অতি তীব্র তাপদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

তারপরও ফলন ভালো হচ্ছে না আমের গুটি সব পড়ে যাচ্ছে। এতে করে চাষের খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বৈশাখের তীব্র তাপপ্রবাহে মরুর উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। সপ্তাহব্যাপী প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ ও প্রাণীকূল। হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।
শুধু ভৌগলিক কিংবা প্রাকৃতিক কারণে নয়, চুয়াডাঙ্গায় প্রচন্ড গরম অনুভত হওয়ার পিছনে দায়ী মানবসৃষ্ট কারণগুলোও। দিনে দিনে যেমন চড়ছে তাপামাত্রার পারদ, তেমনি গরমের অনুভতিও বাড়ছে কয়েকগুণ। তীব্র গরম ও প্রখর সূর্যের তাপে এ জেলার পান, ধান ও আমের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
দৌলাতদিয়াড় সরদারপাড়ার পানচাষী রফিকুজ্জামান বলেন, দেড়বিঘায় আগে দু-আড়াইঘন্টা মেশিনে পানি দিলেই হয়ে যেতো। এখন সেখানে ৫-৬ ঘন্টা মেশিনে পানি দেয়া লাগছে। তারপরও পান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
আমচাষী বিপ্লব হোসেন বলেন, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। অন্যবার বৈশাখের শুরুতেই ঝড়-বৃষ্টি হয়। গরম পড়লেও মাঠে বেশি পানি দেয়া লাগে না। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় দুএকদিন পরপরই পানি দেয়া লাগছে। তারপরও ফলন ভালো হচ্ছে না আমের গুটি সব পড়ে যাচ্ছে। এতে করে চাষের খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
অতি তীব্র তাপদাহে এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষেরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র গরম ও রোদের তাপের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা কাজ করতে না পেরে অলস সময় পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠাণ্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার দুপুরে শহরতলীর হাতিকাটায় কথা হয় ইজিবাইক চালক মন্টু মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, “দুপুরের আগেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে গিয়েচে। যে রোদ, তাতে মানুষ বাইরে বের হতি পাচ্চে না। আমি পেটের দায়ে বের হয়চি। কিন্তু ঠিকমত ভাড়া পাচ্চি নে।”
বিজ্ঞাপন
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে চুয়াডাঙ্গায় গরমের সময় বেশি গরম এবং শীতের সময় বেশি শীত অনূভুত হয়। এ মাসের শুরু থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। গত কয়েকদিন তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ সোমবার দুপুর ৩টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ১৮ শতাংশ। আগেরদিন শনিবার সন্ধ্যায় জেলায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন থাকবে।
বিজ্ঞাপন
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে চুয়াডাঙ্গায় গরমের সময় একটু বেশি গরম পড়ে। এছাড়াও মানবসৃষ্ট নানান কারনেও প্রকৃতিতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। বিভিন্ন কারণে দেশীয় গাছ নিধন, নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য আমরা মানুষরাই দায়ী। আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। ইতিমধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে জেলায় এক লাখ গাছ লাগানোর সীদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেবি/এসবি








