জাতীয় কবি ঘুমিয়ে থাকুক শান্তিতে, বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য আমরা জেগে আছি: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:০৯ অপরাহ্ন, ২৮শে আগস্ট ২০২৩


জাতীয় কবি ঘুমিয়ে থাকুক শান্তিতে, বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য আমরা জেগে আছি: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
আলোচনা সভা

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি বলেছেন, অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন সর্বদাই সোচ্চার। তারা উভয়ই ছিলেন মানবতাবাদী, সাম্যবাদী দর্শনে বিশ্বাসী। অসম্প্রদায়িক চেতনাকে তারা ধারণ করতেন। ছিলেন স্বাধীন চিত্তের অধিকারী। মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে তারা ছিলেন আপোষহীন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের আদর্শ ও চেতনা আমাদের জন্য সর্বদাই অনুকরণীয়, অনুসরণীয় এবং চিরন্তন।


বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলার জনগণ তা রুখবেই। জাতীয় কবির শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন সমাধিতে তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে এবং তিনি সেখানেই ঘুমিয়ে আছেন। 


জাতীয় কবি ঘুমিয়ে থাকুক শান্তিতে, কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য আমরা জেগে আছি, জেগে থাকবো। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সব চাইতে উৎকৃষ্ট স্থান হিসেবে উল্লেখ করে আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের দ্বিতীয় তলায় যেখানে কবি শেষ নিঃশ্বাসত্যাগ করেছেন সেই স্মৃতিধন্য ১১৭নং কেবিনটি জাতীয় কবির স্মরণে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে, যার স্বাক্ষী আমি নিজে এবং ১১৭নং  কেবিনটি জাতীয় কবির স্মরণে জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন  আহমেদ। 


সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন  আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে গড়ার পূর্ণতা দিতে হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। সে লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদেরকে এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

   

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন  আহমেদ বলেন, শোষিত বঞ্চিত নিপীড়িত জনতার কবি, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, বিশ্ব মানবতার কবি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। জাতীয় কবির সঙ্গে  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় কবির লেখনী থেকে প্রেরণা নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও কবি নজরুলের মূল আদর্শই  হল মানুষকে সেবা করা, সাম্যের গান গাওয়া। 


বঙ্গবন্ধুর মতই তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও নজরুল  ইসলামের লেখনী থেকে প্রেরণা  নিয়ে বাংলাদেশে নারী পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও কবি নজরুল ইসলামের আর্দশ বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই এদেশে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আরো বলেন, যাঁদের আত্মত্যাগের কারণে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি  তাদেরকে নতুন প্রজন্মকে ধারণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।


আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনী জনাব খিল খিল কাজী। মহতী এই আয়োজনে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জনাব মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বিশিষ্ট সাংবাদিক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. রেজাউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আলোচনা সভা শেষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি কবির স্মৃতিধন্য কেবিন ১১৭ পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ২২ জুলাই চিকিৎসকদের পরামর্শে বঙ্গবন্ধু ‘কবিভবন’ থেকে কবিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন আই পিজি এম আর)-এর ১১৭ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করেন। ১ বছর ১ মাস ৮ দিন এ কেবিনে চিকিৎসক ও নার্সদের নিবিড় যত্ন ও সেবা দেওয়া হয় মানবতার এই কবিকে। এই ১১৭ নম্বর কেবিনেই বাঙালির পরমপ্রিয় কবির জীবনাবসান ঘটে।


আরএক্স/