কালীগঞ্জে ম্যাজিক জালের অবাধ ব্যবহার হারিয়ে যাচ্ছে মৎস্য সম্পদ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:২৭ অপরাহ্ন, ১৮ই জুলাই ২০২৩


কালীগঞ্জে ম্যাজিক জালের অবাধ ব্যবহার হারিয়ে যাচ্ছে মৎস্য সম্পদ
ম্যাজিক জাল দিয়ে ধরা মাছ

মো. রায়হান মাহামুদ, কালীগঞ্জ গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল ও জলাশয়ে চায়না ম্যাজিক এবং কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার চলছে। প্রতিনিয়ত মারা পড়ছে শোল, গজার, টাকি, কৈ, পুঁটি, শিং, মাগুর, টেংরা, খলিশা, রিঠা, বাইম, ভেড়া, তেলাপিয়া, ছোট চিংড়ি, পাঙ্গাশ, রুই, কাতলা ও আইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির ডিমওয়ালা ছোট বড় মাছ। ম্যাজিক ও কারেন্ট জালের ফাঁদে পড়ে কুঁচে, কাঁকড়া, ব্যাঙ, সাপ, কচ্ছপ, শামুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণীও মারা পড়ছে। ফলে হুমকিতে পড়ছে তাদের জীবনচক্র, হারিয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্র, ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।


সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের বেরুয়া ও ফুলদী ব্রীজ সংলগ্ন নলী বিল, ফুলদীর বাঙ্গালীর বিল, মাদলা বিল, মোহানী বিল, বেলাই বিলের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে জয়রামবের, সাতানীপাড়া, উত্তর খৈকড়া, ব্রাক্ষণগাঁও, রয়েন, পূনসহিসহ এলাকার বিশাল জলরাশির বিভিন্ন অংশে ও নালার ধারে চায়না ম্যাজিক ও কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে স্থানীয় জেলেদের মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। এসব নিষিদ্ধ জালে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ ও জলজ প্রাণী।


চায়নার আবিষ্কৃত ম্যাজিক জাল এক ধরণের বিশেষ ফাঁদ। এটি প্রায় ২০ ফুট থেকে ৮০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটাই ছোট ছোট খোপের মত। খাল-বিল, নদী-নালা ও নালা-জলাশয়ে বাঁশের খুঁটির সাথে জালের দু’মাথা বেঁধে পেতে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পর তুললে ছোট-বড় সব ধরণের মাছ এ জালে আটকা পড়ে। এলাকায় এই জাল ব্যবহারের কারণে মুক্ত জলাশয়ের মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এলাকায় এখন আর আগের মতো দেশীয় মাছ দেখা যায় না। ম্যাজিক জালে মাছের পাশাপাশি প্রচুর জলজ প্রাণিও মারা পড়ছে। এলাকার শত শত মানুষ কালীগঞ্জের বিভিন্ন বাজার থেকে এই জাল উন্মুক্ত ভাবে ক্রয় করে থাকে।


স্থানীয় মৎসজীবীরা বলছেন, প্রতিটি ম্যাজিক জালের দাম ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা হলেও এতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। লাভ থাকায় জালের টাকা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে জেলেরা এই জালে মাছ ধরার দিকে ঝুঁকছেন।


উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের কলুন গ্রামের বাসিন্দা ও আটলাব (আল্লাউদ্দিনের টেক) বাজার কমিটির সেক্রেটারী  মোঃ নাজমুল হোসেন রিপন প্রতিবেদককে জানান, প্রতিদিন সকাল-বিকেল দু’বেলা ছোট ছোট পোনা মাছ নিয়ে বাজারে আসে স্থানীয় জেলেরা। মৎস্য অফিস থেকে প্রতিনিয়ত তদারকি বা অভিযান পরিচালনা না করলে চায়না ম্যাজিক জালের ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার মৎস্য ও জলজ প্রাণী সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু সামা জানান, গত মাসের ২৪ তারিখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করব। কিভাবে চায়না ম্যাজিক ও কারেন্ট জাল নির্মূল করা যায় সে ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


আরএক্স/