কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা:

কেউ থাকছে হলে, কেউ ফিরছে বাড়িতে


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪১ অপরাহ্ন, ২রা মে ২০২৪


কেউ থাকছে হলে, কেউ ফিরছে বাড়িতে
ছবি: প্রতিনিধি

উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হলসমূহ বন্ধ ঘোষণার দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২ মে)। বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সকলপ্রকার একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে কিছু অংশ হলে থেকে গেলেও, অনেকেই আবার অনিশ্চয়তা নিয়েই হল ছেড়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, 'বাধ্য হয়েই কেউ হলে থাকছেন, আবার বাড়ি ফিরছেন'।


মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) প্রশাসনের নির্দেশনায় বন্ধ হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। হল ছাড়া নির্দেশ থাকলেও তা প্রত্যাখান করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে দ্বিধায় পড়েছেন অনেকে। কবে খুলবে ক্যাম্পাস এমন অনিশ্চয়তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া বাসে বাড়ি ফিরছে অনেকেই। কেউ আবার হলে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি করছেন।


শিক্ষার্থীরা জানান, হুট করে এমন সিদ্ধান্তে বন্ধ হয়েছে ফাইনাল পরীক্ষা ও ক্লাস। বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে তাও কেউ জানে না। তাই বাধ্য হয়েই কেউ বাড়ি ফিরছেন, কেউবা থাকছেন হলে।


আরও পড়ুন: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা: সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের


গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রনি আহমেদ জানান, 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের হটকারি সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করে হলে অবস্থান করছি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বেশিরভাগ স্টুডেন্টস্ মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা, তারা টিউশনের মাধ্যমে পড়াশোনার খরচ বহন করে। বন্ধ করে দিলে আমরা থাকব কোথায়? টিউশন করাবো কীভাবে? পড়াশোনার খরচের টাকা কি প্রশাসন বহন করবে? তাছাড়া শিক্ষক বনাম ভিসি দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থীরা কেন ভুক্তভোগী হবে? তাই এসব অবাঞ্ছিত দাবি প্রত্যাখ্যান করে হলেই আছি।'


রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী পূজা দেব বলেন, এই যে প্রশাসন বন্ধ দিলো, কবে ক্যাম্পাস খুলবে আমরা তো এটা জানি না। তাছাড়া টিউশন যে করাবো, তাও তো সম্ভব না। বাস সার্ভিস সব বন্ধ ৷তাই অনিশ্চয়তায় পড়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছি। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।


অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সামিন বকস সাদী বলেন, 'প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে দ্বিধায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। কেউ হল ছাড়ছে, কেউবা ছাড়ছে না। কি হবে তাও কেউ জানে না।


আরও পড়ুন: সুপেয় পানির অভাবে ভুগছে জাবি শিক্ষার্থীরা, পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা  


দ্রুত সমস্যার সমাধান চাইলেও তা কবে হবে তা জানেন না শিক্ষকরাও। উপাচার্য-শিক্ষক দ্বন্ধটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হলেই শিক্ষার্থীরা সেশনজটের মত সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবে বলে মনে করেন তারা।


বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাবীবুর রহমান বলেন, 'আমরা চাই না শিক্ষার্থীদেরও ক্ষতি হোক। যে কোন সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। আলোচনা করে উপাচার্য ও শিক্ষকরা যত দ্রুত সমাধানে আসবে তাতে সবারই ভালো হবে।'


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, 'আগামী সপ্তাহে আলোচনায় বসতে পারেন উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি। নির্দেশনা অনুযায়ী যারা হল ছাড়ছেন তাদের জন্য বাস দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।'


বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্তের আগেও শিক্ষকদের নানান কর্মসূচির কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের শিকার হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা চান, এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান।


এমএল/