শ্রীনগরে শতবর্ষী বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হলো না ছেলের ঘরে


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, ২৬শে জুলাই ২০২৩


শ্রীনগরে শতবর্ষী বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হলো না ছেলের ঘরে
সোনা বানু

খান সুজন, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের পাটাভোগ ইউনিয়নের বাসিন্দা সোনা বানু। বয়স প্রায় ১০০ বছর  ছুঁই ছুঁই। বার্ধক্যের ভারে নুইয়ে পড়েছে দেহ। শরীরে দানা বেধেছে নানান রোগ বালাই।বৃদ্ধা বয়সে অপ্রত্যাশিত ঘটনায়  মাজার হাড় ভেঙে শয্যাশায়ী সে। স্বামী হারা ৫ সন্তানের জননী সোনা বানু।


বাকরুদ্ধ হয়ে জীবন সায়ান্নে এসে বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।সোনা বানু শ্রীনগর উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে লস্করবাড়ির বাসিন্দা।স্বামী মৃত পিরবক্স শেখ।এক ছেলে মো. বারেক ও ৪ মেয়ে নিয়ে ছিলো তার সংসার।


সোনা বানু ৪ মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর সোনা বানুর আশ্রয় হওয়ার কথা ছেলের কাছে কিন্তুু সময়ের নির্মম পরিহাস ছেলে ধনীর দুলালী বিয়ে করে নাড়ির টান ছেড়ে হয়েছে দেশান্তর।লোকলজ্জা ও পরনিন্দার ভয়ে সাময়িকভাবে মাকে কাছে রাখলেও অনাহার ও পানাহারের অভাবে বৃদ্ধ মাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি বৃদ্ধ মায়ের একমাত্র ছেলে মো: বারেক। 


কৌশল করে পাঁচ বছর আগে  বৃদ্ধ মাকে মুমূর্ষ অবস্থায় তার ছোট বোন ও বোনের স্বামী মো. বাদলকে ডেকে নিয়ে কয়েকদিনের জন্য হাতে তুলে দেয়।তারপর শুরু হয় বারেকের নানা অযুহাত আর ষড়যন্ত্র। চোখের পানি ছেড়ে কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধার ছোট মেয়ে ফাহিমা বলেন আমার ভাই এমন ছিলোনা কি কারনে আমার মাকে শত্রুুর চোখে দেখে জানিনা।আমাদের স্বামীর সংসার ছেলে-মেয়ে রেখে বছরের পর বছর মায়ের কাছে থাকিইবা কি করে।


সোনা বানু তার অর্থবিত্ত সহায় সম্বল যা ছিল সবই খরচ করেছেন সন্তানের জন্য।স্বমাীর দেয়া হেবাকৃত কিছু সম্পত্তি সোনা বানুর শেষ বয়সের সম্বল ছিল কিন্তুু ছেলে বারেক অসৎ উপায় অবলম্বন করে বৃদ্ধ মায়ের থেকে  লিখে নিতে কোন্ঠাবোধ করেনি। স্বার্থের জন্য মায়ের গায়ে আঘাত করতেও দ্বিধাবোধ করেনি তিনি।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাশের বাড়ি এক ব্যাক্তি বলেন,আমরা দেখেছি সন্তান ও নাতি-নাতনির জন্য পাগল হয়ে যেত।আশায় বুক বেঁধে থাকতো বাড়িতে কখন ওরা আসবে। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত।যে মাকে আঘাত করলে সে আঘাত আল্লাহর আরশে গিয়ে পৌঁছায়। জীবদ্দশায় মা থাকতে মায়ের মর্ম যে সন্তান বোঝেনা মৃত্যুর পরে সে সন্তানের জান্নাত হবে কি আমি জানিনা।


সাম্প্রতি শ্রীনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধার ছোট মেয়ে ফাহিমা ও তার স্বামী মোঃ বাদল। সোনা বানুর যাবতীয় দেখাশোনা, ভরণপোষণ করে যাচ্ছেন তারা।


এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আমিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ ব্যাপপারে অভিযোগ পেয়েছি।আমি নিজে এই অভিযোগের তদন্ত করে খুব দ্রুত উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিবো।এ ধরনের অন্যায়কে কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেয়া যাবেনা।


আরএক্স/