আমার বক্তব্য ব্যক্তিগত, দলের নয়: কৃষিমন্ত্রী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৩


আমার বক্তব্য ব্যক্তিগত, দলের নয়: কৃষিমন্ত্রী
ফাইল ছবি

বিএনপিকে নিয়ে নিজের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপি নেতাদের কারাগার থেকে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে বিএনপি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। এটা দলের বক্তব্য নয় অবশ্যই, আমি ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছি। আমি মনে করি আমার দল চায় সবাই অংশগ্রহণ (নির্বাচনে) করুক।


সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, অনেকের কথার মধ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে। আমি যা বলেছি, ভুল বলিনি। আমার বক্তব্য একদম ঠিক।


আরও পড়ুন: কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়নি


আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের আমরা নির্বাচনে আনতে চাই। কিন্তু সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই আমাদের। আমার বক্তব্যের মূল কথা ছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় চেয়েছেন এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করুক। সেটা বলতে গিয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের কথা বলেছি। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে আসেনি।


আ. লীগ আন্তরিকভাবে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ চেয়েছে জানিয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, এই কথাটি বলতে গিয়ে আমি সেদিন কিছু কথাবার্তা বলেছি। আমি সেদিন এটিও বলেছি, বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চায়। তারেক রহমানের নামে মামলা রয়েছে, তার সাজা হয়েছে। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তার মা অসুস্থ, তারও সাজা হয়েছে। কাজেই আমার ধারণা, বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় না, তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়।


কৃষিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের বক্তব্য হলো, সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনোভাবেই নির্বাচন করা সম্ভব না। পৃথিবীর কোনো দেশেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের ব্যবস্থা নেই। জাপান, ভারত, শ্রীলংকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা, পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলতে কিছু নেই। কাজেই আওয়ামী লীগের সামনে কোনো বিকল্প নেই। এই কথাটিই বলেছি। এই পদ্ধতির মধ্যে থেকে বিএনপি বলতে পারতো, নির্বাচনটাকে কীভাবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা যায়।


আরও পড়ুন: হাটে হাড়ি ভেঙেছেন আবদুর রাজ্জাক


তিনি বলেন, সেই ক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন নিতে পারতাম। বিদেশ থেকে আরও বেশি পর্যবেক্ষক আসতেন। ওসিদের বদলি করা হচ্ছে। এভাবে এসপিদের বদলি করা যেত, ডিসিদের করা যেত। সংবিধান অনুসারে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রেখে, এই সরকারকে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা করা দরকার আওয়ামী লীগ সেটা করতে চেয়েছে। কিন্তু বিএনপি সেটা বিশ্বাস করেনি। আন্দোলনে গেছে।


এ সময়ে বিগত ১৫ বছরে বিএনপির বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে, ট্রেন লাইন কেটে নাশকতা করেছে। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে রাজশাহীতে কীভাবে তারা পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, প্রায় চারশ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছি, আওয়ামী লীগের জন্য কি গন্তব্য ছিল? আপনারা জানেন, তারা ট্রেন লাইনে কীভাবে নাশকতা করেছে? দেশে কী যুদ্ধাবস্থা চলছে। এই নাশকতা বন্ধ করতে হলে গ্রেফতার তো করতে হবেই।  


তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতাদের হুকুম ছাড়া কী কোনো কর্মী বাসে আগুন দেবেন? তাদের জেল-জুলুমের ভয় আছে না! অবশ্যই আছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন সরকারে আছে, তার দায়িত্ব হলো মানুষের জীবনের ও জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। সেটা আওয়ামী লীগ করেছে।


কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাদের এমন প্রেক্ষাপটে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা যদি নির্বাচনে আসতেন, তাহলে স্বীকার করে নিতেন, তারা আর সন্ত্রাস করবেন না। তার মানে শান্তি আসতো। নির্বাচন কমিশনারই বারবার বলেছে, প্রয়োজনে নির্বাচন পিছিয়ে দেবো। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের কারাগারে রেখে কী নির্বাচন হবে? সেটা একটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জামিন দিয়ে, আমি ছেড়ে দেবো, এটা তো কথা না, জামিন দিয়ে আইনের মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হত।  


তিনি আরও যোগ করেন, নির্বাচন কমিশনই এমনটা ভেবে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অর্থ কী, বিএনপি যদি রাজি হয়, তাহলে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। সেই কথাটিই আমি বলেছি, আবারও বলেছি।


জেবি/এজে