তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইবিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন, ২২শে নভেম্বর ২০২৩


তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইবিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ
ছবি: জনবাণী

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। 


মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকাল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে ঘটনাটি ঘটে। এসময় আহতদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে দ্বিতীয় দফায় মারামারি ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফুটবল মাঠে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে কুষ্টিয়ার একটি ক্লাবের সাথে প্রীতি ম্যাচ চলছিলো। ফুটবল মাঠের উত্তর পাশে আরেক দল ক্রিকেট খেলছিলো। এসময় ফুটবল মাঠে ক্রিকেট টিমের ফিল্ডার দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের খেলোয়াড়েরা। এক পর্যায়ে ক্রিকেট খেলোয়াড় হাফিজ স্টাম্প নিয়ে তেড়ে আসলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় ব্যাট, স্ট্যাম্প ও বাঁশ নিয়ে দুই পক্ষের হাতাহাতি সংঘর্ষে রূপ নেয়।


সংঘর্ষের ঘটনায় আহতরা হলেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জিওন ও কবির, ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিজন ও আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেজবাহ।


এছাড়াও অপর পক্ষের আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজ, তূর্য ও আলী রিয়াজ, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জ্যাকি ও সিয়াম, অর্থনীতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদি, বাংলা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাফি।


এসময় আহত ফুটবল টিমের সদস্য এবং ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কবির বলেন, আমরা প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলতেছিলাম, মাঠের অন্য পাশে দুর্জয়(মার্কেটিং ১৯-২০), হাফিজ, রিয়াজ, রিফাত সহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেট খেলতেছিলেন। একই মাঠে খেলার কারণে আমাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তার একপর্যায়ে হাফিজ স্টাম্প নিয়ে আমাকে মারতে আসেন। তখন আমাদের দুপক্ষের মধ্যে বেশ ধাক্কাধাক্কি হয় এবং দুর্জয়ের নাকে আঘাত লাগে। আমার পায়েও অল্প ব্যাথা পাই। 


পরে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় এবং আমরা মাঠে খেলা চলমান রাখি। কিছুক্ষণ পর তারা আবারও মাঠে আসে সাঙ্গপাঙ্গ, স্টাম্প ও লাঠি নিয়ে এবং আমাদের টিমের গোলকিপার কে প্রচুর মারধর করে। তখন আমাদের মধ্যে আবারও মারামারি শুরু হয়ে যায়।


এতে আমি, মেজবা,জিয়ন, বিজন সহ আমার সাথে থাকা বেশ কয়েকজন সহপাঠী আহত হই। এই ঘটনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার চাই। 


এ ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাকি বলেন, তারা মাঠের বাইরে থেকে এসে আমাদের উপর হামলা করেছে। 


আমাদের বন্ধুদের মারতে শুরু করার পর আমরা ৭-৮ জন গিয়েছিলাম সমস্যা সমাধান করার জন্য। তখন আমাদের পিছন দিক থেকে অতর্কিতভাবে মারা শুরু করে। পরবর্তীতে আমাদের বন্ধুবান্ধব আসছে যখন, ওরা আবারও পরে বাঁশ নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। আমরা পুরপুরি নিরস্ত্র ছিলাম। ওদের মধ্যে জিয়ন, কবির ছিল তবে অনেক লোক থাকায় সবাইকে দেখতে পাইনি।


কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ খুরশিদা জাহান জানান, চিকিৎসা নিতে আসা ৫ জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে চোখে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত একজনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি ৪ জনের মধ্যে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত ২ জন এবং বুকে, পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হলে পাঠানো হয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, প্রশাসনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বিক বিষয় আলোচনা করে মনে করছি এটা একটি নিতান্তই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক, হলকেন্দ্রিক উসকানিমূলক ঘটনা নয়। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তরার স্বার্থে আমরা প্রস্তুত আছি। যদি লিখিত অভিযোগ পায়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


আরএক্স/