নারীর পিছিয়ে থাকার বড় কারণ সহিংসতার ভয়: শিক্ষামন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নারীর পিছিয়ে থাকার বড় কারণ সহিংসতার ভয়: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘নারীরা পিছিয়ে থাকার পেছনে বড় কারণ সহিংসতার ভয়। নারীদের পদে পদে ধর্ষণের ভয়। আমার মনে হয় এই জায়গাটা খুব গোলমেলে জায়গা।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে পল্লি কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আয়োজিত 'টেকসই উন্নয়নে জেন্ডার সমতা' শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‘একজন নারীকে যদি একটি বন্য পশু আক্রমণ করে তাহলে তার সম্ভ্রম যায় না। কিন্তু একজন নারীকে যদি একটি মানুষরূপী পশু আক্রমণ করে তাহলে তার সম্ভ্রম যায়। সম্ভ্রম তো কোনো নারীর কোনো বিশেষ অঙ্গে বাস করে না। সম্ভ্রম যদি কারো যায় তাহলে মানুষরূপী যে পশুটি তাকে আক্রমণ করেছে তার সম্ভ্রমহানি হয়েছে। একজন নারী কেন ধর্ষিতা হয়, তার জীবন নষ্ট হয়ে যায়, কেন সে সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না, কেন আইনের কাছে গেলে বার বার তাকে আরও ভেকটিমাইজ করা হবে। কেন আমরা মনে করব তার জীবনটাই শেষ হয়ে গেল!’

দীপু মনি বলেন, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। পৃথিবীতে সব জায়গায় ঘটছে, ঘটা উচিত নয়। তারপরও ঘটছে, নানান কারণে ঘটছে। সেই কারণ বিশ্লেষণের এখানে সময়ও নেই, এটি জায়গাও নয়। কিন্তু সেটি ঘটলে কেন নারীর সম্ভ্রম যাবে এই একটি মাত্র ধর্ষণের একটি ঘটনা বা দুর্ঘটনা অপরাধ সে অপরাধ, যে অপরাধ নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়। সেই অপরাধে কেন অপরাধীর নয়, অপরাধের শিকার নারীর জীবন নষ্ট হবে কেন বন্য পশুর দ্বারা আক্রান্ত হলে তার সম্ভ্রম যায় না, কিন্তু বন্য পশুরূপী একজন মানুষ কর্তৃক আক্রান্ত হলে একজন নারীর সম্মান যায়।

দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে এবং পুরো পৃথিবী থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে হবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় রীতি-নীতিতে একজন নারীকে অসংখ্য ‘না-এর মাঝে বেড়ে উঠতে হয়। এমনকি জোরে হাসলেও যেনও একটি অপরাধ। এতো বেশি না না শুনতে শুনতে একজন নারীর চারপাশে একটি শক্ত দেয়াল তৈরি হয়। এটি ভেঙ্গে বের হওয়াই তো একজন নারীর জন্য শক্ত যুদ্ধ। অধিকাংশ মেয়েরা দেয়ালটা ভেঙে বের হতে পারে না। দেয়ালটাকে ভাঙার জন্য নারীকে সাহস জোগাতে হবে। নারীকে তার অন্তর নিহিত শক্তিটাকে উপলব্ধি করতে হবে। সেই শক্তি দিয়ে নারীকে সব পেতে হবে।

নারীর অধিকার ও রাজনীতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যে রাজনীতি মানুষের স্বীকিৃত দেয় না, নারীর মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয় না; সেই রাজনীতির কী দরকার? যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, যারা সেই অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়; নারীর অধিকার লঙ্ঘন করার সব কায়দা-কানুন তাদের মাধ্যমেই হবে। তাহলে নারী কেন তাদের সমর্থন দেবে? সমর্থন দেওয়া উচিত নয়। যারা প্রগতির কথা ভাবেন, তাদেরও সেই রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণ নেই। নারীর অধিকার তো রাজনৈতিক বিষয়।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব, শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহসহ প্রমুখ।

 ওআ/