নির্বাচন নিয়ে যা ভাবছেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, ২৫শে ডিসেম্বর ২০২৩


নির্বাচন নিয়ে যা ভাবছেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
ছবি: জনবাণী

আল জুবায়ের: ৭ জানুয়ারি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে,নির্বাচনকে ঘিরে দেশের মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার যেন কোনো কমতি নেই। একদিকে কেউ বলছেন, আগামী নির্বাচন হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নির্বাচন। আবার অন্যদিকে কেউ বলছেন, এই নির্বাচন গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচন।


সরকার বিরোধীরা মনে করছেন, গত ১৫ বছরে এই অন্যায় অবিচারের মূল উৎপাটনসহ সাংবিধানিক জটিলতা নিরসন করে সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে পরিবর্তন দরকার। আর সরকার সমর্থকরা মনে করছেন, গত ১৫ বছরে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও আওয়ামীলীগ সরকারকে ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ? সেটাই জানার চেষ্টা করেছেন দৈনিক জনবানীর প্রতিবেদক আল জুবায়ের।


আরও পড়ুন: ঢাবি উপাচার্যের নেতৃত্বে মেট্রোরেল ভ্রমণ


আসন্ন নির্বাচনের প্রত্যাশা নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসাইন অভি।তিনি বলেন,নির্বাচন নিয়ে বরাবরই ছাত্র সমাজের প্রত্যাশার পারদ একটু বেশিই। 


আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বাঙালির চিরায়ত উৎসবে পরিণত হয়েছে। সকাল সন্ধ্যা রাত যেমন প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন তেমনি সাধারণ মানুষ, গ্রাম বাংলার ভাষার আবাল বৃদ্ধ বনিতা  খোশগল্পে মেতে উঠছে। 


মানুষ যেমন চায়ের দোকানের আড্ডায় নির্বাচনী ভাবনায় মেতে উঠে তেমনি একজন তরুণ প্রজন্মের অংশ হিসেবে চাই ভোট যেমন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মূলক হবে তেমনি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা বাস্তবায়নের ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি। 


সবসময় প্রার্থীদের প্রধান একটি টার্গেট থাকে তরুণ প্রজন্মের ভোট, ঠিক তেমন তরুণ প্রজন্ম প্রত্যাশা করে  দেশের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় তরুণদের ভূমিকা নিশ্চিত করা।


এবারের নির্বাচন খুব বেশি ফলপ্রসূ হবে না বলে মনে করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফার্মাসিস্ট সালেহ আকরাম শুভ।তিনি বলেন,  নির্বাচনের জন্য যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রয়োজন সেটা নেই। এখনও রাজনৈতিকভাবে ধড়পাকড় চলছে। বিরোধী দলের প্রার্থীদের সাথে নির্বাচন কমিশনের আচরণ প্রহসনের জন্ম দিয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে আমরা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে একটি ভোট বিহীন নির্বাচন দেখেছি। সে সময়ের সাথে বর্তমানের খুব বেশি পার্থক্য আছে বলে মনে হয় না।’


তিনি আরো বলেন, ‘তবে আশার ব্যপার হলো বিরোধী দলগুলোর সাথে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা। তিনি তার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করতে সমর্থ হলে ভালো কিছু হবে।’


এবার কেমন সরকার চান- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জনগণের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করবে ও সকল নাগরিকের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারবে এমন সরকার চাই আমরা।


বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনাল( বিইউপি) শিক্ষার্থী ফারহান তানভীর জ্যোতি বলেন,চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা আমরা যারা রাজনীতি সচেতন বা রাজনীতি উপলব্ধি  করি , একটু খেয়াল করলে বোঝা যায়   দেশের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই হতাশাজনক  এবং সংকটাপন্ন প্রধান রাজনৈতিক দল গুলো বিপরীত মেরুতে দাড়িয়ে আছে। 


এমন অবস্থায় সরকার নির্বাচন করবে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সরকার বোঝাতে চেষ্টা করছে এই নির্বাচনে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ না করলেও নির্বাচন গ্রহনযোগ্য ও অংশগ্রহনমূলক হবে। সেই বিবেচনায় ১৪,১৮ এর নির্বাচন বিবেচনা করলেই বোঝা যায় ব্যাপক অর্থে অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন মানে প্রধান দলগুলো ও তাদের ব্যাপক কর্মী সমর্থকদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা জরুরী, তা না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলবে আবারো। ফলে সৃষ্টি হবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট যা আমার এই স্বাধীন সার্বভৌমত্বের জন্য মঙ্গল কর নয়।


আরও পড়ুন: আন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন জাবি



সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে দেখা যায়, নির্বাচন সামনে রেখে তরুণদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ দেয়ায় ভোটার বেড়েছে ৫ লাখ ৪০ হাজার ১৯৩ জন। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩।


এর আগে, গত মার্চে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন, দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এরপর সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তরুণদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ দিয়েছিল ইসি। এতে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৪০ হাজার ১৯৩ জন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সে হিসাবে পাঁচ বছরে ভোটার বেড়েছে এক কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৬ জন।তরুণদের এ সংখ্যা বেশ বড় ধরনের প্রভাব রাখতে যাচ্ছে এ নির্বাচনে। আর তাই এ নির্বাচনকে ঘিরে তাদের আগ্রহটাও একটু বেশি। তরুণরা চান শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।


আরএক্স/