পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে, চরম দুর্ভোগে জনজীবন


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, ১৯শে জানুয়ারী ২০২৪


পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে, চরম দুর্ভোগে জনজীবন
ফাইল ছবি

সারাদেশের ন্যায় সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়েও টানা একসপ্তাহ ধরে তীব্র শীত পড়ছে। হিমালয়ের হিমেল হাওয়ায় হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন ও জীবজন্তুর। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন অনেকটাই বিপাকে।


শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ৯টার সময় এই জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 


জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় আছন্ন সম্পূর্ণ জেলা। কুয়াশার সাথে পড়ছে হিমশীতল শিশির। শহর ও গ্রামের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তীব্র শীতের কারণে অনেক কষ্টে সময় পার করছে শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের সময় যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন সব রোগ বালাই।


আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে শীতের দাপটে কাহিল দু:স্থ ও খেটে খাওয়া মানুষ 


কুয়াশার কারণে সময়মতো কাজে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ গুলো। শীত ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে কমেছে দৈনিক আয়। অভাব-অনটনে দিনোপাত কাটছে বেশকিছু পরিবারের। জরুরী প্রয়োজনের বাইরে শহরের অভিজাত শ্রেণীর মানুষজন ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষের শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে যেতে হচ্ছে।


পাথর শ্রমিক আবু তাহের বলেন, একটানা শীতের জন্য কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তিনি। জীবিকার তাগিদেই শীত উপেক্ষা করেই দিনভর নদীতে বরফগলা পানিতে পাথর তুলতে হচ্ছে তার। জীবিকার জন্য অন্য কোনো পথ না থাকায় ঠান্ডা পানিতে কাজ করে পরিবারের খাবারের জোগান দিচ্ছেন এই পাথর শ্রমিক। 


বাংলাবান্ধা এলাকায় পাথর শ্রমিকের কাজ করেন ফিরোজা ও কদবানু। তাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, নদীতে পাথর উঠছে অনেক কম। তাই তাদের কাজও কম হয়ে গেছে। সকালে প্রচুর ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে দেরি হলে অনেক সময়ই মহাজন আর কাজে নিতে চান না। কাজ না করলে তাদের সংসার চলে না। তাই এই তীব্র ঠান্ডার মধ্যে বেরিয়ে পড়েছেন কাজের জন্য।


আরও পড়ুন: ডিমলায় শীতার্ত মানুষের পাশে পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি


জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গত দুই দিন ধরে এ জেলায় মৃদু ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে এ জনপদ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সূর্যের মুখ দেখা গিয়েছিল। তবে সূর্যের সামান্য তাপে ঠান্ডা একটুও কমেনি।


জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, শীতপ্রধান জেলা হিসেবে প্রতি বছর পঞ্চগড়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত কম্বল বিতরণ করা হয়ে থাকে। আর এবারও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে এই এলাকার মানুষের মাঝে।


এমএল/