সেহরি করে নিয়ত ছাড়াই ঘুমিয়ে পড়লে রোজা হবে?


Janobani

ইসলাম ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, ১৩ই মার্চ ২০২৪


সেহরি করে নিয়ত ছাড়াই ঘুমিয়ে পড়লে রোজা হবে?
ফাইল ছবি

মুসলমানদের জন্য রহমত ও বরকতময় এবং ফজিলতপূর্ণ মাস হলো রমজান মাস। আর এই রমজান মাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো সেহরি খাওয়া। সাধারণত সেহরি খাওয়া হয় একবারে রাতের শেষ ভাগে, সুবহে সাদিকের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে। ইসলামী ভাষায়, রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সুবহে সাদিকের পূর্বে যে খাবার গ্রহণ করা হয় তাকে সেহরি বলা হয়।


সেহরি হলো বরকতময় খাবার। সেহরি খাওয়ার ফলে রোজা রাখার শক্তি লাভ হয়। যদি সেহরি না খেয়ে রোজা রাখা হয় তাহলে রোজাদার ব্যক্তির দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই হাদিসে সেহরি খাওয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেহরি খাওয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত।এর মধ্যে রহমত ও বরকত রয়েছে। এজন্য দরকার না হলেও সেহরিতে অল্প কিছু পানাহার করা উচিত। নিয়মিত সেহরি না খাওয়ার অভ্যাস করা মাকরুহ।


আরও পড়ুন: ফজরের পর যে আমল করবেন


সেহরি না খেলে কি রোজা হবে? 


হ্যাঁ, সেহরি না খেলেও রোজা হবে। রোজা সহিহ হওয়ার জন্য সেহরি খাওয়া বাধ্যতামূলক নয় এবং সেহরি খাওয়ার বিশেষ  কোনো দোয়া নেই। মূলত খাবার খাওয়ার আগে যে দোয়া পড়া হয়,ঠিক সেহরিতেও সেই দোয়া পড়ার নিয়ম।


হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে,  হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে’ (বুখারি, হাদিস, ১৯২৩)। 


অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমরা সেহরি খাও, যদিও এক ঢোক পানি দ্বারা হয়। কারণ যারা সেহরি খায়, আল্লাহ তায়ালা তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৩৪৭৬)।


আরও পড়ুন: কী কারণে রোজা ভেঙে যায়?


সেহরি খাওয়ার পর নিয়ত না করলে কি রোজা হবে?


প্রথমত, রোজা রাখার জন্য রোজার নিয়ত করা অত্যন্ত জরুরি। তবে রমজান মাসে শেষ রাতে রোজা রাখার উদ্দেশ্যে ঘুম থেকে ওঠা ও সাহরি খাওয়াটাই রোজার নিয়তের অন্তর্ভুক্ত। ভিন্নভাবে আর কোন নিয়তের প্রয়োজন নেই। যদি  আলাদাভাবে যদি কেউ নিয়ত করতে চাই তাহলে করতে পারবে। তবে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। তাই কেউ মুখে নিয়ত না করলেও তার রোজাগুলো আদায় হয়ে যাবে। (সূত্র : আল-বাহরুর রায়েক : ২/৪৫২; আল-জাওহারুতুন নাইয়্যিরাহ : ১/১৭৬; রাদ্দুল মুহতার : ৩/৩৩৯, ৩৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৯৫)


বাংলাদেশে রোজার একটি আরবি নিয়ত প্রসিদ্ধ—সবাই যেটা লোক মুখে পড়ে থাকেন। তবে এটি হাদিস ও ফিকাহের কোনো কিতাবে আসেনি । তবে কেউ চাইলে পড়তে পারেন। (তবে জেনে রাখা উচিত যে, নিয়ত পড়ার চেয়ে নিয়ত করা ।)


আরবি নিয়ত


نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم


রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ


 নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।


অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।


জেবি/আজুবা