অবরোধ কাটিয়ে সাগরে গেলেও উত্তাল সাগর শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে জেলেদের


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:২৭ অপরাহ্ন, ২৭শে জুলাই ২০২৩


অবরোধ কাটিয়ে সাগরে গেলেও উত্তাল সাগর শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে জেলেদের
ছবি: জনবাণী

সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন ও প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ২০ মে থেকে শুরু হওয়া ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ ২৩ জুলাই মধ্যরাতে মাছ শিকারে মাছ শিকারে গিয়ে আবারও ফিরে আসতে হয় জেলেদের। 


সমুদ্রে রুপালী ইলিশের সন্ধানে নেমে উত্তাল সাগর মেনে নিচ্ছেনা জেলেদের। দীর্ঘ সময় পড়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরের জেলে পল্লী গুলোতে সরগরম হয়ে উঠতেই থেমে গেছে জেলে আড়ৎদারের হাঁকডাক, সাগরে নামার প্রস্তুতিতে জাল ও ট্রলার গুছগাছ করতেও মরিয়া হয়ে নামলেও দুই দিন পড়েই ঘাটে ফিরতে শুরু করছেন জেলেরা। 


নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় ধারদেনা করে সমুদ্রে নামার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করলেও এখন শান্ত উপকূলের জেলেরা এর আগে কেউ নতুন জাল বুনছেন আবার কেউ পুরনো জাল সেলাই করছেন। কেউবা আবার ট্রলার মেরামতসহ অন্যান্য সরাঞ্জম প্রস্তুত করছেন। দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকার পরে এবার সমুদ্রের মাছ শিকারের প্রস্তুতিতে মরিয়া সাগর উপকূলের জেলেরা। 


২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ৬৫ দিনের জন্য গভীর সমুদ্রের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে না হতেই, জেলেদের জীবনে অভিশপ্ত সময় চলে আসে। কারণ ২৩ শে জুলাই মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের কারণে সমুদ্র এখন উত্তাল। তাই মাছ শিকার বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে তীরে ফিরছে মাছ ধরার শত শত ট্রলার। 


বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুর ঘাট ঘুরে দেখা যায় জেলেদের মলিন মুখে, কেউ কেউ ট্রলার গলৈতে বসে,আবার কেউ চায়ের দোকানের আনন্দের আড্ডা বাদ দিয়ে, অলস সময় পার করছে।


আরও পড়ুন: জি–২০ বৈঠক: কাশ্মীরের ‘উন্নয়ন’ দেখাতে পটুয়াখালীর ছবি ব্যবহার


এফবি এলমা ট্রলারের মালিক আবুল হোসেন কাজী বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে আমার দুটি ট্রলার সমুদ্রে পাঠাতে ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু দুই দিনের মাথায় শূন্য হাতে জেলেরা তীরে ফিরে এসেছে। বছরের বেশিরভাগ সময় অবরোধ এবং বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে আমরা প্রতিবছর লোকসান গুনছি।


কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানের জেলেরা এই বন্দরে আশ্রয় নিচ্ছেন। বছরে বেশ করেকবার আবহাওয়ার বৈরিতায় আমরা মৎস্য পেশা নিয়ে হুমকিতে। তাই জেলেদের সহযোগিতায় সরকারের কাছে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের দাবি জানাচ্ছি।


পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি অবস্থান করায় লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তা কিছুটা বেড়ে দেশে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে। একইসঙ্গে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। কোনো কোনো জায়গা থেকে দূর হতে পারে তাপপ্রবাহ। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এলাকায় অবস্থানরত সকল মাছধরার ট্রলার ও নৌ-যানকে সাবধানে থেকে চলাচল করতে বলা হয়েছে।


জেবি/ আরএইচ/