ভোলার নদীগুলোতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে পাঙ্গাস ও পোয়া


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, ১৩ই নভেম্বর ২০২৩


ভোলার নদীগুলোতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে পাঙ্গাস ও পোয়া
পাঙ্গাস ও পোয়া। ছবি: জনবাণী

ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী গুলোতে বর্তমান সময়ে জেলেদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছে এবং তাদের জালে একের পর এক  ধরা পড়ছে ইলিশের বড় বড় পাঙ্গাস, পোয়া। তবে তা নিয়ে জেলেদের ভেতরে একেবারে হতাশা না থাকলেও মোটামুটি যেন খুশি আছেন তারা। 


একেবারে না পাওয়ার হতাশার চেয়ে অনেকটাই খুশির আমেজ দেখা যাচ্ছে জেলেদের ভেতর। তাদের জানান মাঝি মোল্লাসহ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে একেবারে ফিরে আসলে আমাদের তেল খরচ উঠবে কি দিয়? আর আমরা সংসার চালাবো কি দিয়ে? তাই ইলিশ না পেলেও আমরা মোটামুটি খুশি আছি। 


কোনরকমে খেয়ে আমাদের দিন চলছে তো। ইলিশতো আর আমাদের হাতে না ইলিশ হলো বিধাতার হাতে। সম্ভবত উনি আমাদের জন্য এখন রাখে নাই হয়তো কয়েকদিন পর আমাদেরকে দিবে ইনশাআল্লাহ। তবে জেলেদের এই মাছ পাওয়া নিয়ে ভোলার নদী ও মাছঘাটগুলোতে কিছুটা হলেও  ফিরে এসেছে সেই চিরচেনা হাঁকডাক। ২ নভেম্বর মাছ ধরা নিয়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ঘাটগুলোতে এখন এমন চিত্র।


 সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে ভোলাখালের মাথায় একটি মাছঘাট যার নাম ভোলাখালের মাথা মাছঘাট। সরেজমিনে গিয়ে সেখানে দেখা যায়, মাছঘাটে ট্রলার ভিড়তেই মৎস্য ভিক্ষুকেরা ঘিরে ধরেন মাছ নিয়ে আসার জেলেদের । কেউ কেউ আবার জেলেদের কাছ থেকে চেয়েও মাছ নেন। এসব মাছ বিক্রি করে তাঁরা একেকজন প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা আয় করেন। এ দিয়েই চলে তাঁদের সংসার।


মাছ ঘাটের দৃশ্য চোখে পড়ার মতো, দুলাল মাঝির ট্রলারের মাঝি মাল্লারা বরফের ঝাঁপি থেকে ভাগে ভাগে নানা রকম মাছ তুলে প্লাস্টিকের ঝুড়িতে ঢালেন। সেখানেই ডাক তুলে মাছ বিক্রি করেন। মাছঘাটগুলোতে ধরতে গেলে সারা দিনই মাছ কেনাবেচা হয়।


দুলাল মাঝি বলেন, ৩ নভেম্বর তিনি বড় আশা নিয়ে সাগরে যান। গতকাল সকালে ফিরে আসেন। কারণ, সাগর মোহনায় কোনো ইলিশ নেই। সব মাছই পোয়া আর দু–একটা পাঙাশ মাছ। ৫ দিনে প্রায় ৭০ হাজার টাকার মাছ পেয়েছেন তিনি। যে পরিমাণ মাছ তিনি পেয়েছেন, তার বেশির ভাগ পোয়া মাছ বলে তেমন দাম নেই।


ভোলার দৌলতখান উপজেলার হাজীপুর হুজুরের খাল মাছঘাট, তজুমদ্দিন উপজেলার মাছঘাট, লালমোহন উপজেলার বাত্তিরখাল মাছঘাট, চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে গিয়ে ইলিশের দেখা তেমন পাওয়া যায়নি।


বাত্তিরখালের মৎস্য আড়তদার মো. ঝিকু বলেন, পোয়া মাছ ছাড়া তেমন কোনো মাছ নেই। মাঝেমাঝে পাঙাশ পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ নাই কইলেই চলে। ছোড জাইল্লারা ৩-৪ হাজার টাকার পোয়া মাছ পায়। বড় জাইললারা ৫০-৬০ হাজার, এক-দেড় লাখ টাকার।’


তজুমদ্দিন  মাছঘাটের আড়তদার ও জেলে সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাইজালের জেলেরা দেড়-দুই লাখ টাকার পোয়া মাছ পাচ্ছেন।


চরফ্যাশন উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন বলেন, প্রজনন মৌসুম শেষে ডিম ছাড়ার পর ইলিশ সাগরে চলে যায়। আবার পোয়া মাছের প্রধান খাবার ইলিশ মাছের ডিম। তাই নদীতে পোয়া মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে।


ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, মা ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুমে সব মাছই ডিম ছাড়ে। এ কারণে শুধু পোয়া মাছ নয়; পাঙাশ মাছও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে আর কিছুদিনের মধ্যে ইলিশ পড়বে বলে আশা তার।


আরএক্স/