দীর্ঘদিন চা পান না করলে শরীরে কী পরিবর্তন ঘটে?


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৪০ অপরাহ্ন, ১০ই নভেম্বর ২০২৩


দীর্ঘদিন চা পান না করলে শরীরে কী পরিবর্তন ঘটে?
ছবিঃ সংগৃহীত

সারা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয় হলো চা। স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী চা, তবে কী ধরনের চা পান করছেন তার উপরই কিন্তু নির্ভর করে সেটি পানে উপকার হচ্ছে নাকি অপকার।


এদেশের বেশিরভাগ মানুষই চিনি মিশ্রিত দুধ চা বা রং চায়ের প্রতি বেশি আসক্ত। তবে দুধ বা চিনি মিশ্রিত চা কখনোই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়।


যদিও দিনে একবার পছন্দের এক কাপ চায়ে চুমুক দিলে তেমন ক্ষতি নেই, তবে একাধিকবার সেবনে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য জটিলতার কারণ হতে পারে।


এমনকি আপনি যদি একমাসের জন্য চা পান থেকে বিরত থাকেন তবে শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হলো, ‘এক মাসের জন্য চা পান ছাড়লে শরীরে স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন ঘটে। যেমন- ক্যাফেইন কম খাওয়ার কারণে ভালো ঘুম হয় এমনকি কমে উদ্বেগ হয়।’


কেননা বেশি চা পান করলে প্রস্রাব বেশি হয়, যা ডিহাইড্রেশনের কারণও হতে পারে। চা পান করা বাদ দিলে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থাকে ও পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমে যায়।


ভারতের পুনের রুবি হল ক্লিনিকের পুষ্টিবিদ ড. কমল পালিয়ার মতে, ‘চা পান করা কমালে শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যাল কমে,ফলে সেলুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। এমনকি এই অভ্যাস হজমজনিত রোগ ও নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারও প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।


ডায়েট থেকে চা বাদ দেওয়ার কিছু সমস্যাও আছে উল্লেখ করে কমল পালিয়া বলেন, ‘কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে চা পান করা মানসিক প্রশান্তির কারণ হতে পারে। তাই এটি ছেড়ে দিলে মানসিক পরিবর্তন হতে পারে।’


এ বিষয়ে সহমত ভারতের আইথ্রিভ প্রতিষ্ঠানের সিইও ও পুষ্টিবিদ মুগদা প্রধান। তার মতে, ‘আপনি যদি প্রতিনিয়ত চা পানের অভ্যাস ত্যাগ করেন তবে হঠাৎ ক্যাফেইন ছাড়ার কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে।


যেমন- ক্লান্তি, মস্তিষ্কের কুয়াশা, মনোযোগের অভাব, তন্দ্রা ও মাথাব্যথা। তবে এসব লক্ষণ অল্প কয়েকদিনের জন্য থাকতে পারে,পুনরায় ঠিক হয়ে যায়।’


আপনি যদি অতিরিক্ত চা পানের অভ্যাস পরিবর্তন করতে চান তাহলে এর পরিবর্তে ভেষজ চা ও ফলের রস পানের অভ্যাস করতে পারেন। এতে চা পানের নেশাও কাটবে আবার শরীরেও বাড়বে পুষ্টি।


পুষ্টিবিদদের মতে, ‘ক্যামোমাইল বা পেপারমিন্টের মতো ভেষজ চা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এমনকি ফলের রস শরীর ও মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে থাকে। চাইলে লেবু বা মধু মিশ্রিত হালকা গরম পানিতে চুমুক দিতে পারেন। এতে শরীর সতেজ থাকবে।’


যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা আছে তাদের যে কোনো ধরণের চা পানে সতর্ক হওয়া উচিত। কেননা চায়ের ট্যানিন আয়রন শোষণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।


এছাড়াও উদ্বেগজনিত ব্যাধি বা হার্টের অ্যারিথমিয়াসের মতো কিছু নির্দিষ্ট চিকিৎসা শর্তযুক্ত ব্যক্তিদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চা পান করা বা চা পান হতে বিরত থাকা।