগণ যা তার পূর্বের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি পুনরুদ্ধার করতে আগ্রহী। উত্তর ইউরেশিয়ায় রাশিয়াকে একটি মহান শক্তির মর্যাদায় পুনরুদ্ধার করা সর্বদা পুতিনের লক্ষ্য ছিলো এবং শেষ লক্ষ্য ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নকে নয়, বরং রাশিয়াকে আবার মহান করা-ভার্জিনিয়ার আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ক প্রফেসার জেরার্ড টোল তার বই নিয়ার অ্যাব্রোড-এ এই মন্তব্য করেছেন।রাশিয়া ইউক্রেনে এবং পুরো সোভিয়েত ইউনিয়নজুড়ে তার রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলো এবং পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের মতে ক্রিমিয়া দখলের মধ্যদিয়ে পুতিন ওই লক্ষ্য অর্জনের পথে পা বাড়িয়েছেন।ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে ইউক্রেন নিজেকে ক্রমাগত হুমকির মধ্যে বলে মনে করে। এর দরুন উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে গভীর দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে এবং তখন থেকেই দেশ দুটি শত্রুতামূলক অবস্থানে চলে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন ও ক্রিমিয়া দখলে নেবার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক দ্বন্দ্বমূলক অবস্থায় পৌঁছেছে। বিশেষকরে শীতল যুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি ও সংকটের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকগণ।বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এটি বলা যায় যে