দড়া টেনে খেঁয়া পারাপারে সংসার চলেনা বৃদ্ধ জগদীসের


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


দড়া টেনে খেঁয়া পারাপারে সংসার চলেনা বৃদ্ধ জগদীসের

যশোরের কেশবপুরের চিংড়া-সারসা খেঁয়া ঘাটে ১২ বছর বয়স থেকে ৫২ বছর এ ভাবেই কপোতাক্ষ নদে দড়া (দঁড়ি) টেনে নৌকায় খেঁয়া পারাপার করেন জগদীস দাস (৬৫)। বাবা হাজারী লাল দাসের হাত ধরেই তিনি দড়া টানা শেখেন। এতে তাঁর প্রতিদিন আয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কষ্টের মধ্যে সংসার চালাতে হয় তাঁর। নদ পাড়ের সারসা গ্রামে তাঁর বসবাস। কপোতাক্ষ নদে ৫২ বছর ধরে দড়া টেনে নৌকায় খেঁয়া পারাপারের কাজ করে আসছেন জগদীস দাস। এ কাজ তাঁদের তিন পুরুষের। কপোতাক্ষ নদের চিংড়া-সারসা ঘাটে সকাল থেকে অধিক রাত পর্যন্ত দড়া টেনে এলাকাবাসীকে নদ পারাপারে সহযোগিতা করতে হচ্ছে বৃদ্ধ বয়সেও তাঁকে।  দীর্ঘ ১০০ বছর ধরে পূর্ব পুরুষরা এ কাজ করছেন। 

তিন পুরুষের বৃদ্ধ জগদীস দাস (৬৫) খেঁয়া পরাপরের সময় বললেন, প্রায় ৫২ বছর দড়া টেনে নদে খেঁয়া পারাপারে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করলেও এখন আর সংসার চালানো কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, এক সময়ের খরস্রোতা কপোতাক্ষ নদে এখন তেমন স্রোত নেই। তীব্র স্রোত বহমান সময়ে বাবা হাজারী লাল দাসের হাত ধরেই দড়া টেনে খেঁয়া পারাপার করতে শেখেন। তখন যা আয় হতো তাতে সংসার চলেও কিছু সাশ্রয় করা যেত। এখন স্রোত নেই। খেয়া পারাপারে মানুষের যাতায়াতও কমে গেছে। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দড়া টেনে খোঁয়া পারের কাজ করেও ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেশি আয় হয় না। সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলে নিত্যানন্দ দাস ও ছোট মেয়ে পূজা দাসকে লেখা-পড়া শেখানোর জন্য তাঁকে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। এ কাজ করে তিনি ২টি মেয়েকে বিবাহ দিয়েছেন। সংসারে তাঁর ছেলে চতুর্থ পুরুষ নিত্যানন্দ দাস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছেন। ছোট মেয়ে পূজা দাস সাগরদাঁড়ি আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। জগদীস দাসের বসবাস কপোতাক্ষ পারের সারসা গ্রামে। পারাপারে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় সংসার চালাতে তাঁকে প্রতিনিয়ত কষ্ট স্বীকার করতে হচ্ছে। 

ওই পরিবারের চতুর্থ পুরুষ নিত্যানন্দ দাস জানালেন, তাঁদের পূর্বপুরুষরা প্রায় ১০০ বছর ধরে এ কাজ করছেন। এখন তাঁরা এ কাজ করতে চান না। তাই এ খেঁয়া ঘাটে একটি নির্মাণ হোক সেটাই তাঁর দাবি। 

এসএ/