ডিসি, এসপি, র‌্যাব সিও সহ নানা পরিচয়ে প্রতারক চক্রের ৬ সদস্য আটক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:১৬ অপরাহ্ন, ৫ই মার্চ ২০২৪


ডিসি, এসপি, র‌্যাব সিও সহ নানা পরিচয়ে প্রতারক চক্রের ৬ সদস্য আটক
ছবি: জনবাণী

নিজকে কখনও জেলা প্রশাসক, কখনও পুলিশ সুপার, কখনও র‌্যাবের অধিনায়ক এবং জেল সুপার সহ নানা পরিচয়ে বিপদাপন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা তোরাব আলী ওরফে রেজাউল করিম। যার নেতৃত্বে রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। সেই চক্রের মূলহোতা তোরাব আলী ওরফে রেজাউল করিম সহ ৬ জনকে আটক করেছে র‌্যাব ১৫।


সোমবার (৪ মার্চ) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের জে-টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ লিমিটেডের সামনে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, ৫টি ম্যাজিক ডলার, ১টি মাইক্রোবাস, ৮টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ও ২টি বাটন ফোন, ১৪টি সীম কার্ড।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারে চায়ের বিল চাওয়ায় কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা


মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব ১৫ এর কক্সবাজার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব ১৫ এর কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম।


আটকরা হলেন, চক্রের প্রধান কুতুবদিয়া উপজেলার লেমসেখালী এলাকার মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে তোরাব উদ্দিন শিকদার (৪০), চকরিয়ার উত্তর মেধাকচ্ছপিয়া এলাকার আবদুস সাত্তারের ছেলে মো. বাদশা (৩০), একই উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে তারেকুর রহমান (২০), আবুল কাশেশের ছেলে মো. জোবায়ের (২৩), মাহমুদ উল্লাহর ছেলে এমদাদ উল্লাহ মারুফ (২০) ও ইউনুস কবিরের ছেলে মিশকাত জান্নাত জুলি (১৮)।


সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব ১৫ এর কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রতারক চক্রটি কক্সবাজার জেলায় সক্রিয়। তারা কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের স্বজনদের টার্গেট করে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা জেলখানার গেইট, আদালত ও থানা কেন্দ্রিক ছড়িয়ে থাকে। তারপর নিরীহ ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপরই মুঠোফোনে কল দিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‌্যাবের অধিনায়ক এবং জেল সুপার দিয়ে কারাগারে থাকা ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে দেয়ার কথা বলে ফাঁদ তৈরি করে। এরপর বিকাশের মাধ্যমে বা মাঝে মধ্যে তাদের নির্ধারিত স্থানে ডেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারে পর্যটক বেশে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের নারী সদস্য গ্রেফতার


আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এই চক্রের সদস্য ২০ জন। তাদের মূলহোতা তোরাব আলী। তোরাব আলী হতদরিদ্র ছিল। কিন্তু অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে যান এই প্রতারণার মাধ্যমে। কোটি টাকার বেশি অনুদান দিয়ে এলাকায় করতেন সভা-সমাবেশ, থাকতেন প্রধান অতিথি। কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাচনে নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবেও ঘোষণা দেন। এসব বিষয় র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন তোরাব আলী।


আনোয়ারুল ইসলাম আরও জানান, এই প্রতারক চক্রের এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। একই সঙ্গে এই ৬ জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়েরের পর থানা সোপর্দ করা হবেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।


আরএক্স/