বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে পালাতক আদালতের দুই পুলিশ


Janobani

আজাহারুল ইসলাম সুজন

প্রকাশ: ০৬:২০ অপরাহ্ন, ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০২৩


বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে পালাতক আদালতের দুই পুলিশ
ছবি: জনবাণী

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদীর স্বাক্ষর জাল করে পরোয়ানা ফেরত কাগজে তার জায়গায় নিজেরা স্বাক্ষর প্রদান করে আসছিলেন আদালতের মোটরযান শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই ফুয়াদ উদ্দিন ও জিআরও (কনেস্টেবল) আবু মুসা। বিষয়টি জানার পর তারা পালিয়েছেন আদালত থেকে। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে রাজধানীে কোতয়ালী থানায়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনার বরাবর লিখিতও দিয়েছেন আদালতের প্রসিকিউসন বিভাগ।


মামলার সুত্রে জানা যায়,লাইসেন্স না থাকায় গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো-২ ৫৫ ৮২২০ এর চালক ও ঢাকা মেট্রো- ল- ৩৪ ০৯১৮ এর চালককে জরিমানা করে ট্রাফিক পুলিশ। জরিমানার টাকা না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নন এফআইআর মামলা পৃথক দুটি মামলা আদালতে প্রেরণ করা হয়। এরপর আদালত দুই চালকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরবর্তীতে পরোয়ানা ফেরতের কাগজে উপপরিদর্শক ফুয়াদ উদ্দিন ও কনস্টেবল আবু মুসা বিচারকের স্বাক্ষর জাল করেন। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে আসামিরা পালিয়ে যায়। এরপর রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় তাদের সোমবা  বিরুদ্ধে সিএমএম আদালত-১০ এর বেন্স সহকারী ইমরান হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ফারহা দিবা ছন্দা মামলার এজহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।


এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিট পুলিশের প্রসিকিউসন বিভাগ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসাশন) মো. কামরুল আহসান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত খারাপ ও ঘৃণিত কাজ। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হেডকোয়ার্টারে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছি। বর্তমানে তারা পলাতক থাকায় তাকে আইনে সপর্দ করতে পারি নাই।


কোতয়ালী থানার অফির্সাস ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন,ঢাকার  মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ সাদীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করায় আদালতের মোটরযান শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই ফুয়াদ উদ্দিন ও জিআরও আবু মুসার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।মামলা করেছেন ঢাকার  মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ সাদীর আদালতের বেঞ্জ সহকারী ইমরান হোসেন।আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।তাদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


মামলার অভিযোগ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১০ নং আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইমরান হোসেন বলেন, আমার স্যার (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী) ১০ নং আদালতের পাশাপাশি মোটরযান সম্পর্কিত মামলা পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত। গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে মোটরযান শাখার আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এস আই মোঃ ফুয়াদ উদ্দিন নন এফআইআর দুটি মামলা বিচারকের নিকট উপস্থাপন করে। পরে মামলা দুটির আসামী না থাকায় বিচারক কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। পরবর্তীতে বিচারক জানতে পারেন অত্র মামলা দুটির জব্দকৃত আলামত মোটরযান শাখার ইনচার্জ এসআই মোঃ ফুয়াদ উদ্দিন ও মোটরজান শাখার জিআরও মোঃ আবু মুছা সহ তাদের অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে স্যারের (মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ সাদী) স্বাক্ষর জাল করে পরোয়ানা ফেরত কাগজে ম্যাজিষ্ট্রেট স্যারের স্বাক্ষরের জায়গায় নিজেরা স্বাক্ষর প্রদান করে আসামীদের দিয়ে দেয়।


এজাহারে তিনি আরো বলেন, মামলার নথিতে বিচারক কোন স্বাক্ষর নাই এবং কোন জরিমানা করেন নাই। বিচারক ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন মোটরযান শাখার ইনচার্জ এসআই মোঃ ফুয়াদ উদ্দিন ও জিআরও মোঃ আবু মুছা তাদের অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে দীর্ঘ দিন ধরে বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে একই ধরনের অপরাধ করে আসছেন।


আরএক্স/