Logo

আধুনিক প্রযুক্তিতে বিলীন পান্তা ভাত

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৩:৫৭
83Shares
আধুনিক প্রযুক্তিতে বিলীন পান্তা ভাত
ছবি: সংগৃহীত

একটু লবণ, শুকনা মরিচ পোড়া অথবা কাঁচা মরিচ এবং পিঁয়াজ।

বিজ্ঞাপন

রিয়াজুর রহমান: আবহমানকাল থেকে পান্তা ভাত বাঙালির প্রধান খ্যাদ্য। ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ কথাটি বহুল প্রচলিত। কিন্তু ভাতের সঙ্গে মাছই কি বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় খাবার? বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিকে তাকালে আমরা কী দেখতে পাই? 

বলিষ্ঠ শরীর আর উজ্জ্বল ত্বক পেতে পান্তা ভাতের উপকারিতা আধুনিক তথ্য 

বিজ্ঞাপন

এক সময় গ্রাম বাংলায় সকালের প্রিয় নাস্তা মানেই ছিল পান্তা ভাত। গ্রামের সবার কাছে অনেক জনপ্রিয় ছিল পান্তা ভাত সেই সাথে একটু লবণ, শুকনা মরিচ পোড়া অথবা কাঁচা মরিচ এবং পিঁয়াজ। 

আরও পড়ুন:

বিজ্ঞাপন

আজকাল গ্রামে বা শহরে পান্তা ভাত খাওয়ার প্রচলন একেবারে নাই বললেই চলে। তবে এখনও কিছু কিছু গ্রামে পান্তার প্রচলন রয়েছে তবে তাও দেখা না দেখার মত । বর্তমানে প্রায় সবার বাড়িতে সকালে গরম ভাত কিংবা নাস্তার প্রচলন। অথচ পুষ্টিগুণে ভরপুর এই পান্তা ভাত। তাদের দাবি, শরীর চর্চা না করেও পান্তা ভাত খেয়ে বলিষ্ঠ শরীর আর উজ্জ্বল ত্বক, চুলের অধিকারী হতে পারেন যে কেউই। 

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি ভারতের আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক পরীক্ষা করে দেখেছেন, ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে ১০০ গ্রাম পান্তা ভাতে ৭৩.৯১ মিলিগ্রাম আয়রন তৈরি হয়। সেখানে সমপরিমাণ গরম ভাতে আয়রন থাকে মাত্র ৩.৪ মিলিগ্রাম। এছাড়া ১০০ গ্রাম পান্তা ভাতে পটাশিয়াম বেড়ে হয় ৮৩৯ মিলিগ্রাম এবং ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বেড়ে হয় ৮৫০ মিলিগ্রাম। যেখানে সমপরিমাণ গরম ভাতে ক্যালশিয়াম থাকে মাত্র ২১ মিলিগ্রাম। 

এছাড়া পান্তা ভাতে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে হয় ৩০৩ মিলিগ্রাম। সেখানে সমপরিমাণ গরম ভাতে সোডিয়ামের পরিমাণ ৪৭৫ মিলিগ্রাম।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি পহেলা বৈশাখ উদযাপনে সকালের আয়োজনে থাকে পান্তা ভাত খাওয়ার উৎসব। কখন কারা কেন পান্তাভাত খাওয়ার প্রচলন করলেন, সেটা অনেকটাই অজানা। তবে নগর জীবনে পহেলা বৈশাখের সকাল বেলা পান্তা ভাতের সাথে কাঁচা মরিচ পেঁয়াজ কিংবা ইলিশ মাছের একটি টুকরা থাকলে তো আর কোনো কথাই নেই। 

বিজ্ঞাপন

তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে মানুষ কোনো না কোনো পার্ক বা উদ্যানে বসে পান্তা ভাত খায়। আর এই পান্তা বিক্রি করার জন্য এখন নানা সংগঠন দাঁড়িয়ে গেছে। তারা তাদের সংগঠনের সদস্যদের কাছে পান্তা ভাত বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়ে থাকেন। মাটির সানকিতে একদিনের সকালে পান্তা ভাত খাওয়ার মধ্যে বাঙালিপনার স্বাদ খোঁজার চেষ্টা করা হয়। আসলে নগর জীবনে পান্তাতো নয়, এ যেন গরম ভাত পানি দিয়ে খাওয়া।

আরও পড়ুন: নির্বাচনী চা খাওয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মারামারি

বিজ্ঞাপন

প্রত্যাহিক কাজ-কর্মে গতি আনার জন্য গ্রাম বাংলার কৃষক পান্তা ভাত খেতেন। সকালের ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা আবহাওয়ায় মাঠে কাজ করা ছিল অনেকটা প্রশান্তির। কেন না, দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের উত্তাপ বাড়তে থাকে। তাই প্রচন্ত গরমে কৃষক সকালের সময়টিকে কাজের মোক্ষম সুযোগ হিসেবে বেছে নিত। একসময় কৃষিই ছিল আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রধান চালিকাশক্তি। কৃষিকাজ করে মানুষ জীবিকা নির্র্বাহ করত। যার যত বেশি জমি ছিল, তার তত বেশি ছিল ব্যস্ততা। যার চাষের জমি থাকত না, তারও ব্যস্ততা কম ছিল না। কেন না, অন্যের জমিতে কাজ করে কীভাবে অধিক পয়সা আয় করা যায় সেটাই ছিল তাদের লক্ষ্য। দিনমজুরি করার আগে কিংবা পরে অন্যের জমিতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করে দিয়ে বাড়তি পয়সা ঘরে আনার আবেগ উৎফুল্ল ছিল ৷ 

বিজ্ঞাপন

তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই সোনার বাংলায় আমাদের কৃষক সকালের পান্তা খায় না। সে রুটি-পরোটা কিংবা গরম ভাত খেয়ে কাজে যেতে পারছে। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের এই বাংলায় এখন আর কৃষক পান্তা বাসি খায় না। গরম গরম খায়।

আরএক্স/

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD