কক্সবাজারের বিদ্যুৎ ও মোবাইল সচলকে প্রধান্য দিচ্ছে প্রশাসন


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৩ অপরাহ্ন, ২৫শে অক্টোবর ২০২৩


কক্সবাজারের বিদ্যুৎ ও মোবাইল সচলকে প্রধান্য দিচ্ছে প্রশাসন
ছবি: জনবাণী

ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে এখন অচল হয়ে পড়েছে কক্সবাজার। নেই বিদ্যুৎ, নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে সড়ক-উপসড়কে গাছ উপড়ে বন্ধ যানবাহন চলাচল। 


জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, এতে ৩ জনের প্রাণহানিসহ অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলায় ভেঙে গেছে কমপক্ষে আড়াই হাজার ঘর। ক্ষয়-ক্ষতি প্রকৃত পরিমাণ নির্ধারণে জরুরী ভিত্তিতে বিশেষ বিশেষ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযুক্ত চালু এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সচলকে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন। 


বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের সবচেয়ে বড় আঘাত হয়েছে প্রকৃতির উপর। ঠিক কি পরিমাণ গাছ ভেঙে গেছে তার সঠিক পরিসংখ্যা বলা যাচ্ছে না। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অন্তত ১৫ টি স্থানে গাছ ভেঙে গিয়েছিল। তা দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়েছে। 


সকাল থেকে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। তবে অভ্যন্তরিণ সড়কের পরিস্থিতি এখনও পুরোদমে স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। সড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস এসব এলাকা কাজ করছেন। 


এ মূহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক মন্তব্য করে জেলা প্রশাসক জানান, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে বিদ্যুৎ সকল এলাকায় চালু করতে ২ দিনের বেশি সময় লাগবে। এ মূহুর্তে সন্ধ্যার পর কক্সবাজার শহর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়ায় বিশেষ বিশেষ এলাকায় যে বিদ্যুৎ চালু করা যায় তার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে আলাপ করে কাজ চলছে। তবে মহেশখালী উপজেলায় ১৫ টি ট্রান্সফরমার, শতাধিক গুটি ভেঙ্গে গেছে বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে ওই সব এলাকায় বিলম্ব হতে পারে। 


ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ জানতে কাজ চলছে। কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় জানতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়ে মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, মোবাইল অপারেটর সমুহের সাথে আলাপ করে দ্রুত নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক করতে বলা হয়েছে। এটা হলে ক্ষয়-ক্ষতির খবর দ্রুত পাওয়া যাবে। 


এ মূহুর্তে ৩ জনের মৃত্যু, আড়াই হাজার ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কক্সবাজারের মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক জানিয়েছেন, মহেশখালীতে একজনের মৃত্যু ও সাপের কামড়ে ৩ জন আহত রয়েছেন। 


ক্ষতির পরিমাণ বলা মুশকিল। দুই উপজেলায় ব্যাপকহারে ঘর ভেঙে গেছে। তবে জ্বলোচ্ছ্বাস হয়নি। কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের গণি বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে উপড়ে গেছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি। তার ছিঁড়ে রাস্তা-ঘাট ও বসতিতে পড়ে রয়েছে। 


এখন হোঁট করে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিলে প্রাণহানি ঘটতে পারে, তাই আপাতত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। আব্দুল কাদের গণি বলেন, “এখন ৩টি সাব স্টেশন চালু করা হয়েছে। 


এরপর প্রধান সড়কগুলোতে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রধান সড়কে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা সম্ভব হবে। আর পুরো কক্সবাজারে বিদ্যুৎ চালু হতে অন্তত দু’দিন সময় লাগবে।” কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ অতীশ চাকমা বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে হাজার হাজার গাছ উপড়ে গেছে। যার কারণে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। 


কিন্তু রাত ৩ টা পর্যন্ত কাজ করে এসব মহাসড়ক ও সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এখন শহরের সড়ক-উপসড়কগুলো থেকে উপড়ে পড়া গাছ কেটে, তা সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হচ্ছে। কিছুটা সময় লাগবে, কারণ অনেক বেশি গাছ উপড়ে সড়কে পড়েছে। চেষ্টা করছি, দ্রুত সরিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার।


আরএক্স/