বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০২:১২ অপরাহ্ন, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩


বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

আমরাসবাই স্বীকার করি যে বাংলাদেশ৫২ বছরে নানা রকমবাধা-বিপত্তি, চড়াই-উতরাই পেরিয়েঅর্থনৈতিক উন্নয়নের মোটামুটি একটা সন্তোষজনক পর্যায়েএসে পৌঁছেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নটা, বিশেষ করে প্রবৃদ্ধি, গ্রোথ, সেটাই বেশি প্রতীয়মান এখন।বাকি যে সার্বিক উন্নয়ন, সে সম্পর্কে এখনো অনেক প্রশ্নআছে। এখন যদি আমরাদেখি আমাদের যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সেটা একটা ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে চলে আসছে। 


এটাএমন নয় যে একবা দুই দশকের মধ্যেএগুলো অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।গত পাঁচ দশকে কখনোকম অর্জন, কখনো বেশি অর্জন—এভাবে আমরা এই পর্যায়েপৌঁছেছি। এখন আমাদের মূলচ্যালেঞ্জটা হলো আমাদের দেশেরঅর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া।আমরা স্থায়ী, টেকসই উন্নয়নের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছি, এখনো সেটা কিন্তু বলাযাবে না। 


আমাদেরযে লক্ষ্যগুলো সামনে আছে, তার একটাহলো উচ্চ-মধ্যম আয়েরদেশে যাওয়া, আরেকটা হলো উন্নয়নশীল দেশেরকাতারে যাওয়া। 


এখনঅর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে আমাদের সামনে নানা রকম সমস্যাএসে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু তার পরও আমরাপাঁচ দশক বা অর্ধশতাব্দীপার করে এসেছি। রাজনৈতিকএকটা অবস্থা দেশে বিরাজ করছে। 


এইপরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সামনে যেসব সমস্যা ওচ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো আরোবিচক্ষণতার সঙ্গে, শক্তভাবে সেগুলোর সমাধান করতে হবে। তারমানে এই নয়, সামনেযে নির্বাচন আছে, তার আগেসব কিছু করা যাবে।অথবা নির্বাচনের পর যে সরকারআসুক না কেন, তারাদ্রুত সব করে ফেলবে, সেটাও নয়। এখন থেকেইযদি আমাদের প্রস্তুতি না থাকে, তাহলেচ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হবে না।প্রস্তুতি মানে মানসিক প্রস্তুতিএবং আমরা যে ক্রান্তিলগ্নেপৌঁছেছি, সেটা থেকে বেরিয়েআসার কার্যাবলি ঠিক করার মাধ্যমে। 


বর্তমানক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধানমনে রাখা ভালো, যেকোনোদেশেই রাজনীতি বা রাজনৈতিক যেনেতৃত্ব থাকে, তারা কিন্তু শুধুমূল ভূমিকা পালন করে। অর্থনৈতিকউন্নতি, সামাজিক উন্নয়ন—কোনোটাই কিন্তু সুষ্ঠু এবং ইতিবাচক রাজনৈতিকপরিবেশ না থাকলে হয়না। আমরা বিশেষ করেগণতন্ত্র বলি বা গণতন্ত্রেরএকেবারে খাঁটি-নিখাদ রূপ না হয়েযদি মিশ্র গণতন্ত্র বলি, সেটাও কিন্তুরাজনীতির ওপর নির্ভর করে।এটাই এখন বাংলাদেশের জন্যসবচেয়ে বড় একটা চ্যালেঞ্জ। 


কারণআমরা দেখতে পাচ্ছি, যে অর্জনটুকু আমরাকরেছি, সেটাকে ধরে রাখতে গেলেচ্যালেঞ্জ আছে, সমস্যা আছে।বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ অনেকসমস্যা এখন প্রকট হয়েদাঁড়িয়েছে। তার সঙ্গে বাইরেরসমস্যাগুলো তো আছেই। যেমন—কভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এগুলো কিন্তু আমাদের ভেতরের সমস্যাগুলোকে আরো জটিল করেফেলেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমারবড় একটা প্রশ্ন, আমরাকি এই কঠিন পরীক্ষারজন্য প্রস্তুত? নির্বাচনের পরে সেই কঠিনপরীক্ষাটা উত্তীর্ণ হয়ে আমরা সামনেএগিয়ে যেতে পারব কিনা? এই প্রশ্নের উত্তরজানতে হলে আমাদের বর্তমানঅবস্থাটা বিবেচনা করতে হবে। বর্তমানেআমরা কী অবস্থায় আছি।আমাদের  দুর্বলতাগুলোকী? 


প্রথমত, আমরা জানি যে আমাদেরসমস্যা অনেক। মূল্যস্ফীতি, টাকার মূল্যমান কমে যাওয়া, ফরেনরিজার্ভ কমে যাওয়া, ব্যাংকিং, আর্থিক খাতে নানা রকমসমস্যা, হুন্ডি, মুদ্রাপাচার, দুর্নীতি—এগুলো তো আছেই। তারপরএখন আমাদের মূল সমস্যা হলোকর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আয়ের সংস্থানও সংকুচিতহয়ে আসছে। তারপর সবচেয়ে বড় একটা ব্যাপারআমরা লক্ষ করছি, দিনদিন কিন্তু আর্থিক বৈষম্য বেড়েই চলছে। আর্থিক বৈষম্য মানে আয়ের বৈষম্যও সম্পদের বৈষম্য। এই যে আর্থিকবৈষম্য ও সম্পদের বৈষম্যসাধারণ মানুষের বা যেকোনো মানুষেরজীবনের ওপর সামাজিক প্রভাবফেলছে। নেতিবাচক প্রভাবই কিন্তু ফেলছে। কারণ আয়ের সংস্থানযদি না থাকে এবংআয়ের বৈষম্য থাকে, তাহলে যতই সার্বিকভাবে সামষ্টিকউন্নতি হোক, বিষয়টার ফলকিন্তু সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারেনা। পারছে না। এটা এখনবাংলাদেশের বাস্তবিক অবস্থা। 


এখনজানতে হবে এর কারণকী? পাঁচটা কারণ বলতে পারি। একটা হলো আমাদের নীতিরদুর্বলতা। যথাসময়ে যথাযথ নীতি প্রণয়নে আমাদেরদুর্বলতা আছে। নানা রকমদুর্নীতি আছে। আমাদের নীতিরযে দুর্বলতা, সেটার একটা ফল হলোআমাদের এই অর্থনীতির বর্তমানঅবস্থা। 


দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাব।অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিন্তু অর্থনৈতিক বিবেচনায় চলবে। যেমন—ব্যাংক চলবেআর্থিক নিয়মের মধ্যে। সেগুলো ঠিক হয়ে ওঠেনা। কারণ এখানে নানারকম রাজনৈতিক প্রভাব ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাব।আবার আমরা সঠিক সিদ্ধান্তযথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি না। 


তৃতীয়ত, প্রতিষ্ঠান। যেমন—ব্যাংক একটাপ্রতিষ্ঠান। বাজার একটা প্রতিষ্ঠান। তারপরপুঁজিবাজার একটা প্রতিষ্ঠান। এরকম সরকারি ক্ষেত্রে হোক, বেসরকারি ক্ষেত্রেহোক—প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দুর্বল। তাদেরদক্ষতা কম। সেখানে দুর্নীতি, নানা রকম অনিয়ম, অব্যবস্থাপনাচলছে। 


চতুর্থত, নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা; যেমন—বাংলাদেশ ব্যাংক, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিটিআরসি—এই যে নিয়ন্ত্রণকারীসংস্থাগুলো আছে, মনে হয়না তারা খুব দক্ষভাবে, শক্ত অবস্থা নিয়ে এবং স্বাধীনভাবেকাজ করতে পারছে। এখানেকিন্তু নানা রকম প্রভাবআছে। এবং এখানে যেসবকর্মকর্তা আছেন, তাঁরা কিন্তু রাজনীতি ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবমুক্তনন। 


সবশেষে আমরা দেখতে পারি, সব জায়গায় সুশাসন অর্থাৎ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব।এটা সরকারি ক্ষেত্রে হোক—সরকারি নানারকম কর্মকাণ্ড, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বলি, প্রশাসন বলিএবং সরকারি অন্যান্য ব্যাপারে বলি, সেখানে কিন্তুস্বচ্ছতা ও জবাবদিহির যথেষ্টঅভাব আছে। অপরদিকে প্রাইভেটসেক্টরেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিন্তু খুব ভালোভাবে স্বচ্ছতাও জবাবদিহি করছে না। সেটারপ্রতিফলন আমরা দেখি, যখনআমাদের বাজার অনিয়ন্ত্রিত। মূল্যস্ফীতি ঘটছে। লোকজনের আয়ের সংস্থান কমেযাচ্ছে দিন দিন। লোকজনেরযে নানা রকম সমস্যা, সেগুলোর কিন্তু সমাধান হচ্ছে না। এমন নয়যে সমস্যাগুলোর সমাধানের পথ কেউ জানেনা। এখানে সদিচ্ছা, সচেতনতা ও সততার অভাবরয়েছে। 


সম্প্রতি ডেঙ্গুর ভয়াবহতা একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ। নীতিনির্ধারকরা কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কথাবার্তাই সর্বস্ব, কাজে তেমন নেই। অনেক সময় বলা হচ্ছে, মানুষ কেন সচেতন হয় না। তবেই ডেঙ্গু কমবে। মানুষ সচেতন হবে, মানুষকে সচেতন করার জন্য তো সহায়ক জিনিস লাগবে। সরকার কিসের জন্য আছে? তারা বলে, ‘মানুষ সচেতন হোন, সব ঠিক হয়ে যাবে।’ এগুলো অনেকটা ছেলে-ভোলানো কথাবার্তার মতো। এটা কিন্তু অভূতপূর্ব ব্যাপার—বাংলাদেশে কিন্তু এর আগে এ রকম ঘটনা খুব দেখেছি। পাঁচটা কারণ আগে উল্লেখ করা হলো, সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের।


শ্রীলঙ্কায় বড় একটা রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা আমরা দেখেছি। দেশটা অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়। তারা ঋণ শোধ করতে পারছিল না। মূল্যস্ফীতি ৬০ শতাংশ হয়ে যায়। কর্মসংস্থান ছিল না। এক-দেড় বছরের মধ্যে তারা ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি অনেক কমে গেছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। ট্যুরিজম আবার আগের মতো উঠে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে—আর্থিক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে। সব সমস্যা একবারে সমাধান হয়ে যায়নি। তবে অনেক ইতিবাচক ধারায় এসেছে। এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কার একটা স্ট্রং পয়েন্ট হলো, প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শক্তিশালী এবং লোকজনও কিন্তু সচেতন। অন্যান্য দেশের তুলনায় শিক্ষিতের হারও অনেক বেশি। তাদের মানবসম্পদকে ব্যবহার করে, প্রতিষ্ঠানগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার করে তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।


সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আর্থিক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে করণীয় কাজগুলো, সেখানে কিন্তু কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি। কোনো রকম রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে পড়েনি। তারা ঋণের সুদের হার বাড়িয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে কন্ট্রোল করেছে। ব্যাংকগুলোকে ঠিকমতো পুঁজি গঠন করার জন্য যে নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো পরিপালন করা হয়েছে। এ জন্যই তারা সামনের দিকে এগিয়ে গেছে।


অপরদিকে আমরা যদি তুলনা করি, আমাদের কিন্তু যথেষ্ট ঘাটতি রয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠান বলি, মানবসম্পদের ব্যাপারে বলি, এখানে কিছুটা পার্থক্য রয়ে গেছে। বলব না যে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশ এখনো ভালো অবস্থানে আছে। শ্রীলঙ্কাকে অনুকরণ করতে বলছি না। তবে তাদের থেকে আমরা শিক্ষণীয় জিনিস গ্রহণ করতে পারি। তারা কিভাবে কঠিন সময়গুলো পার করে ভালো অবস্থানে নিজেদের নিয়ে গেছে, সেটা গ্রহণ করতে পারি। এমন নয় যে বাংলাদেশে এটা আমরা জানি না। আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম এই জন্য যে আমাদের কী করা প্রয়োজন, সেটাই আমাদের সবচেয়ে বেশি করে জানতে হবে।


প্রথমত, আমাদের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে হবে। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি, সরকারি সম্পদের অপচয়, অর্থের অপচয় রোধ করতে হবে। তৃতীয়ত, নিয়ম-নীতি যেগুলো আছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম হোক বা অন্যান্য সংস্থার নিয়ম হোক, সেগুলো খুব যত্নের সঙ্গে পরিপালন করতে হবে। চতুর্থত, আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা—সুদের হার এখনো বাজারমুখী করা হয়নি। এক্সচেঞ্জ রেট, যেটা আমাদের টাকার মূল্যমান এখনো আমরা ভালো করতে পারিনি। বিভিন্ন অ্যাকশন নেওয়ার পরও আমরা খুব উন্নতির চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি না।


তারপর আরেকটা ব্যাপার হলো, ব্যাংকিং সেক্টরেও রিফর্ম করা দরকার। খেলাপি ঋণ রোধ করতে হবে। তারপর আমাদের প্রাইভেট সেক্টর, বিশেষ করে বড় বড় শিল্প দরকার আছে, কিন্তু আমাদের ছোট-মাঝারি কুটির শিল্প—এগুলোকে আরো উত্সাহ দান করা। যতই আমরা মুখে কথা বলি, এসএমই সেক্টর খুব ভালো, ঋণ পাচ্ছে, আসলে তো ঋণ তাদের কাছে তেমন যাচ্ছে না। সহায়তা খুব যে যাচ্ছে, তা তো মনে হয় না। আমাদের কর্মসংস্থান এবং উৎপাদনশীল খাত হচ্ছে ছোট-মাঝারি শিল্প ও বাণিজ্য খাত। এগুলো পণ্য উৎপাদন করে। সেবা উৎপাদন করে। এগুলো যদি বাড়ানো যেত, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি অনেক কমে যেত। সেদিকে তেমন খেয়াল নেই।


এখন এফডিআই আসবে কী করে? বাংলাদেশের অবস্থা যে স্থিতিশীল নয়, রাজনৈতিক অবস্থা কিছুটা টালমাটাল, এটা তো লোকজন জানে। নির্বাচনের পরও যদি এই অবস্থা থাকে, তাহলে এফডিআই আসা, বাইরে থেকে বিনিয়োগ আসা কঠিন হবে। এটা না এলে কিন্তু আমাদের রিজার্ভ বাড়বে না। তখন আমাদের টাকার মূল্যও যে বাড়াতে পারব, সেটাও মনে হয় না। আমাদের যারা নীতিনির্ধারক, এমনকি বাস্তবায়নকারী আমলারা—মানুষ যে একটা মতামত দেয়, সেটার কিন্তু কোনো কিছুই তাঁরা আমলে নিতে চান না। লোকজন যখন বলছে, বিশেষজ্ঞরা যখন কোনো কিছু বলছে, সেটা শোনা দরকার। এটা কিন্তু অন্য কোনো দেশে হয় না। বিভিন্ন দেশে থিংকট্যাংক আছে। মুক্তবুদ্ধির চিন্তা যারা করে, তাদের কথা শোনা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা খুব কমই। যারা ক্ষমতার বলয়ে থাকে, যাদের আর্থিক ক্ষমতা আছে, তাদের ধারণা তারাই সব জানে। তারাই সব করতে পারে। জনগণকে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না, বিশেষ করে নীতিনির্ধারক ও আমলাদের মধ্যে। এটাই আমাদের একটা বড় সমস্যা। এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমরা স্থায়ী টেকসই উন্নয়নের দিকে যেতে পারব না।


               

লেখক : ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

 সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক; অধ্যাপক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।