নিষিদ্ধ ট্রলি দিয়ে ফসলির টপসয়েল কাটার ধুম, কৃষিকাজ ছাড়ছেন কৃষকেরা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নিষিদ্ধ  ট্রলি দিয়ে ফসলির টপসয়েল কাটার ধুম, কৃষিকাজ ছাড়ছেন কৃষকেরা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে কৃষি জমিতে পুকুর খনন, টপ সয়েল কেটে নেওয়ায় জলাবদ্ধতায় দ্রুতগতিতে কমছে ফসলি জমি। আর এসব ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা ২২টি ইটভাটায়। মাটি ব্যবসায়ীরা চড়া দামে একটি জমি ক্রয় করে ভুমি আইন অমান্য করে জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে পুকুর খনন করেছে, এতে  পাশ্ববর্তী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাই জমির মালিকরা বাধ্য হয়ে জমির ২ থেকে ৪ ফুট মাটি  অথবা জমি  বিক্রি দিচ্ছে।  অনেকে চাষবাস না করে ফেলে রেখেছেন। এতে  বিপাকে পড়ছে কৃষকরা। তাই অনেক কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে অন্য পেশা খুজছেন। এভাবে অনাবাদি জমি পরিমান বাড়তে থাকলে এক সময় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। 
 
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর  উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ২শত ১২ একর ফসলি জমি কমেছে। ২০১৯ সালে প্রায় ২ হাজার ৬শত একর ফসলি জমিতে চাষাবাদ হয়। এ বছর চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০ একক জমি। এ ভাবে প্রতি বছর প্রায় ২শত একর ফসলি জমি কমতে থাকে। এর কারন হিসেবে কৃষক ও কৃষি অফিসাররা ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও টপসয়েল কেটে নেওয়া ও অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি করাকে দায়ী করছেন। উপজেলা নির্বাহীর কর্মকর্তা অফিসের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়,উপজেলায় মোট ২২টি ইটভাটা রয়েছে। 

কৃষক আবদুল মান্নান, আবু জাফর মানিক, শাহ আলমসহ অনেকে কৃষক জানান, ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে , যেখানে-সেখানে পুকুর খনন করে অধিক মূল্যে  ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছে। তাই মাঠে সারা বছর জলাবদ্ধতা  কারনে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে আমরা  কৃষকরা বড় বিপদে আছি। 

জমির মালিক বাচ্ছু মিয়া, শাহবুদ্দিনসহ অনেকে জানান, ইটভাটার মাটির জন্য ব্যবসায়ীরা কৌশলে একটি জমি কিনে নিয়ে ৩ থেকে ১৫  ফুট পর্যন্ত মাটি কেটে নিচ্ছে। এতে পার্শ্ববর্তি জমি ভেঙ্গে পড়ে। আশপাশে পুকুর থাকায় জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সেখানে তিনি কোনো আবাদ করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অফিসার কমল কুমার ভর্মণ বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন, জমি টপ সয়েল কেটে নেওয়ার ফলে দিন দিন ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরাও সঙ্কিত । বর্তমানে খাদ্য ঘাটতি না থাকলেও যেভাবে আবাদি জমির সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তাতে একসময় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খাতুন জানান, কেউ চাইলেই ইচ্ছেমতো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হয়। এভাবে জমি শ্রেণি পরিবর্তন কেউ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এসএ/