ভোলায় পুকুরে মুক্তা চাষে বেশ চাঞ্চলের সৃষ্টি!
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:১৯ অপরাহ্ন, ১৪ই আগস্ট ২০২৩
ভোলায় পুকুরে মুক্তা চাষে বেশ চাঞ্চলের সৃষ্টি হলেও লাভবান হবার আশা দৌলত খানের জিহাদ ও জাহিদের। তবে শুনতে বেশ কাল্পনিক আর রূপকথার গল্পের মতো মনে হলেও বাস্তবে এমন চাষাবাদের ঝুঁকে পড়ে এলাকায় এমনি চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছেন ভোলার দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.জিহাদ ও জাহিদ হোসাইন নামের দুই যুবক ।
সোমবার (১৪ আগষ্ট) ১২ ঘটিকায় সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,তারা প্রথমে ইউটিউব দেখে প্রাকৃতিক উপায়ে এ চাষাবাদ শুরু করে । আর তাই এ নিয়ে রীতিমতো এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। যা চোখে একনজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে এলাকাবাসীর পাশাপাশি দূর দূরান্তের মানুষও। অল্প পুঁজি আর কম পরিশ্রমের এমন চাষাবাদের সফলতার হাতছানি দিচ্ছে। আর তাই দিনে দিনে অনেকটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক উপায়ে পুকুরে এ মুক্তা চাষ।
যদিও ইউটিউব এর মাধ্যমে গল্পের শুরু, এবং পরে তা বাস্তবায়নের আগ্রহ সৃষ্টি হয় ভোলার দৌলতখানের জাহিদ ও জিহাদের। জানা যায়,পরে তারা নাটোর থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করে নিজেদের ২৪ শতাংশ জমির একটি পুকুরে শুরু করে মুক্তা চাষ। জীবন্ত ঝিনুকের প্রতিস্থাপন করা হয় প্লাস্টিকের নিউক্লিয়াস বা ইমেজ মুক্তা।
প্রথমে তা ঝুড়িতে রেখে পরে তা পানির গভীরতায় রাখা হয়। নির্দিষ্ট সময় পরিচর্যার পর ঝিনুকের ভেতরে লেয়ারের সৃষ্টি হয়ে চকচকে মুক্তায় পরিণত হয়। এ কার্যক্রম সম্পন্ন হতে সময় লাগে নয় থেকে বারো মাস। এতে তাদের পুঁজি ছিল মাত্র ৬৫ হাজার টাকা। ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে তাদের এই মুক্তা চাষ এখন সফলতা হাতছানি দিচ্ছে।
জিহাদ ও জাহিদ জানান, তাদের মুক্তার আটটি ডিজাইন রয়েছে। এখন তাদের মুক্তার বয়স প্রায় ৯ মাস। আগামী ৪ মাসের মধ্যেই তারা মুক্তা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।
প্রতিপিস মুক্তার পাইকারি বাজারদর দুই থেকে আড়াইশ টাকা।বিক্রি উপযোগী মুক্তার বাজার মূল্য তখন আনুমানিক ২ থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা হবে তারা ধারণা করতেছেন। প্রথমবারই মুক্তা চাষ করে ভালো লাভবান হওয়ার আশা করছেন এ দুই যুবক। মুক্তা চাষের কথা শুনে প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের খামারে স্থানীয় বেকার যুবকরা ভিড় জমাচ্ছেন।
তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ২-৩ জন মুক্তা চাষ শুরু ও করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। যদি মৎস বিভাগ তাদের একটু সহযোগিতা করে তারা আরো সফল হবে বলেও জানান জিহাদ ও জাহিদ।
একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জামাল জানান, তিনি জিহাদ ও জাহিদের দেখাদেখি মুক্তা চাষে আগ্রহী হন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে তিনিও জুলাই মাসের শেষের দিকে তাদের বাড়ির সামনের ৩০ শতাংশ পুকুরে ১৮০০ পিস ঝিনুক নিয়ে মুক্তা চাষ শুরু করেছেন। তিনিও জিহাদ ও জাহিদের মতো মুক্তা চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
মেদুয়া গ্রামের বাসিন্দা রাকিব বলেন, তাদের গ্রামে পুকুরে যখন জিহাদ ও জাহিদ মুক্তা চাষ শুরু করেন, তখন অনেকে হাসি-ঠাট্টা করেছেন। কারণ তাদের ধারণা ছিল, গ্রামের পুকুরে মুক্তা চাষ সম্ভব নয়। কিন্তু এখন তাদের মুক্তা চাষের সফলতা দেখে গ্রামবাসী অবাক।
দৌলতখান উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মাহফুজুর রাহমান বলেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি চমৎকার ও ভালো উদ্যোগ। এই বিষয় টি শুনে পুকুরের কাছে কয়েক বার গিয়েছি, তাদের কে দিকনির্দেশনা দিয়েছি এবং তাদের সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখছি।
আরএক্স/