মহানায়কের সাতই মার্চের ভাষণ আমাদের মুক্তির সনদ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


মহানায়কের সাতই মার্চের ভাষণ আমাদের মুক্তির সনদ

টানা ন’মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ২৫ শে মার্চ কালো রাতে নিরীহ বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই যুদ্ধের কারণে শ্মশানে পরিণত হয় শস্য-শ্যামলা সোনার বাংলা। এরপরও বাঙালির মনে কোনো কষ্ট ছিল না! কারণ তারা স্বাধীন একটি দেশ পেয়েছে। যে স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, লক্ষ লক্ষ মা-বোনের ওপর জুলুম-অত্যাচার করা হয়েছে। এই স্বাধীনতা অর্জন ও নিপীড়িত মানুষের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে বারবার জেলে যেতে হয়েছে বাঙালির মহান নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এসেছিল এক ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের পটভূমিতে। আন্দোলনের একপর্যায়ে মার্চের প্রথম দিন থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল ঢাকার রাজপথ।এর মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উড়ানো হয়েছে। পাঠ করা হয়েছে স্বাধীনতার ইশতেহার এবং নির্বাচন করা হয়েছে জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার প্রশ্নে বা আন্দোলনের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত কবে দেবেন, সেজন্যই ছিল মানুষের অধীর অপেক্ষা।বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির জীবনেও রয়েছে এর অপরিসীম গুরুত্ব। তবে এবারের স্বাধীনতার মাসটি অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রমী, তাৎপর্যে সুগভীর ও দ্যোতনাময়। কেননা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবার সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রম করে পা দিতে যাচ্ছে একান্ন বছরে। ২০২১ সালে সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এর পাশাপাশি গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে এবং একই সঙ্গে ইউনেস্কোর সহযোগিতায় বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ, যার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে ২০২২-এর ১৭ মার্চ পর্যন্ত। ১৯৭১-এর ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সেই ভাষণেই বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন-এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই বজ্রনিনাদ ঘোষণার পরই এ দেশের মানুষের বুঝতে বাকি থাকে না যে, স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে আর দেরি নেই। সাত মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেই বঙ্গবন্ধু যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেন। শত্রুর মোকাবেলা করার নির্দেশও ঘোষিত হয় তাঁর বজ্রকণ্ঠে। এই ভাষণ আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্গত। 

সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে গর্জে ওঠে সমগ্র জাতি। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম। অসীম ত্যাগ, অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রম এবং ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান বাঙালীকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র দিয়েছে। প্রতিরোধ যুদ্ধের মধ্য দিয়েই বাঙালী তার সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামে বিজয়ী হয়। চির অম্লান সেইসব দিন। আমরা আজকের দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই বীর শহীদদের, যাঁরা স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁদের মূল্যবান জীবন দান করে প্রতিরোধ সংগ্রামে প্রেরণা যুগিয়েছিলেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছিলেন স্বাদীনতার রক্তিম সূর্য-লাল-সবুজ পতাকা। বিশ্বের প্রতিটি দেশ ও জাতির জীবনে স্বাধীনতার দিনটি চির অম্লান ও সুগভীর তাৎপর্যপূর্ণ। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম আর নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হবার পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ছাড়াও তৎকালীন সরকারের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করা। নানা বাধা-বিপত্তির পরও দেখা যায় স্বাধীন হবার মাত্র চার বছরেরও কম সময়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হয়েছিল আর শতাধিক দেশের স্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছিল।১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর ভুটান ও ভারতের স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের সূচনা হয়েছিল।এবং ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্য পদ প্রাপ্তি ছিল গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তৎকালীন ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করতে ভিন্ন এক বাস্তবতার মুখোমুখী হতে হয় বাংলাদেশকে। এর অন্যতম একটি কারণ ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থায় বাংলাদেশই প্রথম দেশ যেটি কিনা উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়া কোনো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। যে কারণে, বাংলাদেশের সরকারকে স্বাধীন দেশ হিসেবে নিজেকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হয়।

সত্যি বলতে কি, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী একই সূত্রে গাঁথা এক অমলিন চিরস্মরণীয় উপাখ্যান, যা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতিকে মাথা উঁচু করে স্থাপন করেছে বিশ্ব মানচিত্রে, স্বমহিমায়, লাল-সবুজ পতাকায়। ইতোপূর্বে হাইকোর্ট ঐতিহাসিক ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে গেজেট আকারে ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে সরকারকে, যা মার্চের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়েছে বহুলাংশে। বাংলাদেশ ও বাঙালীর স্বাধীনতার মাস মার্চ। আমাদের কাছে এই রক্তঝরা মার্চ মাসের রয়েছে এক অন্যরকম আবেদন। এটি অগ্নিঝরা ইতিহাসের মাস, বিষাদ ও বেদনার মাস। এই মাসের ২৫ তারিখ থেকে লেখা শুরু হয়েছিল এক অমর মহাকাব্য- যার নাম বাংলাদেশ। বাঙালীর জীবনে ভাষা আন্দোলনের স্মারক মাস ফেব্রুয়ারির পর মার্চের গুরুত্ব সমধিক। স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত লড়াই শুরু হয় এই মার্চেই। ৭১-এর গোটা মার্চ মাসই ছিল অত্যন্ত ঘটনাবহুল। ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা আন্দোলনের পথে এগোচ্ছিল তা সুস্পষ্ট হয়ে যায় এই মার্চেই।১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। এ দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। ইতিহাসখ্যাত ৭ মার্চের ভাষণ। ২ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সারা বাংলায় পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ চলছিল। তৎকালীন পাকিস্তানি জনগণই শুধু নয়, বহির্বিশ্বের অনেকেও এক অনন্য উদ্দীপনা নিয়ে তাকিয়ে ছিল, বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে কী বলেন। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্য এ ছিল অন্তিম মুহূর্ত। অন্যদিকে স্বাধীনতার চেতনায় প্রদীপ্ত বাঙালি জাতির জন্য এ ভাষণ ছিল পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন–শোষণের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতীয় মুক্তি বা কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে চূড়ান্ত সংগ্রামের সূচনা।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল একজন দক্ষ কৌশলীর সুনিপুণ বক্তব্য। বিশেষত ভাষণের শেষ পর্যায়ে তিনি ‘স্বাধীনতার’ কথা এমনভাবে উচ্চারণ করেন, যাতে ঘোষণার কিছু বাকিও থাকল না, আবার তাঁর বিরুদ্ধে একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণার অভিযোগ উত্থাপন করাও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর জন্য সম্ভব ছিল না। বস্তুত বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতারই ঘোষণা। তবে সরাসরি তা ঘোষণা না করে তিনি কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করেন। তাঁর অবস্থান ছিল: মেজরিটি বা সংখ্যাগরিষ্ঠ (বাঙালি) মাইনরিটি বা সংখ্যালঘিষ্ঠ (পশ্চিম পাকিস্তানি) থেকে বিচ্ছিন্ন হবে কেন? বরং মাইনরিটিই ‘সিসিড’ বা বিচ্ছিন্ন হোক।বাস্তবে ২৫ মার্চ ১৯৭১-এ এমনটিই ঘটে। ৯ মাসব্যাপী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর এ কৌশল বা অবস্থান বাংলাদেশ সংগ্রামের পক্ষে ইতিবাচক ফল বয়ে আনে।বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে একটি। সম্প্রতি ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ড উই শ্যাল ফাইট অন দ্য বিচেস: দ্য স্পিচেস দ্যাট ইনস্পয়ার্ড হিস্টরি শিরোনামে মানবজাতির ইতিহাসের ২৫০০ বছরের ৪১ জন জাতীয় বীরের ভাষণ নিয়ে একটি বই সংকলন করেছেন। তাতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। লিংকনের সে ভাষণও ছিল সংক্ষিপ্ত। মাত্র তিন মিনিটের। প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উভয়ই ইতিহাসের মূল্যবান দলিল। লিংকনের কণ্ঠে ধ্বনিত হলো গণতন্ত্র সম্বন্ধে তাঁর বিখ্যাত উক্তি, দিস গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল অ্যান্ড ফর দ্য পিপল উইল নেভার পেরিশ ফ্রম দ্য আর্থ। বঙ্গবন্ধু বললেন, সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যান্য শ্রেষ্ঠ ভাষণ থেকে উজ্জ্বল ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এ ভাষণ নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে রাতারাতি সশস্ত্র করে তোলে। একটি ভাষণকে অবলম্বন করে স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ বাঙালি জীবন উৎসর্গ ও কয়েক লাখ মা-বোন সম্ভ্রম বিসর্জন দেন। 

৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালে এ ভাষণ (বজ্রকণ্ঠ) রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত করে বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেসকো এ ভাষণকে ৩০ অক্টোবর ২০১৭ বিশ্ব-ঐতিহ্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে আমেরিকার কালো মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা, বিশ্বনন্দিত মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো তাঁর জনগণকে একটি স্বপ্নের কথা বলতে নয়, নির্দেশের অপেক্ষারত উত্তাল বাঙালি জনসমুদ্রকে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান জানাতে।মাত্র ১৯ মিনিটের এক ভাষণ। বঙ্গবন্ধু তাঁর সংক্ষিপ্ত অথচ তেজস্বী ভাষণে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালিদের বঞ্চনার ইতিহাসের ব্যাখ্যা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে বাঙালিদের দ্বন্দ্বের স্বরূপ উপস্থাপন, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি বিশ্লেষণ ও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানে তাঁর সর্বাত্মক চেষ্টা, সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ, প্রতিরোধসংগ্রাম শেষাবধি মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেওয়ার ইঙ্গিত, শত্রুর মোকাবিলায় গেরিলাযুদ্ধের কৌশল অবলম্বন, যেকোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পরামর্শদান ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরার পর ঘোষণা করেন: ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।তারও আগে মাতৃভাষার দাবিতে ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারির সংগ্রাম-আন্দোলন, ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে রায়, ১৯৫৬-তে এসে সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বীকৃতি আদায়, ১৯৬২-এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ছয় দফার মধ্য দিয়ে বাঙালির মুক্তির সনদ ঘোষণা।

এবং ১৯৬৯-এর ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের বিদায় এবং ১৯৭০-এ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারাবাহিকতায়ই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসেছে আমাদের স্বপ্নের স্বাধীনতা। এরপর শক্ত হাতে হাল ধরেছেন তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ইতিমধ্যে ক্ষুধাকে জয় করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রায়, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নীত মধ্যম আয়ের দেশে। সব সূচকে আমরা অনেক আগেই পাকিস্তানকে ও বেশ অনেক সূচকে ভারতকেও অতিক্রম করেছি।যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আজকের এই উত্তরণ-যেখানে রয়েছে এক বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার ইতিহাস সরকারের রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের এটি একটি বড় অর্জন। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার