পানিবন্ধিদের কাছে খাবার নিয়ে যাচ্ছে চসিকের জনপ্রতিনিরা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০:৫২ পূর্বাহ্ন, ৮ই আগস্ট ২০২৩
টানা বর্ষনে প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪ দিন যাবত জলাবদ্ধতায় পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে নগরীর নিচু এলাকার জনসাধারণ। বাসাবাড়িতে আটকা পড়ে চরম ভোগান্তিতে বসবাস করছে বাসিন্দারা। বিশেষ করে জলাবদ্ধতার কারণে রান্নাঘর তলিয়ে যাওয়ায় খাবার হোটেলসহ বন্ধ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট। এতে নাখেয়েই দিন পার করেছেন অনেকেই। তবে এই সমস্যার সমাধানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. রেজাউল করিম চৌধুরীর দিক নির্দেশনায় প্রতিটি ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে রান্না করা খাবার নিয়ে হাজির হচ্ছে চসিকের জনপ্রতিনিধিরা।
পানি বন্ধিদের কথা বিবেচনায় গত রবিবার (৬ আগস্ট) থেকে মেয়রের দিকনির্দেশনায় এই রান্না করা খাবার বিতরণ কার্যক্রম প্রথম চালু করেন ৪ নং চান্দগাঁওয়ের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসরারুল হক এসরাল। তিনি গত দিনে প্রায় ১৫ হাজার পানিবন্ধিদের এই রান্না করা খাবার বিতরন করেন। সোমবার (৭ আগস্ট) থেকে ৫, ৬, ৭ নং ওয়ার্ডসহ প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই এই খাবার বিতরনের কার্যক্রম চালু হয়েছে। জলাবদ্ধতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানাযায়।
এছাড়াও নগরীর জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দ্রুত বদ্ধ পানি অপসারণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল শহরের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাসমূহ পরিদর্শন করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামকে বিশ্ববাণিজ্যের হাব হিসেবে গড়ে তোলা হবে: চসিক মেয়র
এসময় পরিদর্শন সম্পর্কে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মেয়র মহোদয়ের নির্দেশক্রমে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকলে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে সাথে নিয়ে আমরা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে মানুষদের সরিয়ে দিতে থাকি। এছাড়া পানিবন্দি এলাকাগুলোতে মেয়রের পক্ষে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন কাউন্সিলররা। যেসমস্ত সড়ক ভেঙে গেছে সেগুলোও মেরামত এবং যে সমস্ত পয়েন্টে পানি আটকে গেছে সেগুলোতে পানি অপসারণে কাজ চলছে।
সোমবার বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চান্দগাঁও, মোহরা, ফুলতলা, বাড়ইপাড়া, এনায়েতবাজার, তিনপোলের মাথা, নিউ মার্কেট, স্টেশন রোড, কাপাসগোলাসহ যেসব স্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সেসব স্থানে তাৎক্ষণিক সেবক, স্কেভেটর ও লং বুম ব্যবহার করে পানি প্রবাহ সচল করার কাজ শুরু করে প্রতিনিধিদলটি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের উন্নয়নে চসিকের সাথে সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় চাই: মেয়র
এরপর ৯ নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড এবং ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের লেকসিটি আবাসিক ও ১৪ নং লালখান বাজার ওয়ার্ডের মতি ঝর্ণা এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকাসমূহ পরিদর্শনের পর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করায় যে সমস্ত পরিবারকে সরিয়ে দেয়া হয় তাদের দেখতে আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে দলটি। এসময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, চসিক মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম জয় ও চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা।
এছাড়া অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার ও দ্রুত পানি অপসারণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে অস্থায়ী বাধ তৈরির জন্য চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে নগরীর জলমগ্ন এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী আবু ছিদ্দীক ও আনোয়ার জাহান। এসময় তারা দ্রুততম সময়ে সড়ক ও সংস্কার ও যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
জেবি/এসবি