ইভটিজিয়ের প্রতিবাদ করায় বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্রীকে
‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন সময়ে রাস্তাঘাটে
স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত বলে জানিয়েছে র্যাব।
মূলত
প্রথমে ওই শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদে জোর করে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ
করে। জড়িতরা পেশাদার অপরাধী। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
শনিবার
(২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আইন ও গণমাধ্যম শাখার
প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ কথা বলেন।
তিনি
বলেন, শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে রাকিব
মিয়া ওরফে ইমন, পিয়াস ফকির, প্রদীপ বিশ্বাস, মো. নাহিদ রায়হান, মো. হেলাল এবং তূর্য
মোহন্তকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে শুক্রবার বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায়
ছয়জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ নিয়ে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত
রাকিবের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি অপরাধ চক্র আছে। তারা সবাই গোপালগঞ্জ ও আশপাশের এলাকার
স্থায়ী বাসিন্দা। এদের তূর্য মোহন্ত ছাড়া সবাই প্রায় ৮/১০ বছর যাবত নবীনবাগ এলাকায়
বিভিন্ন স্থানে মাদক সেবন, আড্ডা, জুয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত। এছাড়াও তারা
চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়িত। তারা বিভিন্ন সময়ে রাস্তাঘাটে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের
উত্যক্ত করতো। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে এরা ইজিবাইক
দিয়ে নবীনবাগ হেলিপ্যাড সংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার পথে শিক্ষার্থীকে তার বন্ধুসহ দেখে ইজিবাইক
থামিয়ে তাদের নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করে এবং বিভিন্ন ধরণের অশালীন মন্তব্য করতে থাকে।
খন্দকার
আল মঈন বলেন, তাদের সাথে ওই শিক্ষার্থী এবং তার বন্ধুর বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে তাদের
জোরপূর্বক ঘটনাস্থলের পাশে ঢালু জায়গায় নিয়ে যেতে চাইলে বন্ধু বাধা দেওয়ায় গ্রেফতারকৃতরা
তাকে মারধর করে। ওই শিক্ষার্থীকে স্থানীয় একটি ভবনে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
মূলত পাশবিক প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই ন্যাক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়।
তিনি
বলেন, রাকিব স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলীম সম্পন্ন করে। সে স্থানীয় একটি
ক্লিনিকে রিসেপশনিস্ট হিসেবে চাকরি করতো। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে মাদক ও মারামারির
মামলা রয়েছে। পিয়াস ফকির গোপালঞ্জের একটি পাওয়ার
হাউজে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে। আর প্রদীপ বিশ্বাস স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৭ম
শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছে। সে গোপালগঞ্জে হোম সার্ভিসের মাধ্যমে এসি ও ফ্রিজ মেরামতের
কাজ করতো। নাহিদ রায়হান স্থানীয় একটি কলেজে
স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। হেলাল স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। সে
একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার হিসেবে চাকরি
করতো। তূর্য মোহন্ত খুলনার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৮ সালে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে
সে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য বিদেশ গমন করে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
এ শেষ বর্ষে থাকাকালীন কোভিড পরিস্থিতির কারণে সে দেশে চলে আসে এবং গোপালগঞ্জে সদরে
গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করে।
সাংবাদিকদের
প্রশ্নে মঈন বলেন সম্প্রতি গোপালগঞ্জের স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ন্যাক্কারজনকভাবে
গণধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। সারাদেশের
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে উক্ত পৈশাচিক ন্যাক্কারজনক
ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির
দাবিতে প্রতিবাদ জানায়। পরে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব।
ওআ/