বীর উত্তম শহীদ লে. মুশফিকের আত্মত্যাগের কাহিনী
🕐 প্রকাশ: ০৪:৩৩ পিএম, ১৬ই জুলাই ২০২৩

বীর উত্তম শহীদ লে. মুশফিক
নুরুল আলম, নিজস্ব প্রতিবেদক: ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯, রাত তখন আড়াইটা। লে. মুশফিকের রেডিয়াম হাত ঘড়িটা সময় জানান দিচ্ছে। ঠিক চার ঘন্টা আগে লক্ষীছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে ১৭ জন রেইডার্স নিয়ে চেলাছড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছিলেন তিনি। ক্যাম্প থেকে আসতে আসতে অনেক চড়াই উতরাই পার হতে হয়েছে। পাহাড়ী পথ দুর্গম, বিপদসংকুল। কিন্তু অতি উৎসাহে স্বাভাবিক সময়ের অনেক আগেই তারা পৌঁছে গেলেন লক্ষ্যস্থলে। সেদিনের মেঘলা আবহাওয়াও যেন তাদেরই অনুকূলে। কিন্তু পরিস্থিতি যেন হাতছাড়া না হয়, সেজন্য সিন্দুকছড়ি ক্যাম্প থেকেও সেকেন্ড লেঃ সাইদ আর একটি দল নিয়ে উল্টাছড়ি গ্রামের পাশে পজিশন নেন। শত্রুর সাথে সংঘর্ষ এখন শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার। সোর্সের সহায়তায় পাহাড়ের পাদদেশে আর চূড়ায় দুটি জুম ঘর শনাক্ত করলেন লে. মুশফিক।
সোর্সের ভাষ্যমতে, এ দুটি ঘরেই সশস্ত্র বিদ্রোহীদের অবস্থান করার কথা। দুটো উপদলকে পাহাড়ের পাদদেশে পজিশন নিতে বলে নিজে ৫ জনসহ চলে গেলেন পাহাড়ের চূড়ায়। জুম ঘর থেকে মাত্র পাঁচ গজ দূরে লে. মুশফিক শুয়ে আছেন তার দলসহ। এখন শুধু প্রতিপক্ষের অপেক্ষা। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকে দেখা হয়ে গেল দুই পক্ষের। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে গেল সেই পাহাড়চূড়া। শুরু হয়ে গেল ভয়ানক যুদ্ধ। শত্রুর প্রথম বুলেটটাই নিজের বুকে নিলেন লে. মুশফিক। যুদ্ধ শেষ করে সবাই লে. মুশফিকের চারপাশে ডিফেন্স নিলো। উদ্ধার হলো শান্তিবাহিনীর ইউনিফর্ম পড়া তিনটি মৃতদেহ, দুটো রাইফেল, একটি এসএমজি। গোলাগুলির শব্দ পেয়ে লে. সাইদ ততক্ষণে লে. মুশফিকের কাছে পৌছে গেলেন। মুশফিকের মুখ দেখেই বুঝতে পারলেন সময় খুব কম।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির তরুণ অফিসার লে. মুশফিক। ১৯৮৯ সাল, ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি তখন পার্বত্য চট্টগ্রামে অপারেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত। প্রায় প্রতিদিনই শান্তিবাহিনীর সদস্যদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্নস্থনে সংঘর্ষ চলছিল তখন। কিন্তু এত কিছু উপেক্ষা করেও দেশের জন্য জীবনবাজী রেখে দুঃসাহসী সেনাসদস্যরা নিয়মিত অপারেশন চালিয়ে গিয়েছে। প্রাণঘাতী এক একটা অপারেশন ছিল দুঃসাহসিক বীরত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এদিকে আঁধার কেটে গিয়ে দিবালোক যখন প্রখরতর হয়ে উঠছে, মুমুর্ষ মুশফিকের চারপাশে তখন নিকষ আঁধার ঘনিয়ে আসতে শুরু করেছে। প্রথমে মা, তারপর বাবার মুখ ভেসে উঠল; তারউপর আঁধার মেঘ ফুঁড়ে তিনটা চেনা মুখ উকি দেয়; হাতছানি দিয়ে ডাকে হাবিলদার হারুন, ল্যান্স নায়েক সুনিল আর ডিএমটি নাজমুল হুদা। তখন থেকে ঠিক নয় দিন আগে বাঘাইহাট থেকে ১০ নম্বর ক্যাম্পে যাবার পথে এই শান্তিবাহিনীর পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে এরা তিনজন প্রাণ হারিয়েছিল। কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে, তবু অঝোর কান্নায় ভেঙে পড়া রানারকে সান্তনা দিতে গিয়ে মুশফিক বলে উঠেন, “তোমার তো সংসার আছে, পরিবার আছে, তুমি মারা গেলে তাদের কি হবে ? আমি মরলে এদেশের কারো কোন ক্ষতি হবে না।”
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯, সকাল ৮টা বেজে ১৫ মিনিট । লে. সাইদ ছুটলেন হ্যালিপ্যাড বানাতে। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই হেলিকপ্টার ছুটে এলো। হলুদ উইন্ড শকসটা পতপত করে উড়ছে, দূর দিগন্তে হন্তদন্ত হয়ে উড়ে আসা হেলিকপ্টারটা ক্রমশ বড় দেখাচ্ছে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে। মুশফিক ততক্ষণে হারুন, সুনীল আর নাজমুল হুদাদের সাথে মেঘেদের দেশে।
সাতক্ষীরার ছেলে মুশফিক সুদুর পার্বত্য চট্টগ্রামের অচেনা এক সবুজ পাহাড়ে তার রানারের কোলে মাথা রেখে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়। অসহায় রানার থেমে থেমে আক্ষেপে বলে উঠছে, “গুলিটা আমার গায়ে ক্যান লাগল না স্যার ?
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯, দেশমাতৃকার অখন্ডতা রক্ষায় এভাবেই নিজের জীবন বিসর্জন দেন লে. মুশফিক। ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
অপারেশন উত্তরণের পূর্ব পর্যন্ত সেনাবাহিনীর দায়িত্ব ছিল অত্যন্ত ঝ্ুঁকিপূর্ণ এবং আক্রমণাত্মক অভিযান পরিচালনা করা। এজন্য সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর অনেক সদস্যকে জীবন দিতে হয়েছে। দেশের জন্য অখ-তা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেসকল ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে গিয়ে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। অনেকে বরণ করে নিয়েছে স্থায়ী পঙ্গুত্ব। এমনই একজন বীর সৈনিক হলেন শহীদ লেঃ মুশফিক বীরউত্তম। বীর সৈনিক শহীদ লেঃ মুশফিক বীরউত্তমকে স্মরণ করে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় স্থাপন করা হয়েছে শহীদ লেঃ মুশফিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় । এছাড়াও গুইমারা রিজিয়নে নির্মাণ করা হয়েছে তার ভার্কায্য ও হলরুমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। দেশের জন্য পাবর্ত্য অঞ্চলের জন্য অসহায় সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালিদের জন্য তার এই আত্মত্যাগ কখনোই ভুলার নয়।
ইনসার্জেন্সী অপারেশনের ইতিহাসে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি উল্লেখযোগ্য নাম। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি এখন কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মূলত এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অতি ক্ষুদ্র অংশের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইনসার্জেন্টদের উৎখাত করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সাল থেকে বিভিন্ন অপারেশন পরিচালিত হয়ে আসছে। এজন্য সেসময় থেকেই সেনাবাহিনী বিশেষভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে মোতায়েন রয়েছে এবং সেসময় থেকেই তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা করে আসছে। এ অপারেশন পরিচালনা করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকেও সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির ভৌগলিক অখন্ডতা রক্ষার জন্য বেশ চড়া মূল্য দিতে হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছিল অসংখ্য নিরীহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, বাঙালী সম্প্রদায়ের মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের। বর্তমানে একই ধরনের কার্যক্রম ইউপিডিএফ, জেএসএস এবং সংস্কারবাদী দলের সন্ত্রাসীরা সবাই মিলে করছে। তথ্য মতে, শুরু থেকে ২০১৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের আক্রমণে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৫৩ জন প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন ৪৫২ জন এবং ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ২৫৫ জন। এদিকে ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ২০৯৬ জনকে হত্যা, ১৮৮৭ জনকে আহত এবং ২১৮৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ পার্বত্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য।
পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা এবং শান্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এভাবেই প্রাণ দিয়ে গিয়েছেন আমাদের বীর সেনানিরা। তারা আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। তাদের দেশপ্রেম, ত্যাগ, বীরত্বগাঁথা ও চেতনা বুকে লালন করে সামনে এগিয়ে যাওয়াই হোক প্রতিটি বাংলাদেশীর ব্রত।
আরএক্স/
ডেঙ্গুতে আরও ১৫ জনের প্রাণহানি
🕐 প্রকাশ: ০৮:২২ পিএম,২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফাইল ছবি
ডেঙ্গুতে একদিনে দেশে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৫৮ জনে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৫০জন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: একদিনে ডেঙ্গুতে ১৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩১২৩
এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৯৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৩৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮১ হাজার ২১৬ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৬১৫ জন।
জেবি/এসবি
পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে ইদে মিলাদুন্নবীর (সা.)পালনের অকাট্য প্রমাণ
🕐 প্রকাশ: ০৬:০৩ পিএম,২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাওলানা শামীম আহমেদ
সকল ঈদের ঈদ, ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোমিনেরই ঈদ’।
মহান আল্লাহর অপার রহমত ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় মানবতার মুক্তির দূত রহমাতুল্লিল আলামিন প্রিয়নবী (সা.)-এর পৃথিবীতে শুভাগমনের আনন্দকেই ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’ বলা হয়। যার নূরের আলোয় সারা পৃথিবী আলোকিত হয়েছিল। তার ওপরই নাজিল হয়েছে আসমানি গ্রন্থ আল-কোরআন।
তিনি এসেছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়েতের আলো হয়ে। হযরত ইরবাদ ইবনে সারিয়াহ (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, তখন থেকে আমি আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবীকুলের সর্বশেষ নবী, যখন আদম (আ.) মাটির সঙ্গে মিশ্রিত ছিলেন। আমি তোমাদের আরো জানাচ্ছি, আমি হাবিব আমার পিতা নবী হযরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়ার ফসল এবং নবী হযরত ইসা (আ.)-এর সুসংবাদ, আর আমার মাতা (আমিনার) স্বপ্ন।
নবীদের মাতারা এভাবেই স্বপ্ন দেখতেন। রাসুল (সা.)-এর মা তাকে প্রসবের সময় এমন এক নূর প্রকাশ পেতে দেখলেন যার আলোয় সিরিয়ার প্রাসাদগুলো দেখা যাচ্ছিল (তাবারানি, হাদিস নম্বর : ১৫০৩৩)।
রাসুল (সা.)-এর আগমনের উৎসব আল-কোরআন দ্বারা স্বীকৃত। আল্লাহ বলেন, ‘হে রাসুল! আপনি বলুন তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তার দয়াপ্রাপ্ত হয়ে আনন্দ প্রকাশ কর। এটি উত্তম সেই সমুদয় থেকে, যা তারা সঞ্চয় করেছে।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত ৫৮)
রাসুল (সা.) প্রতি সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে মিলাদুন্নবী (সা.) পালন করতেন। হজরত কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.)-এর কাছে সোমবার দিন রোজা পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তরে বললেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (মুসলিম : ১১৬০)।
আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এ ঈদ কীসের ঈদ? উত্তর এ ঈদ প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শুভাগমন তথা মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঈদ। প্রশ্ন হতে পারে, হাদিসে কি মিলাদুন্নবীর কথা আছে? জি, আমরা দেখতে পাই জামে তিরমিজি দ্বিতীয় খণ্ডে ২০৩ পৃষ্ঠায় মিলাদুন্নবী (সা.) নামে একটি অধ্যায়ই রয়েছে। অনুরূপভাবে ইমাম বায়হাকি (রহ.)-এর দালায়েলুন নবুয়ত প্রথম খণ্ডের ৪৯ পৃষ্ঠায় ফি মিলাদে রসুলুল্লাহ (সা.) শীর্ষক একটি অধ্যায়ও রয়েছে।
নবীজি (সা.)-এর সাহাবিরাও মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন করেছেন। হযরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে হজরত আমির আনসারি (রা.)-এর ঘরে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন তিনি রাসুল (সা.) বিলাদাত উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সন্তানাদি এবং আত্মীয়স্বজন, জ্ঞাতি- গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদের নিয়ে রাসুল (সা.)-এর আগমনের ঘটনাগুলো শোনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস, এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রাসুল (সা.) জমিনে তাশরিফ এনেছেন এবং ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটেছে। তখন রাসুল (সা.) শুনে খুশি হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার জন্য রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন। (দুররুল মুনাজ্জাম)।
তাই আসুন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদা গুরুত্ব অনুধাবন করে আমরা নফল রোজা রাখি। দান-সদাকা করি। জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তথা নবীজির শুভাগমনের আনন্দ শোভাযাত্রা, নাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, মিলাদ মাহফিল উদযাপন করি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ছড়িয়ে দিই আমাদের কাজে-কর্মে-আচরণে। পরিবার সমাজ সর্বক্ষেত্রে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসিলায় সারা বিশ্বের মুমিন মুসলিম নর-নারীরদের প্রিয় নবীজি সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক- মাওলানা শামীম আহমেদ,
আলোচক,বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকা।
জেবি/এসবি
‘সমাজবিজ্ঞান অনুষদে সীমাবদ্ধতা না থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে বুকে ধারণ করতে হবে,
🕐 প্রকাশ: ০৩:৩৬ পিএম,২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। ছবি: জনবাণী
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের আয়োজনে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় নবীনদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
অধ্যাপক ড.কাজী মোস্তফা আরীফের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান। এছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষকবৃন্দ ছাড়া বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা নবীন শিক্ষার্থীদের নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা সকলেই আসছো এখানে জ্ঞান অর্জন করতে। তোমরা যতদিন অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে না পারবে ততদিন সফলতা অর্জন করতে পারবে না। জ্ঞান শুধু আহরণ করা নয় এই জ্ঞানকে প্রশিক্ষণ করাতে হয়। প্রশিক্ষণ করলে দক্ষতা বৃদ্ধি পায় আর অর্জিত দক্ষতা যখন কোথাও প্রয়োগ করবে তখন একধরনের ইনোভেটিভ বা ক্রিয়েটিভ আইডিয়া তৈরি হবে। আর তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারলেই দক্ষ ও পরিপূর্ণ নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া বলেন, একটি ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শুধু মাত্র ছাত্রদের ফুল দিয়ে বরণ করা নয় বা শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয় বা বিনোদনের মধ্যে এর শেষ নয়। বেসিকলি ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম হচ্ছে একটি সুষ্পষ্ট ম্যাসেজ বা কন্সটিটিউশন যেগুলো আমাদের প্রদান করতে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আচরণ, চলার পথ, ডিসিপ্লিন মানা এক কথায় স্টুডেন্টদের চলা নির্দেশনা হিসেবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ যাত্রায় তোমাদের জন্য সময় বরাদ্দ মাত্র পাঁচ বছর। এই পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ সময় ব্যবহারের মাধ্যমে যে যত বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারবে তার বাস্তব জীবনে সফলতা ঠিক সেই হারেই আসবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেফিনিশন হচ্ছে অন্যধরনের। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার মানে হচ্ছে আমি একটি সুপ্রতিষ্ঠিত নাগরিক হব। তাই আমি শুধু একটি বিষয়ে পড়ি বলে ঐ বিষয়ের জ্ঞান রাখলাম অন্যান্য বিষয়গুলো জানলাম না তাহলে কিন্তু আমরা সামজিক ভাবে বিকশিত হতে পারবো না। নলেজ আমরা যেভাবেই অর্জন করি না কেনো বিতরণও করতে হবে সেভাবে। বিতরণ যদি প্রাসঙ্গিক ভাবে করতে না পারি তখন কিন্তু আমরা ইনভ্যালিড হয়ে যাবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ বছর শেষে শুধুমাত্র সার্টিফিকেট ছাড়া যদি আমাদের মধ্যে কোনো কিছু তৈরি না হয় তখন সিজিপিএ চারে চার পেলেও কিন্তু আমরা ইনভ্যালিড থাকবো। কিন্তু সিজিপিএ চারের জায়গায় যদি অল্প কিছুও পেয়েও যদি আমরা প্রকৃত মানুষ হতে পারি তাহলে আমাদের জন্য সবকিছুই খোলা থাকবে। যেখানেই যাবো সেখানেই চান্স পাবো।
এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একটা বিষয় মনে রাখতে হবে তোমাদের আচার-আচরণে যেনো একটু হলেও রিফ্লেক্সন থাকে যে তুমি প্রকৃত মানুষ। তাই সিজিপিএ এর উপর নির্ভরশীল না হয়ে নৈতিকতা ও একাডেমিক দায়িত্বের ভারসাম্য রাখতে হবে। শুধু সমাজবিজ্ঞান অনুষদে সীমাবদ্ধতা না রেখে বিশ্ববিদ্যালয়কে বুকে ধারণ করে আমরা প্রকৃত মানুষ হবার প্রতিজ্ঞা করি।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে স্বনামধন্য ব্যান্ড দ্য ভাইপারসের গান পরিবেশনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় সঞ্চালনা করে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লামিয়া ইসলাম এবং অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক।
আরএক্স/
হাথুরুসিংহেকে অব্যাহতি ও তামিমকে বিশ্বকাপে অন্তর্ভুক্ত করতে লিগ্যাল নোটিশ
🕐 প্রকাশ: ০১:২৩ পিএম,২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ক্রিকেটের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অব্যাহতি ও দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপে অন্তর্ভুক্ত করে আসন্ন বিশ্বকাপে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।