জাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:২৪ অপরাহ্ন, ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪
সজীবুর রহমান, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ করেছে "নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ"।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল নয়টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো পাঁচ দফা দাবি নিয়ে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে জাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ১১টার দিকে পরবর্তী কার্যদিবসে পুনরায় প্রতীকী অবরোধের ঘোষণা দিয়ে আজকের অবরোধ তুলে নেন তারা।
আরও পড়ুন: জাবির প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
ক্যাম্পাসে সকল অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টতা খুঁজলেই বেরিয়ে আসে ছাত্রলীগের নাম। তাদের বিষয়ে অভিযোগ আসলেও বিচার না করে দীর্ঘসূত্রিতায় ফেলে রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্বিকার থেকে বিচার না করা এ প্রশাসনকে তাই ব্যর্থ বলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
অবরোধ কর্মসূচিতে হাসিব জামানের সঞ্চালনায় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বলেছিল ৫ কর্মদিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করে দিবে কিন্তু পারেনি । রাজনৈতিক যে রুম গুলো আছে সেখানে তারা যাচ্ছেনা। রাষ্ট্রে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে সেই লেশ এখানে পড়েছে। হলের যারা প্রশাসন আছে তারা অনেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন তাহলে তো হলে অরাজকতা সৃষ্টি হবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে ৫ দফা দাবি করেছে সেই দাবি গুলো যৌক্তিক । যদি দাবি মানা না হয় এই আন্দোলন চলতেই থাকবে।
ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার বলেছি কিন্তু প্রশাসন সময় নিয়েও অছাত্রদেরকে বের করতে পারিনি। প্রশাসন যদি মাহমুদুর রহমান জনির কোন বিচার না করে আমরা সিন্ডিকেট হতে দিব না। প্রশাসন আমাদের ন্যায্য দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।
নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের নাটক ও নাটকতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, একজন বৈধ শিক্ষার্থী হলের সিট পায়না, চেয়ার টেবিল পায় না, পড়াশোনার ভালো পরিবেশ পাচ্ছে না। অন্যদিকে কিছু অবৈধ শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের ছত্রচ্ছায়ায় হলে অবস্থান করছে, দুজনের রুম একাই দখল করে আছে। রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা প্রশাসনের সঙ্গে লেজুড়বৃত্তি করে হলে থাকছে, যার ফলে বৈধ শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও যারা হলে থাকে তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক কীভাবে ছড়িয়ে গেছে, প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া এটা কখনো সম্ভব নয়। আজ মাদকের ব্যবসা, চোরাচালান, মাদক সেবন সামনে এসেছে। র্যাবের ব্রিফিং থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন যে পাশবিক ঘটনাগুলো ঘটছিল, তা এই অছাত্ররা করছিল। প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে, তারা এসব ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।’
এসময় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমেনা ইসলাম, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
আরএক্স/