জেলেদের জালে সামুদ্রিক নীল-ব্যান্ডেড সাপ


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:৩৯ অপরাহ্ন, ১৫ই নভেম্বর ২০২৩


জেলেদের জালে সামুদ্রিক নীল-ব্যান্ডেড সাপ
সামুদ্রিক নীল-ব্যান্ডেড সাপ। ছবি: জনবাণী

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে জেলেদের টানা জালে ধরা পড়েছে নীল-ব্যান্ডেড নামের সামুদ্রিক একটি সাপ। যা হাইড্রোফিস সায়ানোসিক্টাস প্রধানত কর্ডাটা পর্বের ইলাপিডা পরিবারের বিষাক্ত সামুদ্রিক সাপ, যাকে সাধারণত অ্যানুলেটেড সামুদ্রিক সাপ বা নীল-ব্যান্ডেড সামুদ্রিক সাপ বলা হয় বলে জানিয়েছে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।


মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার উপকূলের পেঁচার দ্বীপে এই সাপটি জেলেদের টানা জালে ধরা পড়ে। সাপটি এখন সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মেরিন স্পেসিমেন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে।


কক্সবাজারস্থ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সমুদ্রবিজ্ঞানী তারিকুল ইসলাম বলেন, জেলেদের টানা জালে ধরা পড়া সামুদ্রিক সাপটি বোরির মেরিন স্পেসিমেন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। এটি হাইড্রোফিস সায়ানোসিক্টাস প্রধানত কর্ডাটা পর্বের ইলাপিডা পরিবারের বিষাক্ত সামুদ্রিক সাপ। যাকে সাধারণত অ্যানুলেটেড সামুদ্রিক সাপ বা নীল-ব্যান্ডেড সামুদ্রিক সাপ বলা হয়। এদের গায়ে হলুদ ও কালোর মিশ্রণে ডোরাকাটা দাগ থাকে।


তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত মহাসাগরের ইরান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং কোরিয়া, জাপান, সলোমান দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ চীন সাগর, পুর্ব চীন সাগর, পারস্য উপসাগরের ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত,দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং নিউ গিনি অঞ্চলে সাপটির বিচরণ বিদ্যমান। এটি অগভীর উপকূলীয় জলে বসবাস করে। এটি প্রায়শই চিংড়ি ট্রলার বা উপকূলীয় অঞ্চলে জেলেদের টানা জালে দূর্ঘটাক্রমে ধরা পড়ে। এই সামুদ্রিক বিভিন্ন সামুদ্রিক অমেরুদন্ডী প্রাণি এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যেমন ঈল, গবি প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। প্রজাতিটি সমুদ্রের সাথে খুব অভিযোজিত।’


সমুদ্রবিজ্ঞানী তারিকুল ইসলাম আরও বলেন, এটি উপকূলীয় অগভীর এবং গভীর সমুদ্রে ভালোভাবে সাতার কাটতে পারে। মানগ্রোভ অঞ্চলেও এদের দেখা পাওয়া যায়। স্থলভাগে এদের চলাফেরার গতি অত্যন্ত ধীর তবে অন্যান্য সামুদ্রিক সাপের তুলনায় ভালো কাজ করে। তারা অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় চলাফেরা করে তবে হুমকিতে থাকলে বা আক্রান্ত হলে আক্রমণাত্নক হয়ে উঠতে পারে। 


সাপটি বিষধর হলেও এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যুর হার অত্যন্ত কম। এটি সরাসরি একসাথে ৩ থেকে ১৮ টির মত বাচ্চা জন্ম দেয়। সদ্য জন্ম নেয়া বাচ্চাটি প্রায় ২৮ সেমি লম্বা হতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের দৈর্ঘ্য প্রায় ১১৭ সেমি এবং মহিলার দৈর্ঘ্য ১৬০ সেমি পর্যন্ত  এবং দৈহিক ওজন প্রায় ১১০০ গ্রাম হতে পারে। বর্ষা পরবর্তি মৌসুমে বিশেষ করে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রাফিড ফিমেইল বেশি দেখা যায়। মেয়ে বাচ্চাটি পুরুষ বাচ্চার তুলনায় আকারে বড় হয়।


আরএক্স/