শরতের কাশফুল দোল খায় বাতাসে, প্রেম জাগে হৃদয়ে


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০০ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৩


শরতের কাশফুল দোল খায় বাতাসে, প্রেম জাগে হৃদয়ে
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ষড়-ঋতুর দেশ । প্রতি দুই মাস পর পর এক একটি ঋতু, আমাদের প্রকৃতি থেকে বিদায় নেয়। এক ঋতু বিদায় নিলেও আগত ঋতু নতুন রুপে আমাদের প্রকৃতিকে নতুনভাবে সাজায় , নতুন সাজে।


বর্ষার কর্দমাক্ত দিন শেষে ভাদ্র-আশ্বিন এ দুই মাস  শরৎকাল। এ ঋতুর রয়েছে অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য। এ সময় মেঘমুক্ত আকাশে শিমুল তুলোর মতো ভেসে চলে সাদা মেঘের খেয়া। চারদিকে সাদা কাশফুলের ওপর ঢেউ খেলে যায় উদাসী হাওয়া। নদীর তীরে ফুলফোটা কাশবন দেখতে কতই না সুন্দর!!


কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এর কারণ হল নদীর তীরে পলিমাটির আস্তর থাকে এবং এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে।

পরিচর্চা ছাড়া অবলীলায় বেড়ে ওঠা এর সৌন্দর্যের কোনো ঘাটতি থাকে না। শরৎ ঋতুতে সাদা ধবধবে কাশফুল সত্যি মনোমুগ্ধকর। এর সৌন্দর্য যেকোনো মানুষের মনকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কাশফুল দেখতে পাওয়া যায়। শরতের মেঘমুক্ত আকাশের নিচে কাশফুল মনে অনন্য এক প্রশান্তি জাগিয়ে তুলে।

শরৎ নিয়ে কাব্য, কবিতা, গান, গল্পের কোনো কমতি নেই। সাহিত্যে কাশফুলের কথা এসেছে নানাভাবে। রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন গ্রন্থ ‘কুশজাতক’ কাহিনী অবলম্বন করে ‘শাপমোচন’ নৃত্যনাট্য রচনা করেছেন। সাহিত্য মনে, কবির ভাষায় বলতে ইচ্ছে হয় ধূসর সাদা কাশফুলে ছেয়ে গেছে বালুচর

নীলাকাশে উড়ছে সাদা মেঘ স্তরে স্তর।


কাশবন কমে যাওয়ার পেছনে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব দাবী পরিবেশ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা কোনো কিছুর পরিবর্তন প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তনই নির্দেশ করে। তবে জমি দখল আর নদীর তীরে চাষাবাদ বেড়ে যাওয়ায় কাশবনের পরিধি কমে এসেছে। জ্বালানি বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য নয়, অন্তত মানুষের সৌন্দর্য প্রেমিদের মনের চাহিদার জন্য হলেও নদী তীরে থাকুক আগের মত দিগন্ত-বিস্তৃত কাশবন।


কাশফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন বিকেলে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় জমায় নদীর ধারে ও চরাঞ্চলে জেগে ওঠা কাশ ফুল বনে। মেঘমুক্ত নীল সাদা আকাশের নিচে হাস উজ্জ্বল কাশফুল,  যখন বাতাস দোল খায়, সেই দৃশ্য কত যে সুন্দর , তা বলে শেষ করা যায় না। এমন সুন্দর পরিবেশের প্রতিটি কাশফুল কিশোর কিশোরীর প্রেমের শিহরণ দিয়ে যায়। তাইতো এই সময় কাশফুল হাতের ছবি প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা যায়।


জেবি/এসবি