সুপেয় পানির অভাবে ভুগছে জাবি শিক্ষার্থীরা, পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৩১ অপরাহ্ন, ১লা মে ২০২৪


সুপেয় পানির অভাবে ভুগছে জাবি শিক্ষার্থীরা, পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা
ফাইল ছবি।

সজীবুর রহমান, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় খাবার পানির সংকটে ভুগছেন। চারদিকে হিট এলার্ট, প্রচন্ড খরতাপে পুরো ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে চলমান এ সংকট বর্তমানে তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।


সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন অনুষদের কয়েকটি বিভাগের নিজস্ব পানির ফিল্টার থাকলেও বেশিরভাগ বিভাগে সুপেয় পানির ফিল্টারের কোনো অস্তিত্ব নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের নিচতলা, ক্যাফেটিরিয়া, পুরাতন কলা ভবন এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে ফিল্টারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য সুপেয় খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। এমনকি শিক্ষার্থীদের পদচারণা ও আড্ডা প্রাণবন্ত থাকা ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এবং কেন্দ্রীয় মসজিদেও নেই সুপেয় পানির ব্যাবস্থা।


আরও পড়ুন: কৃষ্ণচূড়ায় রঙিন জাবি ক্যাম্পাস


বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রীদের নবনির্মিত ১০তলা বিশিষ্ট চালুকৃত পৃথক চারটি আবাসিক হলেও নেই যথেষ্ট পরিমাণ খাবার পানির ফিল্টার। মেয়েদের রোকেয়া হল এবং ফজিলাতুন্নেছা হল ৪ হাজার শিক্ষার্থীর অবস্থান থাকলে নিচ তলায় শুধু মাত্র একটি পানির ফিল্টার রয়েছে। ওয়াশরুমের পানি খেয়েই দিন পারি দিচ্ছেন তারা। ঠিক একই অবস্থা ছাত্রদের শহীদ তাজউদ্দীন হল ও শেখ রাসেল হলের প্রায় আড়াই হাজার ছাত্রদের জন্য একটি মাত্র পানির ফিল্টার রয়েছে।


টিএসসিতে অবস্থানরত বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানান, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র শত শত শিক্ষার্থীদের পদচারণা।  কিন্তু এখানে কোনো বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যাবস্থা নেই। একটি ফিল্টার ছিল কিন্তু সেটা প্রায় দুই বছর যাবত নষ্ট হয়ে আছে কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো ব্যাবস্থা নেননি। আমাদের যৌক্তিক দাবি সকল শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে খুব শীগ্রিই যেন টিএসসিতে একটি পানির ফিল্টার দেয়া হয়।


জাবির তাজউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ১০ তলা বিশিষ্ট কোনো ফ্লোরেই পানির ফিল্টারের ব্যবস্থা নেই। এখন আমরা অনেকেই অবস্থান করি ১০ তলায়। দেখা যাচ্ছে অন্যকোনো কাজ না থাকলেও শুধু পানি খাওয়ার জন্য আমাদেরকে দশতলার নিচে নামতে হয়।


আরও পড়ুন: পর্নোগ্রাফি আইনের মামল, অব্যাহতি পেলেন জাবি শিক্ষিকা


বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আমির ফয়সাল বলেন, সব জায়গায় পানির ফিল্টারিং এর ব্যবস্থা না থাকাতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে অনেকের মাঝেই পানি বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ফিল্টার বসানোসহ নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থার জন্য আমরা সবাই প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।


ক্যাম্পাসে ফিল্টারের ব্যবস্থা নেই অনিরাপদ পানি পান করার কারণে শিক্ষার্থীরা কোন স্বাস্থ্যঝুকিতে আছে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. শামছুর রহমান বলেন, জাবিতে অধিকাংশ জায়গায় ফিল্টার ব্যবস্থা নেই, তবে আমাদের ক্যাম্পাসের পানি তুলনামূলক ভালো। তীব্র গরমে অনিরাপদ পানি পান করার কারণে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত পানি বাহিত রোগ নিয়ে বা গরমের কারণে পানিজনিত সমস্যা ভুগছেন এরকম কোন পেশেন্ট আসেনি। আসলে যেকোনো পানির ভেতরই জীবাণু থাকে এমনকি ফিল্টারের মধ্যও। পানি ফিল্টার করলেও অনেকটা নিরাপদ হয় না এটা আসলে অনেকটা আই ওয়াশের মতো।


আরএক্স/