হ্যাকারদের কবলে নির্বাচনী অ্যাপ: ইসি সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৯ অপরাহ্ন, ৭ই জানুয়ারী ২০২৪
বিশ্বের তিনটি দেশ থেকে নির্বাচনী অ্যাপটি হ্যাকারদের কবলে পড়েছে বলে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, এর ফলে নির্বাচনী অ্যাপ স্লো হয়ে গেছে।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে আগারগাঁওয়ে ইসি ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ইসি সচিবের মন্তব্য, “আমরা ২১ কোটি টাকায় কোনো অ্যাপ তৈরি করিনি। ৬ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্পে এই ২১ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে মাত্র ৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “তিনটি দেশ থেকে হ্যাকের চেষ্টা করার কারণে আমাদের নির্বাচনী অ্যাপ স্লো হয়ে গেছে। আমরা গতকাল থেকেই সেটি ঠিক করার চেষ্টা করছি। নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি থেকে আমাদের অ্যাপ স্লো করে দিয়েছে। অ্যাপ ছাড়াও আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা আছে। আমরা সেভাবেই সারাদেশের ফল সংগ্রহ করছি।”
জাহাংগীর আলম বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে গড়ে ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ শতাংশ, সিলেটে ১৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ছাড়াও বেলা ১২টা পর্যন্ত বরিশালে ২২ শতাংশ, খুলনায় ২১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে।”
সচিব আরও বলেন, “রাজশাহী বিভাগে ১৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানে পাঁচটি কেন্দ্রে কিছুক্ষণ ভোট বন্ধ রাখার পর আবারও সেখানে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে।”
ইসির দেওয়া তথ্য অনুসারী, নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার আনসার, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ, ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি, দুই হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড এবং ৭০০ এর বেশি র্যাব টহলে থাকবে। তাদের সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরাও মাঠে থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবেন ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য।
আরও পড়ুন: নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে: সেনাপ্রধান
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।
এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হবে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।
আরও পড়ুন: সারাদেশে ভোটে ৩৭ স্থানে অনিয়ম, আটক ৮: ইসি
এদিকে, বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবরোধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।
জেবি/এসবি