নওগাঁর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সচল অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ হল অর্থ সংকটে
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:২২ অপরাহ্ন, ২রা নভেম্বর ২০২৩
নওগাঁর মান্দা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সচল অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ হওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দফায় দফায় পত্র দিয়েও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি অর্থ। এ কারণে বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া পড়েছে ফিলিং স্টেশনে। বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ জ্বালানি সহায়তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।
উপায়ান্ত না পাওয়া বুধবার (১ নভেম্বর) থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
রাজশাহীর নওহাটা এলাকায় অবস্থিত রুচিতা ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে বাঁকিতে জ্বালানি দেওয়া হচ্ছে মান্দা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটিতে। বর্তমানে বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া পড়েছে। বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও বকেয়ার টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারণে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটিতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্র জানাযায়, এ উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। ২৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে মহাসড়ক। রয়েছে কয়েকটি আঞ্চলিক সড়ক। এসব সড়কে অহরহ ঘটে ছোটবড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগিদের নিতে হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এ ছাড়া জরুরিসহ বিভিন্ন ঘটনার রোগিদেরও রামেক হাসপাতালে পাঠাতে হয়। এ কারণে প্রতিদিন কয়েক বার রাজশাহী যাতায়াত করে অ্যাম্বুলেন্সটি।
সূত্রটি আরও জানান, মান্দা উপজেলা সংলগ্ন নিয়ামতপুর ও মহাদেবপুর উপজেলার একাংশের বাসিন্দারা গুরুতর অসুস্থ রোগিদের এ হাসপাতালের মাধ্যমে রাজশাহীতে নিয়ে থাকেন। এসব কারণে মান্দা হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবহার নওগাঁর অন্যান্য উপজেলার চেয়ে অনেক বেশি।
কিন্তু জ্বালানির জন্য জেলার ছোট উপজেলাগুলোর সঙ্গে একইহারে বরাদ্দ পাওয়া যায়। যা এ উপজেলার জন্য অপ্রতুল।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগি আসলাম হোসেন বলেন, অর্থের অভাবে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন সংবাদ শুনে হতবাক হয়েছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে জরুরি রোগি পরিবহনে মাইক্রোবাস কিংবা বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের দ্বারস্থ হতে হবে। গুনতে হবে বাড়তি অর্থ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা সিদ্দিকা রুমা বলেন, ‘অর্থ সংকটে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যাবে না এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে জরুরি রোগি পরিবহনে চরম বেকাদায় পড়তে হবে স্বজনদের।
সৃষ্টি হবে জনদুর্ভোগের। জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি সমাধানের জোর দাবি করছি।’ রুচিতা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার পঞ্চম রায় বলেন, মান্দা হাসপাতালের কাছে বর্তমানে ১০ লাখ টাকার ওপরে পাওনা রয়েছে। তাগাদা দেওয়ার পরও তা পাওয়া যাচ্ছে না।
তাই জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বিজয় কুমার রায় বলেন, জ্বালানি বাবদ বছরে দুইবার যে টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায় তা অপ্রতুল। এ কারণে বাঁকিতে জ্বালানি কিনে অ্যাম্বুলেন্সটি সচল রাখা হয়। কিন্তু বাঁকির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। অধিদপ্তরে বারবার পত্র দেওয়া হলেও বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, অ্যাম্বুলেন্স থেকে আয়ের টাকা ১০দিন পর পর সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এ কারণে আয়ের টাকা দিয়ে জ্বালানির টাকা সমন্বয় করা যায় না। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন ও স্থানীয় প্রশাসনকে মুঠোফোনে অবহিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আঞ্জুমান খানম এর মোটফোনে একাধিক বার ফোন দিয়ে রিচিব না করায় তাই তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
আরএক্স/