উপজেলা আ. লীগের পুর্নাঙ্গ কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৪০ অপরাহ্ন, ৬ই আগস্ট ২০২৩


উপজেলা আ.  লীগের পুর্নাঙ্গ কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা
নুরুল আমিন সুরুজ সরকার

সম্মেলনের ১০ মাস পর পুর্নাঙ্গ কমিটিতে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পদ পেয়েছে নুরুল আমিন সুরুজ সরকার নামে এক বিএনপি নেতা। তিনি সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার চর ধানাটা গ্রামের মরহুম মমতাজ সরকারের ছেলে। পুর্নাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর সারা উপজেলা জুড়ে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে ।  এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 


জানা যায়, দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরিষাবাড়ী উপজেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। 


দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন বাদশা, পৌর মেয়র মনির উদ্দিন মনির, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুন-অর রশীদ, ভিপি খোরশেদ আলম ও মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ প্রতিদ্বন্দিতা করেন।  


জামালপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বাকী বিল্লাহ আগামী ৩ বছরের জন্য দ্বিতীয় বারের মতো ছানোয়ার হোসেন বাদশাহকে সভাপতি ও হারুন অর-রশিদকে সাধারণ সম্পাদক পদে ঘোষনা করে।  


এরপর ১০ মাসেও পুর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি।  বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় এবং অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হলে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ্র ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। সেই কমিটিতে ৭০ নাম্বার সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছে বিএনপির ডোনার ও সাবেক উপজেলা বিএনপির নেতা মো: নুরুল আমিন সুরুজ সরজার।  


খোজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯০ সাল থেকে নুরুল আমিন সুরুজ সরকার বিএনপির একজন নিবেদিত নেতা ছিল। ২০০৪ সাল থেকে তিনি বিএনপির একজন ডোনার ছিল। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি হরতাল ও অবরোধ চলাকালে তিনি নেতা কর্মীদের অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করতেন। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের আরামনগর বাজার বর্দ্ধন মিষ্টান্ন ভান্ডার দোকানে নাস্তা করাতেন। 


এরপর ২০১৪ সালে ১ম বারের মতো উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বাদশাহ ও হারুন অর-রশিদ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান।  এরপর থেকেই দলের সাধারণ সম্পাদক এর সাথে যৌথভাবে ঠিকাদারী ব্যবসায়  জড়িয়ে পড়েন নুরুল আমিন সরকার সুরুজ৷  তবে আওয়ামীলীগের কোন অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যায়নি। 


এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান শাহজাদা জানান, কমিটি প্রকাশের পর থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।  আমরা তাকেও বিএনপি হিসেবেই জানি। বিএনপি ঘরোয়া মানুষ, বিএনপিই ছিল। কবে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছে তাও জানিনা। কারা আওয়ামীলীগে নিয়েছে তাও জানি না। তার কোন আনুষ্ঠানিকতাও নাই। 


উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশাহ জানান, সুরুজ সরকার আওয়ামীলীগের কেউ না।  তিনি বিএনপি করতেন এটা জানি। তবে কবে আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে আমি জানি না।   


উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মিলন জানান,সুরুজ সরকার বিএনপির একজন নিবেদিত নেতা ছিলেন।  বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্টানে অর্থনৈতিক ভাবেও সহযোগিতা করতেন । আওয়ামী লীগে কবে যোগদান করেছে জানিনা । আর তার কোন পদ ছিল কিনা খোজ নিয়ে জানাব।  


জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট বাকী বিল্লাহকে মুঠোফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 


আরএক্স/