বৃষ্টি হলেই সড়কে জলাবদ্ধতা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:২৫ অপরাহ্ন, ৪ঠা অক্টোবর ২০২৩


বৃষ্টি হলেই সড়কে জলাবদ্ধতা
সড়কে জলাবদ্ধতা। ছবি: জনবাণী

নাগরিকদের জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে স্বস্তি দিতে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। কিন্তু তাদের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। একটু ভারি বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তা, মার্কেট ও অলিগলি। স্থানীয়দের দাবি, অপরিকল্পিতভাবে নেয়া এ প্রকল্পে কেবল অর্থেরই অপচয় হয়েছে ।


সড়ক ও জনপদ বিভাগের তথ্যমতে, ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘি বাজারে জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন তারা। এর পরও মেলেনি জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি । প্রায় দুই যুগ পর রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়নের পরও পানি নিষ্কাশন না হওয়াকে অপরিকল্পিত উন্নয়ন বলে দায়ি করছে সচেতন মহল। 


ঘাটাইলের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকদিন ধরে ভারি ও হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে । এতে উপজেলার বিভিন্ন বেহাল কাঁচা সড়কের পাশাপাশি বাজারের প্রধান সড়কেও দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। একবার মাঝারি বৃষ্টিপাত হলে জলাবদ্ধতা দূর হতে সময় লাগে দুই-তিনদিন। ভারি বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা দূর হতে সপ্তাহখানেকেরও বেশি সময় লাগে। কয়েক বছর ধরে চলছে এ অবস্থা।


সাগরদিঘী বাজার ঘুরে দেখা যায়, মধুপুর-গারোবাজার সড়কে চৌরাস্তা হয়ে ওয়ালটনপ্লাজা প্রায় ২০০ মিটার, পুরাতন বাজার থেকে কাজী অফিস হয়ে মাছ বাজার পর্যন্ত ২৫০ মিটার ও সাহাপাড়া হয়ে কানন সিনেমা হল মোড় পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে বৃষ্টির পানি জমেছে এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে । খানাখন্দভরা সড়কে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব যেন দেখার কেউ নেই। 


ওই এলাকার বাসিন্দা সাগরদিঘী কলেজের অধ্যক্ষ মো. নাসির উদ্দীন বলেন, রাস্তাটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে জমে থাকা পানি সড়কের পাশে ড্রেন থাকলেও বের হতে পারছে না। পানি জমে থাকায় সড়কে বিটুমিনের আস্তরণ উঠে রাস্তার মধ্যে বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে । ড্রেন কোনো কাজে আসছে না। বৃষ্টি হলেই সড়কটি পানিতে তলিয়ে যায়।


সাগরদিঘী বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. এসকান্দর হক বলেন, ‘ বাজারের সড়ক উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে জলাবদ্ধতা দূর হচ্ছে না। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে উন্নয়নের নামে অর্থ অপচয় করা হয়েছে। ড্রেনগুলো রাস্তার চেয়ে উচু হয়ে গেছে।’


স্থানীয় হাসান মেডিক্যাল এন্ড ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী হাসান মিয়া বলেন, এই সড়কে বৃষ্টি হলেই হাটুপানি জমে যায়। দুর্ভোগে রোগী ও ঔষধ ক্রেতাদের চেম্বারে আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।


স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একটু বৃষ্টি হলেই বাজারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে পানি জমে থাকে । এতে বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। স্কুল- কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে । চৌরাস্তা সংলগ্ন দুইটা বস্ত্র মার্কেটের এক পাশ থেকে অপরপাশে পারাপারে ময়লা পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। ফলে কোন ক্রেতা যেতে চায় না। এতে দোকানিদের বেচা-কেনায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। চৌরাস্তায় মোড়ে সিএনসি স্টেশন থাকায় চলাচলে দুর্ভোগে পড়ে পথচারী ও এলাকাবাসী। কোন কোন সময় ঘন্টাব্যাপী যানজটে আটকে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি।


সাগরদিঘী বাজার বণিক বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ জানিয়ে আসছি । তবে বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেন থাকলেও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। রেকর্ড জমি থাকায় কেউ ড্রেনের পানি নামানোর জায়গা দিতে চায় না । তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে একটা বিহিত হতে পারে।


টাঙ্গাইল জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-প্রকৌশলী মো. সোলায়মান জানান  জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করছি। আশা করি পরবর্তীতে এরকম সমস্যা হবে না। ড্রেন পরিষ্কার করার জন্য লেভার পাঠানো হয়েছে ।


আরএক্স/