মুরাদনগরে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে খামারিদের চোখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৩৭ অপরাহ্ন, ২২শে জুলাই ২০২৩


মুরাদনগরে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে খামারিদের চোখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ
মুরাদনগর উপজেলার করিমপুর গ্রামের জুরু মিয়ার খামার থেকে গতকাল তোলা ছবি - জনবাণী।

প্রিয়ন্ত মজুমদার, মুরাদনগর(কুমিল্লা): কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে গরুর মালিক ও পালনকারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে কোনো ধরনের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। আক্রান্ত প্রতিটি গরুর চিকিৎসায় খরচ পড়ছে চার-পাঁচ হাজার টাকা। এ ব্যয় বহনে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। তাছাড়া উপজেলা ভেটেনারী সার্জেনের পদ শূণ্য দির্ঘদিন। বিভিন্ন ইউনিয়নের ভ্যাকসিনেটররা দিচ্ছেন চিকিৎসা।


উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় গরু রয়েছে ৯৮ হাজার ৬৪৭টি। ছোট-বড় খামারির সংখ্যা ১৮২টি। কিন্তু কত সংখ্যক গরু রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে, সঠিক হিসাব তাদের কাছে নেই। তবে তাদের ধারণা প্রায় অর্ধেক গরু এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত গরুকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ভেটেনারী সার্জেনের পদ শূণ্য থাকায় এতো বড় উপজেলায় চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি খামারিদেরকে সচেতন করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রাণি সম্পদ কার্যালয়। উপজেলায় নিয়োজিত ১৭ জন কৃত্রিম প্রজনক, ২০জন লাইভ স্টক সার্ভিস প্রোপাইটার ও ২০ জন ভ্যাক্সিনেটর এখন খামারিদের ভরসা।


গত সোমবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ১০ জন খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কম বেশি সব খামারেই লাম্পি স্কিন রোগে গরু আক্রান্ত হয়েছে। হঠাৎ গরুর শরীর গরম হয়ে জ্বর আসে। চামড়ায় গোটা গোটা ফোসকা পড়ে। এরপরে সেখানে চামড়া উঠে ক্ষত থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এ সময় গরু অনেকটা খাওয়া ছেড়ে দেয়। ফলে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। তাদের ভাষ্যমতে, সঠিক চিকিৎসা ও ঔষধ না পাওয়াতে গরু আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে।

  

মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের করিমপুর ও রামপুর, কামাল্লা ইউনিয়নের নেয়ামতপুর ও আসানপুর, যাত্রাপুর ইউনিয়নের কাশিপুর, মোচাগড়া ও ভবানীপুর, পাহাড়পুর, ধামঘর,বাবুটিপাড়া, জাহাপুর,দারোরা, আকবপুর,জাড্ডা কোরবানপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায় লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে গরু।


করিমপুর গ্রামের দিনমজুর জুরু মিয়া জনবাণীকে জানান, তাঁর চারটি গরুর ওই রোগ হওয়ার পরে এক চিকিৎসক চৌদ্দ হাজার টাকার ওষুধ লিখে দিয়েছেন। কিন্তু উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে কোনো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামের ঘরে ঘরে এ রোগে গরু আক্রান্ত হয়েছে।


মুরাদনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলি জনবাণীকে জানান, আক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় মেডিকেল ক্যাম্প করা হবে। উপজেলায় দ্রুত রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় জনবলসংকটে সেবা প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঔষুধ বরাদ্দও অপ্রতুল। তিনি আরও বলেন, মশা ও মাছি লাম্পি রোগের ভাইরাস ছড়ায়। এমনকি আক্রান্ত গরুর লালাযুক্ত খাবার অন্য গরুকে খাওয়ালেও এ ভাইরাস ছড়ায়। তাই আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখার পরামর্শ দেন তিনি।


আরএক্স/