এক ডিভাইসের তথ্যেই জলদস্যুর কবলে এমভি আব্দুল্লাহ

এসব বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই দস্যুদল অগ্রসর হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে
বিজ্ঞাপন
সোমালিয়ার জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এআইএস) ডিভাইস ব্যবহার করে জিম্মি করা হয়েছে বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। ‘এআইএস’ এমন একটি ক্ষুদ্র ডিভাইস যার মাধ্যমে ৫০ নডিক্যাল মাইল দূরুত্বের মধ্যে থাকা সব নৌযানের নাম, অবস্থান, গন্তব্য, গতি ইত্যাদি তথ্য জানা য়ায়। এটি একটি জাহাজের সাথে অন্য জাহাজের সংঘর্ষ এড়াতে ব্যবহার করা হয়।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সংস্থাটির সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী এই তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘দেড় মাসে পূর্বে একটি ইরানি মাছধরা নৌযান জব্দ করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ওই ইরানি ফিশিং বোটে থাকা এআইএস প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েই এমভি আবদুল্লাহ’র গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে তথ্য পেতে পারে তারা।’
বিজ্ঞাপন
আনাম চৌধুরী বলেন, ‘ওদের টার্গেট হলো সিলেকশন দুর্বল জাহাজের ওপর। যে জাহাজ গুলো দুর্বল সেটাকেই ওরা টার্গেট করে। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটির গতি অনেক কম ছিল, পানি থেকে ডেকের দূরত্ব বেশ কম, এসব বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই দস্যুদল অগ্রসর হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ‘আরও অনেক জাহাজ একই রুটে চলছিল। সেগুলোকে সেফগার্ড দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, সশস্ত্র রক্ষীরা থাকে, মূলত যা এটাতে ছিল না। সাধারণত উপকূলের কাছাকাছি এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। সে হিসেবে এটা রিস্ক জোনের কিছুটা বাইরে ছিল।’
বিজ্ঞাপন
এদিকে জিম্মি থাকা ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে সোমালিয়ার গারাকাদ উপকূলে দস্যুদের আস্তানায় নোঙর করা হয়েছে বলে তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা জানান, জলদস্যুদের ঠেকাতে এক সময় বেশ সক্রিয় ছিল ভারত মহাসাগরে আন্তর্জাতিক বাহিনীগুলো। কিন্তু, লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের তৎপরতার কারণে সবার মনোযোগ এখন সেদিকে। ফলে, টহল কিছুটা শিথিল হয়ে পড়ায় ভারত মহাসাগরে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সোমালীয়ার দস্যুরা।
বিজ্ঞাপন
গেল তিনমাসে ১৪টি জাহাজ ছিনতাই করে দস্যু দল। যা বিগত ছয়বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের দরকার বলে ধারণা করেন নৌবাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটের দিকে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারে এই গ্রুপের কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
একই দিন সন্ধ্যার পর জিম্মি জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে বলেন, ‘আমাদের থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। এটাই ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের একজন একজন করে মেরে ফেলতে বলেছে। তাদেরকে যত দ্রুত টাকা দেবে, তত দ্রুত আমাদের ছাড়বে বলেছে। এই খবরটা সবদিকে পৌঁছায়ে দিয়ো।’
বিজ্ঞাপন
এমএল/