ভোলায় লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৫১ অপরাহ্ন, ১৬ই নভেম্বর ২০২৩


ভোলায় লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে
ছবি: জনবাণী

ভোলায় লাগাবহীন দ্রব্য বৃদ্ধির কারণে দিন দিন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। টাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে প্রাপ্ত বাজার না পেয়ে হতাশ সাধারণ মানুষ। তাদের চোখে মুখে বোবা কান্নার ছাপ দেখার জন্য কেউ নেই তাদের। 


সরকারকে দায়ী করার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের না থাকলেও একপ্রকার অসহায়ত্ব ও নিয়তিকেই দায়ী করে বুকের ভেতর চাপা আর্তনাদ নিয়ে নিয়মিত ভোলার বাজার থেকে বাড়ি ফিরছেন নিম্ন আয়ের থেকে শুরু করে সবধরনের মানুষ। যে হারে ভোলার বাজারে বেড়েই চলছে সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, চাল, আলু, রসুন, পেঁয়াজ, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। 


এতে কোন ভাবেই যেন লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দিন দিন দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। ভোলার প্রশাসন কয়েকদিন পর পর বাজার মনিটরিং করে কিছু অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জেল, জরিমানা, অর্থদণ্ড করলেও  প্রশাসন চোখের আড়াল হলেই অসাধারণ ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা আবারও সরকার কর্তৃক পণ্যের নির্ধারিত মূল্য থাকলেও সেই মূল্যে বিক্রি না করে তারা তাদের খামখেয়ালি দামে বিক্রি করছে যে কোন পণ্য। 


কোনভাবেই যেন তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ভোলার প্রশাসন। ওদিকে আবার  প্রতিদিন দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা কেউই মানছেন না। 


প্রতিটি পণ্য ব্যবসায়ীদের সমিতি আর সিন্ডিকেট রোটেশনের কারণেই ভোলার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ‘আগুনে হাত পুড়ে’ যাওয়ার মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছে। 


এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্পআয়ের মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। অনেক ক্রেতা অপরিহার্য পণ্য ছাড়া অন্য কিছু কেনা বাদ দিয়েছেন। অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার খাবারের বাজেট কমিয়ে দিয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ভোলা শহরের খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। অর্থাৎ ১টি ডিমের দাম দাড়িয়েছে ১৫টাকা। অথচ সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। যা সপ্তাহ খানেক আগে ৫৫-৬০ টাকা ছিল। দেশি রসুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, যা এক মাস আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। লিটার প্রতি খোলা তেলের দামও বেড়েছে ৫টাকা। গত মাসে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, আজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৮৫ টাকা। কমতি নেই সবজির বাজারেও, দেশি সিম কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পতাকপি ৭০ থেকে ৭৫টাকা, কাচামরিচ ১৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। 


পাশাপাশি সব ধরনের শিল্পপণ্যের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম উর্ধ্বমূখী হওয়ায় ক্ষোভ প্রাকাশ করছেন ভোক্তারা। দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির কারণ জানতে চাইলে নিত্যপণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানান, মোকামে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ব্যবসা চালায়। এতে আমাদের কিছু করার নেই, আমরা বেশী দামে ক্রয় করে এনে স্বল্প লাভেই বিক্রি করি। 


এ বিষয়ে ভোলা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রতিটি দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা এই নির্দেশনা না মেনে, সরকার কতৃক নির্ধারিত করা খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।


আরএক্স/