জ্বরে আক্রান্ত শাকিব খান, সাক্ষ্য দিতে আসেননি আদালতে
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:১৫ অপরাহ্ন, ৫ই অক্টোবর ২০২৩
ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার চিত্রনায়ক শাকিব খানকে হত্যার হুমকি ও চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে দ্বিতীয় দিনও আদালত উপস্থিত হতে পারেন নি। জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় শাকিব খান আদালতে উপস্থিত হতে না পারায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণেন জন্য দিন ধার্য করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা আদালতে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন জ্বরে আক্রান্ত থাকায় শাকিব খান আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি বলে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী খায়রুল হাসান। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এর আগে ৯ জুলাই ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা আদালতে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল।এদিন পেশাগত কারণে ব্যস্ততা থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি বলে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী খায়রুল হাসান।আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
তারও আগে ৫ জুলাই ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা এ অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় রহমত উল্লাহ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৯ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত।
গত ২৩ মার্চ দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে শাকিব খান বাদী হয়ে রহমত উল্লাহর নামে এ মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চার বছর আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে শিবা আলী খানকে মনোনীত করা হয়। এ ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট অস্ট্রেলিয়া যান শাকিব খান। শিবা আলী খান ভিসা জটিলতার জন্য শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি। তার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেনেসা সাবরিনের সঙ্গে শাকিবকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন রহমত উল্লাহ। তবে শাকিব তার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নাকচ করে দেন।
আরও পড়ুন: ফারদিন হত্যা মামলার অধিকতর প্রতিবেদন ৩০ অক্টোবর
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, শুটিং শেষে শাকিবকে রিফ্রেশমেন্টের জন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রেনেসা সাবরিনসহ আরও ২/৩ জন অপরিচিত লোক দেখতে পান শাকিব। মামলার আসামি রহমত উল্লাহসহ অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাবে খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার পানীয় পান করেন। এক পর্যায়ে শাকিব অসুস্থবোধ করেন। হোটেলে ফেরত আসার সময় রহমত উল্লাহ এবং অন্যদের খোঁজ করেন শাকিব। তবে তাদের না পেয়ে রেনেসা সাবরিনের কাছে বিদায় নিয়ে গভীর রাতে হোটেলে ফিরতে চান শাকিব। তখন রেনেসা সাবরিন বলেন, ‘আপনি যেহেতু অসুস্থবোধ করছেন, তাহলে আমি আপনাকে হোটেলরুমে পৌঁছে দিয়ে আসি।’ শাকিব অনেকটা নিরুপায় হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং হোটেলে ফিরতে ক্লাব থেকে বের হন। হোটেলে ফেরার সময় বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে অজ্ঞান হয়ে যান শাকিব।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরদিন সকালে আসামি রহমত উল্লাহ শাকিবকে ফোনে জানান যে, ‘তুমি রাতে ওই নারীর সঙ্গে কী করেছো সবকিছুর ভিডিও ক্লিপ আমার হাতে। তুমি যদি আমাকে এক লাখ ডলার চাঁদা না দাও তাহলে সব ভিডিও ক্লিপ এবং রেনেসা সাবরিনকে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার নামে অভিযোগ করবো। তাহলে তুমি বাংলাদেশে যেতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: হাথুরুসিংহেকে অব্যাহতি ও তামিমকে বিশ্বকাপে অন্তর্ভুক্ত করতে লিগ্যাল নোটিশ
এ রকম বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হলে এক পর্যায়ে শাকিব ভয় পেয়ে যান। শাকিব ভয়ে এবং তার ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক সমস্যার কথা চিন্তা করে আসামি রহমত উল্লাহকে ৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রদান করেন। পরে আসামি রহমত উল্লাহ তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোট ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এরপর আর চাঁদা দিতে না পারায় শাকিবকে জানানো হয় যে, তোমার নামে অস্ট্রেলিয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে। চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দিলে আসামি রহমত উল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় যেমন- ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং শাকিবের পরিবারের সদস্যদের নিকট মিথ্যাচার ও কুৎসা রটাতে থাকেন। এরপর গত ১৬ মার্চ রহমত উল্লাহ শাকিব খানের কাছে এক লাখ ডলার চাঁদা দাবি করেন ও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
এদিকে গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালতে রহমত উল্লাহ বাদী হয়ে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে একটি মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
জেবি/এসবি