যমুনা সারকারখানায় সংঘর্ষ, পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত ২০


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


যমুনা সারকারখানায় সংঘর্ষ, পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত ২০

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রাধীন যমুনা সার কারখানা এর লোডিং শ্রমিক ও সর্দারের মধ্যে সংঘর্ষে ইট-ঁপাটকেলের আঘাতে, সরিষাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মজিদ, তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল লতিফ আঘাত প্রাপ্ত সহ মারধরের শিকার সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘাতের ঘটনার সাথে জডিত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে বলে তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল লতিফ নিশ্চিত করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় যমুনা সারকারখানা ডেলিভারী গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় যমুনা সারকারখানা থেকে ২০ জেলায় ইউরিয়া সার পরিবহন বন্ধ রয়েছে। অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে প্রশাসন। কারখানা এলাকায় আতংকে প্রায় ২’শতাধিক দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। 

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী এবং পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, যমুনা সারকারখানার তারাকান্দি মেসার্স রিক্ত এন্টার প্রাইজ এর নামীয় লোডিং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সর্দার ও ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হোসেন এর নেতৃত্বে তোফাজ্জল হোসেন, লেবু মিয়া ও মিলন মিয়া মিলে লোডিং শ্রমিক শামীম মিয়া কে মারপিট করে। এ সময় শামীম মিয়া এর প্রতিবাদ করলে শ্রমিক সর্দার মোফাজ্জল হোসেন  সার লোডিং বন্ধ করে শতাধিক শ্রমিক সহকারে সারকারখানা হতে বের হয়ে ডেলীভারী গেটের সামনে এসে সমবেত হলে শামীম মিয়া নিজেও ডেলীভারী গেটে এলে দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংর্ঘষে উভয় পক্ষের মোশারফ হোসেন(৫০), কৃষক হায়দর আলী (৬০), সাইফুল ইসলাম(২৭), আনিছুর রহমান(৫০), আল আমীন মন্ডল( ৩৫), জাহাঙ্গীর (৩৫), বাবু(৩০), রনি(২৫) ও চা দোকানদার রফিকুল ইসলাম(৩৫) সহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। গুরুতর  আহতদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ দিকে তারাকান্দি শহিদ মিনারের সামনে লাল মিয়ার চা দোকান ভাংচুর করা হয়েছে। 

অপরদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিক রাইসুল ইসলাম খোকন ও  সাংবাদিক সোহেল রানা এবং সাংবাদিক আবু সাঈদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট সহ ৩টি মোবাইল এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আহত সাংবাদিকদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এবং সাংবাদিক রাইসুল ইসলাম খোকনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আরোও জানা যায়, জে এফ সি এল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যনির্বাাহী কমিটির নির্বাচন উপলক্ষে ১৭ ফেব্রুয়ারী আবাসিক কলোনী এলাকায় জে এফ সি এল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুর স্বাক্ষরিত  ২৪ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৩ টায় তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে সাধারণ সভার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এ বিজ্ঞপ্তি জারী করার পর থেকেই যমুনা সারকারখানা এলাকায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এর ভগ্নীপতি শাহজাহান আলী  সাধারন সম্পাদক পদে এবং রবিউল ইসলাম কে সভাপতি করে একটি প্যানেল করেছেন। এ প্যানেলটি আসন্ন জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচনে একাক প্যানেল বিজয়ী করার জন্য সারকারখানা এলাকায় শ্রমিক কর্মচারীদের আতংক সৃষ্টির লক্ষে বিভিন্ন সময় মহড়া সহ লোকজন কে মারপিট করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সন্ধায় কারখানা এলাকায় লোডিং সর্দার মোফাজ্জল হোসেন এর নেতৃত্বে শফিকুল ইসলাম(৩৫) কে মারপিট করে। এ ঘটনার জের ধরে কামরুল হাসান (৪৭) কেও মারধর করে প্রতিপক্ষরা। আহতদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে পরির্দশনে আসা জামালপুর পুলিশের সদর সার্কেল জাকির হোসেন জনবাণীকে জানান, জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী নির্বাচন আসন্ন কে কেন্দ্র দু'গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ঘটনা তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্র ও সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘাতের সাথে জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এসএ/