নওগাঁয় বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে নতুন সম্ভাবনা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৩৯ অপরাহ্ন, ২৫শে নভেম্বর ২০২৩
নওগাঁর পত্নীতলায় আম বাগানে গাছের নিচে বস্তায় আদা চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন রুহুল আমিন। বস্তায় আদা চাষ সহজ ও খবর কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় অনেকেই বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
জেলায় আদার চাহিদা রয়েছে ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন। চাহিদার বিপরীতে ৩০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছে। ৩৯০ মেট্রিক টন আদা উৎপাদন হবে পাশাপাশি নওগাঁয় প্রায় ৬০ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। যা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আরও ৪৮ মেট্রিক টন।
বস্তায় আদা চাষ ছড়িয়ে দিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়ে পাশে আছে কৃষি বিভাগ। আদা মসলা ও ভেষজাতীয় উদ্ভিদ। আদিকাল থেকে আদার ব্যবহার রয়েছে। তবে আদা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে মসলায়।
জেলার পত্নীতলা উপজেলার পাটি গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন তিন বছর আগে বস্তা পদ্ধতি আমা বাগানে ৪০ বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। এ বছর কৃষি অফিসের পরামর্শে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আম বাগানে ৫০ শতাংশ জমিতে ১৪ হাজার বস্তায় বারী-১ জাতের আদা চাষ করছেন তিনি।
রুহুল আমিন জানান, বস্তা, মাটি, জৈব সার ও বীজসহ ১৪ হাজার বস্তায় মোট খরচ হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ১৪ হাজার বস্তা থেকে আদা উৎপাদন হবে ১১ হাজার ২০০ কেজি। এই মৌসুমে ২৫ লাখ টাকার আদা উৎপাদন হবে আম বাগানে বস্তা পদ্ধতিতে।
তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস থেকে আদা চাষে সব ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা পেয়েছি। এখন পাইকাররা বাড়ি থেকে আদা কিনে নিতে অগ্রিম টাকা দিতে চাচ্ছে। বাজারে আদার দাম বাড়ছে। আশা করি ভালো দাম পাবো।
কৃষক আরাফাত হোসেন বলেন, শুরুতে রুহুল আমিনের বস্তায় আদা চাষ করতে দেখে অনেকেই উপহাস করেন। এখন আদা চাষ দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছে, প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে রুহুল আমিনের আদা চাষ দেখতে ও পরামর্শ নিতে ছুটে যাচ্ছে। আমি আগামী মৌসুমে ১০ শতাংশ জমিতে বস্তায় আদা চাষ করবো।
পত্নীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, নওগাঁর আম বাগানগুলো আদা চাষে খুব কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব। আমের মৌসুম ছাড়া বাকি সময় বাগান গুলো ফাঁকা পড়ে থাকে। আম বাগান গুলোকে আদা চাষের আওতায় আসলে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় বিক্রি করা সম্ভব।
তিনি আরও জানান, আদা চাষে এই উপজেলায় ২০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। ৪ জন আদা চাষিকে ২০০ টি জিও ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। একটি পরিবারে বছরে ৭ থেকে ৮ কেজি আদার চাহিদা থাকে। প্রতিটি পরিবার ২০ বস্তা আদা চাষ করলে সারা বছরের চাহিদা পূরণ হবে।
জেবি/এসবি