ফুলের চারা বিক্রি করেই মাসে লাখ টাকা আয় করেন শরীয়তপুরের ইমরান


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৩৫ অপরাহ্ন, ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৩


ফুলের চারা বিক্রি করেই মাসে লাখ টাকা আয় করেন শরীয়তপুরের ইমরান
ছবি: জনবাণী

শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শাবনুর মার্কেট এলাকায় ইমরানের ছাদবাগানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় এক হাজার পাঁচ শত প্রকার ফুলের চারা রয়েছে। এসব চারার অধিকাংশ ইমরান আহাম্মেদ ভারত থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানান।


শরীয়তপুর জেলার মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ প্রবাসী আবুল বাসার কাজী ও শিউলি আক্তার দম্পতির একমাত্র ছেলে। 


ইমরান আহাম্মেদ বলেন, সবার মতো ছোটবেলা থেকেই ফুল আমার প্রিয়। যখন আমি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করি তখন প্রথমে একটি বেলী ফুলের চারা রোপণ করি। ওই চারা বড় হয়ে যখন ফুল ফুটেছিল তখন অনেক আনন্দ পেয়েছিলাম। বেলী ফুল ফোটার আনন্দ আমাকে আরও বেশি উৎসাহিত করে ফুলের চারা রোপণ করতে। এরপর ফুলের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির যেখানে জায়গা পেতাম সেখানেই গাছের চারা রোপন করতাম। 


তরুন এই উদ্যোক্তা আরও বলেন, ২০২১ সালের ৮ জুন  ‘আল ইমরান নার্সারি শরীয়তপুর’ নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে চারা বিক্রি করা শুরু করলাম। চারা বিক্রি করে এখন আমি মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় করি। এছাড়া আমি গ্রাফটিং করে চারা উৎপাদন করি। গ্রাফটিং থেকে চারা উৎপাদন হতে সময় লাগে তিন থেকে পাঁচ মাস। আমি লক্ষ্য করলাম বাংলাদেশে জবা ফুলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, ব্যাঙ্গালেরু, ট্রপিক্যালসহ অন্যান্য জবা ফুল। কিন্তু দেশে তখন এসব ফুলের চারা পাওয়া যেত না। দেশে জবার চাহিদা বেশি থাকায় আমি আমার পরিচিত এক ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা থেকে জবার বিদেশি এসব প্রজাতির খয়েরি, হলুদ, লাল, কালো, গোলাপীসহ প্রায় তিন শতাধিক রঙের জবার চারা সংগ্রহ করি। তিনি দাবি করেন বিড়ল প্রজাতির কালো জবা তার কাছে ছাড়া বাংলাদেশে আর কারও কাছে নেই। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে নিজে পরিচর্যা করে চারা উৎপাদন করে দেশের ৬৪ জেলায় এসব চারা বিক্রি করেছি দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়।


ইমরান আহমেদ এর খালা সেতারা বেগম বলেন, উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরা যেখানে মোবাইল ফোনে আসক্ত সেখানে আমার বোনের ছেলে গাছ নিয়ে কাজ করছে এবং অর্থ আয় করছে। তাই আমরা সবাই তাকে নিয়ে গর্বিত। অন্যান্য অভিভাবকদের কে বলবো তারাও যেন তাদের সন্তানকে মোবাইল ফোনের আসক্ত থেকে বিরত রাখতে এই ধরনের কাজে উদ্বুদ্ধ করে। 



শরীয়তপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার অলি হালদার বলেন,  বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আবাদি জমির পরিমানও হ্রাস পাচ্ছে। তাই আমরা সবাইকে ছাদবাগান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। আমরা জানতে পেরেছি ইমরান আহমেদ নামে এক তরুন ছাদবাগান করে সেখান থেকে মাসে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা আয় করছে। আমরা তাকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেছি।


গুণে-মানে ভালো চারা দিয়ে ইতোমধ্যে সারা দেশের ফুলপ্রেমীদের আস্থা অর্জনকারী এই শিক্ষার্থীর উদ্যোগে গড়ে ওঠা নার্সারিতে বিদেশি ফুলের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, ব্যাঙ্গালেরু, ট্রপিক্যাল জবা ফুলের চারার মূল্য ১৭০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার ৬০০ টাকা। বাগান বিলাসের মূল্য ১৫০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা। এডেনিয়ামের মূল্য তিন শ থেকে পাঁচ শ টাকা। এছাড়া তার নার্সারির দেশীয় প্রজাতির ফুলের চারার মূল্য পঞ্চাশ থেকে তিন শ টাকা। আল ইমরান নার্সারি শরীয়তপুর’ থেকে অনলাইনে যোগাযোগ করে সারা দেশের মানুষ নিশ্চিতে কিনতে পারেন জবাসহ অন্যান্য ফুলের চারা।


জেবি/এসবি