এতিম শিশু ধর্ষণ মামলায় ১৪ দিন পার হলেও আসামি গ্রেফতার হয়নি
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৩৬ অপরাহ্ন, ২০শে জুন ২০২৫

নিজ বাড়িতেই ধর্ষণের শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী। মেয়েটি এখন আর ঘর থেকে বের হয় না, ভয় পায়। অন্য শিশুদের সঙ্গেও খেলতে যায় না। মাদ্রাসায়ও যায় না বলে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন শিশুটির বাবা।
আরও পড়ুন: ঘাটাইলে বার বার কেন হচ্ছে ডাকাতি, তবে কি আইনশৃঙ্খলার অবনতি
ধর্ষণের ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামে যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন শিশুটির বাবা। মামলার ১৪ দিনেও আসামি গ্রেফতার হয়নি। উল্টো আসামির পরিবারের হুমকিতে আতঙ্কে দিন কাটছে বাদীর পরিবারের। ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের একটি গ্রামে।
জানা গেছে, গত ৩ জুন বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকায় ঘরেই ছিল ১১ বছরের শিশুটি। এই সুযোগে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় যুবক সাইফুল ইসলাম। শিশুটির ওড়না দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে। চিৎকার করলে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে। কিছুক্ষণ পর শিশুটির দাদি বাড়িতে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে সাইফুলকে দেখতে পান। তাকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত যুবক।
শিশুটির বাবা জানান, তার মেয়েকে ছোট রেখে স্ত্রী অন্যত্র চলে যায়। দাদির কাছেই বড় হচ্ছে মেয়েটি। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ঘটনার দিন তিনি অটোরিকশা চালাতে বাড়ির বাইরে ছিলেন। তার মাও বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে তার মেয়েটির সর্বনাশ করেছে এলাকার সাইফুল। ঘটনার পর থানায় মামলা করেছেন। ১৪ দিন পার হলেও আসামি গ্রেফতার হয়নি। প্রথম দুই-তিন দিন পুলিশ আসামি ধরতে আগ্রহ দেখালেও এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না।
বাদী বলেন, আসামির বাবা প্রবাসী। অনেক টাকার মালিক। মামলা করায় আসামির চাচা জয়নাল আবেদিন, আব্দুল কদ্দুস ও মফিজ উদ্দিন তাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় দেখা হলে আসামির চাচারা বলেন ‘মামলা করলি পুলিশ দিয়া তো ধরাবার পাইলি না। দিন এইডা না, দিন সামনে আবো। আমরা ধান (বিএনপি) করি। টেহা (টাকা) দিয়া জজ কিনা ফালামু। আমাগো পোলারে জামিন করামু।
তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে আপস না করলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বাদীর। তবে হুমকি দেওয়ার কথাটি অস্বীকার করেন আসামি সাইফুল ইসলামের চাচা আব্দুল কদ্দুস।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঘাটাইল সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আব্দুল মতিন। আসামির পরিবার থেকে যে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তা তদন্ত কর্মকর্তাকে কয়েক দফা ফোন করে জানানো হয়েছে বলে দাবি বাদীর।
আরও পড়ুন: ঘাটাইলে তেলের লড়ি ও মাহেন্দার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৩
বাদীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, বাদীকে হুমকির বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনার পর বিষয়টি আপসে মীমাংসার জন্য স্থানীয়রা চেষ্টা করেন। পরে মামলা হলে আসামি ধরতে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ জানান, স্থানীয়ভাবে আপস না করতে পেরে ঘটনার তিন দিন পর শিশুটির বাবা থানায় এসে মামলা করেন। মামলার পর আসামি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আসামি ধরতে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।
এসডি/