ঠেগামুখ স্থলবন্দর নির্মিত হলে বাংলাদেশ-ভারত পাবে অর্থনৈতিক নতুন ক্ষেত্র


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:০০ অপরাহ্ন, ২৯শে অক্টোবর ২০২৩


ঠেগামুখ স্থলবন্দর নির্মিত হলে বাংলাদেশ-ভারত পাবে অর্থনৈতিক নতুন ক্ষেত্র
ছবি: জনবাণী

নুরুল আলম: রাঙ্গামাটি ঠেগামুখ বাংলাদেশ-ভারত স্থলবন্দর নির্মানের প্রস্তাব দেওয়ার দুইপক্ষের প্রায় ১০বছর পরও বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু সীমান্ত বর্তী সড়কগুলোর কাজ প্রায় শেষের পথে। ঠেগামুখ, রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভারত সীমান্তঘেঁষা একটি দুর্গম জনপদ। এলাকাটিকে দু’ভাগে ভাগ করেছে কাপ্তাই হ্রদের একটি শাখা ঠেগা খাল। ঠেগা খালের পশ্চিমে বাংলাদেশ আর পূর্ব পাশে ভারতের মিজোরাম প্রদেশ। দু’দেশের সাথে চমৎকার বন্ধুত্ব থাকায় হ্রদের সুবিধা দু’দেশেই ভোগ করছে। 


বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের স্থানীয় অধিবাসীদের যাতায়াতের একমাত্র পথ এ হ্রদটি। আর এ সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াতে ওই এলাকায় একটি স্থলবন্দর নির্মাণের সিন্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। এই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০১৩ সালের ৩০ জুন ঠেগামুখ স্থলবন্দর নির্মাণের ঘোষণা প্রদান করেন। তার আগে ২০১২ সালে ঠেগামুখ স্থলবন্দরের সম্ভাব্যতা সরেজমিনে দেখার জন্য এডিবি’র ৫ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি টিম ঠেগামুখ আসে।


এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এবং অত্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঠেগামুখ পরিদর্শন করে গেছেন বলে জানা গেছে। এখানে স্থলবন্দর নির্মাণের জন্য সরকার ২৪৭ একর জায়গা নির্ধারণ করেছে। তারও আগে ঠেগামুখ স্থলবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ২০০৫ সালে ভারতের মিজোরামের প্রদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে সেদেশের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলে ২০০৬ সালে এ সংক্রান্ত একটি সম্ভাব্যতা জরিপও চালানো হয়েছিলো ভারতের পক্ষ থেকে।


সরকারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঠেগামুখ স্থলবন্দর নির্মাণে জমি নির্বাচন করা হলেও আইন জটিলতায় অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ঠেগামুখ স্থলবন্দরের জন্য সম্ভাব্য স্থানটি পাহাড়ি ও দুর্গম। ভারতীয় অংশের সঙ্গে ঠেগামুখ স্থলবন্দরের সঙ্গে সড়কপথে কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌপথ। তাই বাংলাদেশ-ভারতকে ভাগ করা প্রবাহিত সরু ঠেগাখাল (কাপ্তাই হ্রদ) যেটি বান্দরবানের থানচি উপজেলা দিকে চলে গেছে সেই খালের উপর ১শ মিটারের একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে দু’দেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সহজেই স্থাপন সম্ভব।


ঠেগামুখ স্থলবন্দরটি নির্মিত হলে বাংলাদেশ-ভারত উভয়ের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। উভয় দেশের মানুষের অর্থনৈতিক চাকাও ঘুরে যাবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই স্থলবন্দরটি পুরোপুরি চালু করা গেলে আলু-বেগুনসহ যাবতীয় সবজি, সিরামিক ও মেলামাইন পণ্য, ইট, বালু, সিমেন্ট, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, শুঁটকি মাছ, তামাকজাত পণ্য, মানুষের মাথার চুল, প্লাস্টিকের পানির ট্যাংক, আলু, অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী, তৈরি পোশাক, ডিম, টিউবওয়েল, প্লাস্টিক সামগ্রী, পুরনো কাপড়, চিপস, শাড়ি, ওষুধ, গরম মসলা, কাঠ, চুনাপাথর, বাঁশ, মাছ, আচার, তেঁতুল, হলুদ, স্যান্ডেল, মাটির সানকি, গাছের ছাল, বাঁশ, কাঠ ও সুপারি ইত্যাদি মিজোরামে রফতানি করা যাবে। 


অন্যদিকে, ভারত থেকে মরিচ, আদা, পিয়াজ, হলুদ, কমলা ইত্যাদি আমদানি করতে পারবে বাংলাদেশ। এর ফলে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে গড়ে উঠবে সুসম্পর্ক। বর্তমানে এসব পণ্য অবৈধ পথে আমদানি-রফতানি হচ্ছে বলেও জানা গেছে।


আরএক্স/