বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রের মা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৩


বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে ছাত্রের মা
ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় বিয়ের দাবিতে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীর মা (৩৪)। এ ঘটনার পর থেকে স্কুলশিক্ষক আক্তার হোসেন পলাতক।


আক্তার হোসেন ৫৫ নং বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চরপাতালিয়া গ্রামের হাসান আলী মাস্টারের ছেলে।


রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ই ইউনিয়নের চরপাতালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। 


জানা গেছে, প্রায় আট মাস যাবত স্কুল শিক্ষক আক্তার হোসেনের সাথে ওই নারীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে বিয়ে না করায় স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নেন নারী।


ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্যমতে, তার স্বামী প্রবাসে থাকেন।  আক্তার হোসেন তার সম্পর্কে দেবর হয়। তার বাচ্চাদের পড়াশুনার অজুহাতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন তিনি। একপর্যায়ে জোর করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন আক্তার হোসেন। সে শারীরিক সম্পর্ক করে ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করতো। বিয়ে করবে বলে কিছুদিন আগে আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিল আক্তার হোসেন। সেখানে আক্তার তাকে তার ভাই জব্বার হোসেনের বাড়িতে রেখে চলে আসে। পরে জব্বার হোসেন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনা ভুক্তভোগীর স্বামীর বাড়ির লোকজন জেনে যায়। তার স্বামী তাকে ফোন করে বলেছে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকেই আক্তার হোসেন তাকে এড়িয়ে চলা শুরু করলে বাধ্য হয়ে তার বাড়িতে অবস্থান নেন ভুক্তভোগী নারী। তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দেন ওই নারী।


আক্তার হোসেনের মা ফাতেমা বেগম জানান, “আমি কিছুই জানি না। ওই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে দাবি করে বাড়িতে এসে উঠেছে। আমি ওই মেয়েকে বুঝিয়ে বলেছিলাম যে ঢাকায় যাও, গার্মেন্টসে কাজ করে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করো। কিন্তু আমার কথা সে শুনল না, আমার মানইজ্জত সব নষ্ট করে দিলো। আমার ছেলে আক্তার হোসেন এখন কোথায় আছে, তা আমি জানি না।”


আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক সপ্তাহের উদ্বোধন


বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সে তিন দিনের ছুটি নিয়ে স্কুলে আসেনি। শিক্ষা অফিস থেকে শুনতে পেলাম আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছে। যে ঘটনার কথা লোক মারফত জানতে পেরেছি, এমন কিছু ঘটে থাকলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। একজন শিক্ষক এই কাজ করতে পারেন না।”


আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৩ জনের


ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা রতন বলেন, “আক্তার হোসেন ও ওই নারীর বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। মেয়ে ছেলেকে বিয়ে করবে কিন্তু ছেলে বিয়েতে রাজি না হওয়াতে আমরা সমাধান করতে পারিনি। এখন ওই নারী আক্তার হোসেনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন।”


ডামুড্যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দীন বলেন, “অসুস্থতা দেখিয়ে আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন। তার নামে নৈতিক স্খলনের একটি বিষয় জানতে পেরেছি। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, প্রকৃত শিক্ষক এই ধরনের কাজ করতে পারেন না।”


জেবি/এসবি