শবে বরাতে হালুয়া-রুটির প্রচলন হলো যেভাবে


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪


শবে বরাতে হালুয়া-রুটির প্রচলন হলো যেভাবে
বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফের শবে বরাতের তরোণ - ছবি: জনবাণী

হাদিসের ভাষায় লাইলাতুম মিন মিসফি শাবানকে উপমহাদেশে শবে বরাত বলা হয়। শবে বরাত ফারসি শব্দ। শব শব্দের অর্থ রাত আর বরাত শব্দের অর্থ নাজাত বা মুক্তি। এই শব্দদয় মিলে হয়েছে শবে বরাত বা মুক্তির রজনী। 


এই রজনীর ফজিলত সম্পর্কে দয়াল নবী রাসুলে পাক (সা.) এরশাদ করেন, এ রাতে আল্লাহ তার সাথে শিরককারী ও হিংসুক ব্যতিত সব সৃষ্টিকে ক্ষমা করেন।  


এই রাতে মুসলমানগণ নফল ইবাদত পালন করে থাকেন। ইবাদতের পাশাপাশি শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে মুসলিমদের মাঝে। 


ইসলামের ইতিহাস যারা বিশ্লেষণ করেন, তাদের অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশের সমাজ বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহর অংশ।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, এ উপমহাদেশে দয়াল নবী রাসুলে পাক (সা.) এর ঘনিষ্ঠজনরা সুদূর আরব থেকে ইসলাম প্রচার করেছে পাশাপাশি আরব দেশীয় সংস্কৃতি আমাদের সমাজে ঢুকে পড়েছে। আমরা জানি রাসুল (সা.) মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন। এই সুন্নাত উম্মতে মোহাম্মদী পছন্দ করবে এটায় বাস্তব। ফলে মিষ্টির একটা জনপ্রিয়তা মুসলিম সমাজে প্রচলিত হয়েছে।


আরও পড়ুন: ইরানে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন হাফেজ বশির


তিনি আরও বলেন, শবে বরাতের সময় হালুয়া-রুটি বানানো ও বিতরণ করার সাথে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার একটি বিষয় রয়েছে। আনন্দের ভাগটা অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করার রেওয়াজ রয়েছে। এর সাথে ধর্মীয় অনুভূতি এবং সামাজিকতা রক্ষা দুটোই জড়িত আছে।


এই বরকতময় রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াল নবী রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'আল্লাহ পাক অর্ধ শাবানের রাতে (১৪ই শাবান রাতে) সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত আর সবাই ক্ষমা করে দেন।' সূত্র- সহিহ ইবনে হিববান, হাদিস নং-৫৬৬৫; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী শরীফ, হাদিস নং-৬২০৪।


আরও পড়ুন: সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ


ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে শবে বরাত পালনের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয় ১৯'শ শতকের শেষের দিকে। তখন ঢাকার নবাবরা বেশ ঘটা করেই শবে বরাত পালন করতেন। সেই সময়ে ঢাকার নবাবরা শবে বরাত উপলক্ষে আলোকসজ্জা করতো পাশাপাশি মিষ্টি বিতরণ করত।


ইতিহাসবিদদের মতে ১৯'শ শতকে মিষ্টির দোকানের খুব একটা প্রচলন ছিল না, সেজন্য মিষ্টি জাতীয় খাদ্য যেমন হালুয়া-রুটি তৈরির প্রচলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা বিস্তার লাভ করে। 


১৯'শ শতকের শেষের দিকে ঢাকায় শবে বরাত পালন মুসলিম পরিচয় প্রকাশের মাধ্যম ছিল।



জেবি/এসবি