বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষা সমাপনী কনসার্ট ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে গাঁজার আসর
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৪১ অপরাহ্ন, ৬ই মার্চ ২০২৪
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান অদ্বিক-৮ এর কনসার্ট ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে বসে গাঁজার আসর।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নৌকা চত্বর, লেকপাড়, নির্মাণাধীন কফি হাউজ,কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, নির্মাণাধীন মুরাল কমপ্লেক্স,নিউ মার্কেটসহ পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বসেছে গাঁজা ও মাদকসেবিদের আসর।
আরও পড়ুন: নোবিপ্রবিতে শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের সংবাদ সম্মেলন
এছাড়াও কনসার্টের মধ্যে মাদক সেবনের পাশাপাশি বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের দিকে গাঁজার ধোঁয়া ছেড়ে উত্যক্ত করে এবং গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ করছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবাধে মাদকসেবন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশাসনের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে মাদক সেবনের জন্য প্রশাসনের উদাসীনতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দায়ী করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তুহিন বাদশা বলেন, “সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাসের চিত্র দেখে মনে হয়েছে কিশোর গ্যাং এর আস্তানা এবং অন্য কোনো লোকাল এলাকার প্রোগ্রাম চলছে। গাঁজা বাবা সেবনকারীদের অধিকাংশ বহিরাগত এবং কিশোর গ্যাং এর পোলাপান, তারা ওপেনলি গাঁজা নিয়ে আসর বসছিল। আমি নিজে কয়েকজন ফ্রেন্ড এবং জুনিয়র নিয়ে কয়েকটা গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করেছি। প্রশাসনের সেরকম কার্যকর পদক্ষেপ দেখিনি।”
এই বিষয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওমর শরীফ বলেন, “ক্যাম্পাসে যে অনুষ্ঠান হয় সেখানে গাঁজার আসর চলতে থাকে তবে এবার তা যেন লিমিট ক্রস করে গেছে। এক একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা কিভাবে চলতে পারে তা আমার জানা নেই। আমরা জানতাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার একটি যায়গা কিন্তু আমরা কোন শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছি আসলে আমাদের জানা নেই। প্রশাসন আসলে দেখেও চুপ থাকে বুঝি না। ন্যূনতম মানবিকতা যদি থাকে তাহলে মাদকের যে অভয়ারণ্য তৈরী করা হচ্ছে সেগুলা যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তাহলে প্রশাসনের উচিত দায় স্বীকার করে তাদের পদ থেকে সরে দাড়ানো। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কারনে তাদের অব্যবস্থাপনা দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। আমদের স্বপ্নের ক্যাম্পাস মাদকের অভয়ারণ্য হোক এটা আমরা কখনো চাই না এজন্য সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে এটা আমরা কখনো চাইতে পারি না হতে দিতে পারি না।”
আরও পড়ুন: ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২৬ এপ্রিল
অবাধে মাদকসেবন ও মেয়েদের গায়ে স্পর্শ করার পরেও প্রক্টরিয়াল বডির দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.মো. কামরুজ্জামান বলেন, “দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এটা সঠিক নয়।আমি সহ প্রক্টরিয়াল বডি, আনসার সদস্য ও পুলিশ নিয়ে মেয়েদের হল, লেকপাড়, মাঠে যেয়ে বাইরের কিছু পোলাপান আসছে তাদেরকে বের করেছি।”
কনসার্টের মধ্যে মাদক সেবন ও মেয়েদের গায়ে স্পর্শ করার প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “কনসার্টের মধ্যে মাদক সেবন হয়েছে সে সময় আমাদেরকে জানাননি কেনো?এই গ্যাঞ্জাজমের ভিতরে তো আমরা যেতে পারি নাই। আমরা লোকবলে অনেক কম, বহিরাগতরা মেইনগেটের টিন ভেঙ্গে প্রবেশ করেছে। তোমাদের শিক্ষার্থীরাও সাথে করে অনেক বহিরাগতকে নিয়ে আসছে। তোমরা পদক্ষেপ নাও যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের প্রোগ্রাম গুলো যেনো না হয়। যেনো ডিপার্টমেন্ট ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক হয়।”
আরএক্স/